তাফসীর সূরা “আন নাস”
আয়াত নং ০৪ (من شر الوسواس الخناس)
“আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতা অনিষ্ট থেকে(আমি আশ্রয় চাই)”
الوسواس
শব্দের অর্থ প্রলোভন, কুমন্ত্রণা, প্ররোচনা যা শয়তান মানুষের অন্তরে দিয়ে থাকে।
আর خناس আত্মগোপনকারী, যে নিজেকে গোপন করে রাখে। যেমন সুরা তাকবীর আল্লাহ তা’আলা বলেন-
فَلَاۤ اُقْسِمُ بِالْخُنَّسِۙ
“আমি কসম করছি পশ্চাদপসারী নক্ষত্রের।”
এখানে খান্নাস দাঁড়া নক্ষত্র কে বুঝানো হয়েছে। যেহেতু নক্ষত্র রাত্রিবেলায় দেখা যায় এবং দিনের বেলায় তা গোপন থাকে। তাই নক্ষত্র কে খান্ন্যাস বলা হয়।
অত্র আয়াতে الوسواس الخناس দ্বারা কুমন্ত্রণা দানকারী শয়তান কে বুঝানো হয়েছে। যেহেতু শয়তান যখন আল্লাহর যিকির করা হয় তখন সে কেটে পড়ে। যখন কেউ আল্লাহর স্মরণ হতে উদাসীন হয় তখন সে কুমন্ত্রণা দেয়। এজন্য আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেন-
الشيطان جاثم على قلب ابن آدم ، فإذا سها وغفل وسوس ، فإذا ذكر الله خنس
“শয়তান মানুষের অন্তরে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। যখন সে গাফেল ও উদাসীন থাকে তখন প্ররোচনা দেয় আর যখন আল্লাহর জিকিরে রত থাকে তখন কেটে পড়ে।”
সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেনঃ “তোমাদের প্রত্যেকের সাথে একজন করে শয়তান রয়েছে।” সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার সাথেও কি শয়তান রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যা আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঐ শয়তানের মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন, কাজেই আমি নিরাপদ থাকি। সে আমাকে পুণ্য ও কল্যাণের শিক্ষা দেয়।”- ইবনে কাসির।
শয়তানের ওয়াসওয়াসা ,কুমন্ত্রণা ,ও প্ররোচনা থেকে নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে কোরআনের সাথে সম্পর্ক রাখা এবং সবসময় আল্লাহর স্মরণ ও জিকিরে অভ্যস্ত হওয়া। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
وَ مَنْ یَّعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمٰنِ نُقَیِّضْ لَهٗ شَیْطٰنًا فَهُوَ لَهٗ قَرِیْنٌ
“যে ব্যক্তি রহমানের স্মরণ থেকে গাফিল থাকে আমি তার ওপর এক শয়তান চাপিয়ে দেই, সে তার বন্ধু হয়ে যায়।”সূরা আয-যুখরুফ ৩৬।