জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৫ তম অধিবেশনে, ভিডিও বক্তৃতায় কাতারের আমির, ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলিতে অব্যাহত ইস্রায়েলি দখল এবং জোরপূর্বক বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশ ও সংস্থার গুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মতির ভিত্তিতে তৈরিকৃত প্রস্তাবনা এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন তিনি।
শেখ তামিম বলেন, `ইসরায়েলের আগ্রাসন, ফিলিস্তিনি ও আরব ভূখণ্ডের অব্যাহত দখল, গাজা উপত্যকায় অবরোধ এবং বসতি সম্প্রসারণ নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়’।
তিনি বলেন, `কেবলমাত্র তখনই শান্তি অর্জন করা সম্ভব, যখন আরব পিস ইনিশিয়েটিভের ভিত্তিতে আরব দেশগুলোর গৃহীত প্রস্তাবনার প্রতি ইসরায়েল পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে’।
১৯৬৭ সালে গঠিত সীমানা অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত সমাধান, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসানের শর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পরিকল্পনায় সৌদি আরবের নেতৃত্বে ২০০২ সালে আরব পিস ইনিশিয়েটিভ স্বাক্ষরিত হয়।
কাতারের আমির বলেছেন, ‘ইসরায়েল আরব পিস ইনিশিয়েটিভের শর্তাবলি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এসব শর্ত বিবেচনা না করে যেকোনও ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হোক না কেন তাতে শান্তি আসবে না’।
‘ফিলিস্তিনি’র পক্ষে ন্যায়সঙ্গত সমাধান পেতে ব্যর্থতা, ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্ব এবং এসকল কঠিন বাস্তবতা গুলোকে নীরবে এড়িয়ে যাওয়া- এগুলোই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উত্থাপন করে। ’- বলেন কাতারের আমির।
গাজা উপত্যকার অবরুদ্ধ দশার অবসান এবং সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়; বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন শেখ তামিম।
একই সঙ্গে দখলদারি নীতি থেকে ইসরায়েলকে বেরিয়ে এসে পারস্পরিক আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে শান্তি আলোচনা সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
‘এটা অবাক করা বিষয় যে, আরব লীগের অনেক আরব রাষ্ট্র ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে রয়েছেন। যেটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্যমত্যে গঠিত।’- নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতর থেকে আল জাজিরার জেমস বেস বলেন ।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন ইস্রায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করে। যেটা ছিল ইরানের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির কৌশলগত পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা।
এই চুক্তিটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর উপস্থিতিতে হোয়াইট হাউসে আয়োজিত হয়েছিল। এক মাসের মধ্যেই চুক্তিটির নাটক মঞ্চস্থ হয়, যখন আরব দেশগুলি ফিলিস্তিনিদের সাথে ইস্রায়েলের কয়েক দশকের পুরনো বিরোধের সমাধান না করেই সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উঠেপড়ে লাগে। ফলশ্রুতিতে ফিলিস্তিনি’র জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে।