বাহরাইনের বাদশাহ বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষর, দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনের ক্ষেত্রে বৃহত্তর ভূমিকা রাখবে।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইসা আল খলিফা “দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান মেনে ফিলিস্তিন-ইস্রায়েলি দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে তীব্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, এই সমাধানের মধ্য দিয়েই পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগ জোরালো হবে। যেটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আরব পিস ইনিশিয়েটিভের উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত”।
বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফা আরও বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা শান্তির জন্য একটি ‘পরিষ্কৃত বার্তা’।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা একটি পরিমার্জিত বার্তা। যা দ্বারা এটি জোরালো ভাবে ঘোষণা করে যে, সুষ্ঠু ও ব্যাপক শান্তির জন্য আমরা আমাদের হাত মেলে ধরেছি।’
বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফার ভাষণের একদিন আগেই প্রথমবারের মতো বাহরাইন সফর করেছে ইসরায়েলি কূটনীতিকদের একটি প্রতিনিধি দল। দুই দেশের চুক্তি স্বাক্ষরের পর এটাই কোনও প্রতিনিধি দলের প্রথম সফর।
গেলো ১৫ সেপ্টেম্বর, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিতে উপনীত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। যা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুনরায় নির্বাচিত করার প্রচেষ্টায়, মার্কিন কূটনৈতিক চালের একটি অংশ।
তবে, ফিলিস্তিনির নেতারা চুক্তিগুলির নিন্দা করেছেন এবং তারা মনে করেন এই চুক্তি তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু না।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি স্বাক্ষরের পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রায়েডম্যানসহ উভয় দেশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা সরাসরি বাতিল হয় নাই, আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের প্রশংসাও করেন বাহরাইনের বাদশাহ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। যা “একটি সুসংস্কৃত বার্তার ইঙ্গিত করে… ফলে এই অঞ্চলের সব মানুষের ভবিষ্যতের সবচেয়ে ভালো নিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’
তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সমালোচনা চলছে বাহরাইনের অভ্যন্তরেও। দেশটির বিভিন্ন সুশীল সমাজের গোষ্ঠীগুলি বলছে, কেবল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরই এ ধরনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা উচিত।