২১২০ সাল।আজ থেকে ১০০ বছর পর।লেখাটি যারা পড়ছেন,আমাদের প্রায় প্রত্যেকের দেহ তখন মাটির নিচে।অস্তিত্ব তখন রুহের জগতে।দেখছি আমাদের তাকদীর,আমি জান্নাতি না জাহান্নামি?
ইতিমধ্যে ফেলে যাওয়া আমাদের সুন্দর বাড়িটা হয়ত অন্যদের দখলে চলে গেছে,নেক্সট প্রজন্ম ভোগ করছে,পছন্দের কাপড়গুলো ব্যাকডেটেড হয়ে গেছে,শখের গাড়িটি হয়ত অন্য কেউ চালাচ্ছে।আর আমরা,খুব কম জনই স্মরণে রেখেছে।কেউবা ভাবেওনা।হাতে সময় নেই!যাদের জন্য সব করতে নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছিলাম।
আচ্ছা,ব্যস্ততার এই জীবনে… *দাদার দাদাকে কতবার স্মরণ করেন? *দাদীর দাদীর কথা কখনো কি আপনার মনে পড়ে?
পৃথিবীর বুকে আজকের এই বেঁচে থাকা,যার জন্য এত হইচই,এতো মায়া কান্না–গত হওয়া অসংখ্য প্রজন্মকে টপকে আমরা এই জীবন লাভ করেছি।তেমনিভাবে আগামীতে অসংখ্য প্রজন্মের ভীড়ে হারিয়ে যাবে এই জীবন।
যত প্রজন্ম আসছে আর যাচ্ছে,দুনিয়াকে বিদায় জানাবার,দায়িত্ব ক্ষমতা অন্যের হাতে অর্পন করবার,কিংবা কারো ইচ্ছা অপূর্ণ রেখে যাবার পূর্বে–খুব কম জনই সময় পায় ফেলে যাওয়া জীবনটা একবার দেখবার।বাস্তবতা হচ্ছে এই জীবনটা আমাদের কল্পনার চেয়েও ছোট।
২১২০ সালে কবরে শুয়ে আমরা সবাই এই বাস্তবতা উপলব্দি করতে পারবো,সত্যিই দুনিয়াটা কতইনা তুচ্ছ ছিলো!একে ঘিরে দেখা স্বপ্নগুলো কতইনা নগন্য ছিলো!
২১২০ সালে আমরা সকলেই চাইবো,’ইশ জীবনটা যদি মহৎ কিছুতে উৎসর্গ করতে পারতাম!ইসলামের জন্যে!নেক আমল সংগ্রহের জন্যে আরও কিছু করতে পারতাম! মৃত্যুর পরেও যে কাজগুলো আমাদের উপকার করে যেত,সেগুলোর পেছনে যদি আরও সময় উৎসর্গ করতে পারতাম!’ইস! শুধু ইস আর ইস!আফসোস!আফসোস!!
২১২০ সালে আমরা অনেকেই চিৎকার করে কথাটা বলবো,কিন্তু কোন ফল বয়ে আনবেনা আমাদের এই হাহাকার:”…হে আমার রব!আমাকে আবার ফেরত পাঠান।যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি যা আমি আগে করিনি।”[আল মু’মিনুন:৯৯]
বরং জবাব মিলবে,”না!এটা হবার নয়।এটা তো তার একটি বাক্য মাত্র যা সে বলবেই।তাদের সামনে বারযাখ থাকবে উত্থান দিন পর্যন্ত।”[আল মু’মিনুন:১০০]
২১২০ সালে আমরা অনেকেই আফসোসে নিজেদের হাত কামড়াতে থাকবো এই বলে,”হায়!আমার এ জীবনের জন্য আমি যদি কিছু অগ্রিম পাঠাতাম!” [আল ফাজর:২৪]
● ভাই ও বোনেরা আসুন মৃত্যুর ফেরেশতা আসার আগেই নিজেদের সংশোধন করে নিই।আল্লাহ সকলকে হেদায়াত দান করুন।আমিন।