বিভিন্ন দেশে করোনায় মৃত্যুর যে সংখ্যা সরকারিভাবে জানানো হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা তার থেকে দুই-তিন গুণ বেশি। এমনটাই মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
শুক্রবার ডব্লিউএইচওর বার্ষিক স্বাস্থ্য প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে কোভিড-১৯ এ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষসহ শনাক্ত এবং শনাক্ত না হওয়া রোগীর মৃত্যুর আনুমানিক একটি সংখ্যাও জানানো হয়েছে।
গতবছর করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ বছরের মে পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৩৪ লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।
ডব্লিউএইচওর তথ্য ও বিশ্লেষণ বিভাগের সহকারী মহাপরিচালক সামিরা আসমা সংস্থার প্রতিবেদন প্রকাশে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, প্রকৃত সংখ্যা দুই থেকে তিন গুণ বেশি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে কেবল ২০২০ সালেই করোনাভাইরাসে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে, যা সরকারি হিসাবে ওই সময় পর্যন্ত আসা মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে ১২ লাখ বেশি।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের কারণে লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ায় মৃত্যু বাড়ছে জানিয়ে আসমা বলেন, আমার মনে হয়, সতর্কভাবে অনুমান করলে ৬০ থেকে ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
মোট মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা জানিয়ে জাতিসংঘের এ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, আমরা সম্ভবত কোভিড- ১৯ এ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কম পাচ্ছি। অনেক দেশে মৃত্যুর সংখ্যা গণনার নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা নেই। অনেক ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ পরীক্ষার আগেই লোকজন মারা যাচ্ছে।
সংস্থার তথ্য বিশ্লেষক উইলিয়াম সেমবুরি বলেন, তাদের আনুমানিক হিসাবে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া ছাড়া মৃত্যু এবং পরোক্ষ মৃত্যুকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের অভাব এবং চলাচলে বিধিনিষেধসহ অন্যান্য কারণে চিকিৎসা ছাড়া যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ‘পরোক্ষ মৃত্যু’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
এমনকি অনেক দেশে তুলনামূলকভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্য ব্যবস্থাপনা থাকার পরও মৃত্যুর সংখ্যা কম গণনা হয়ে থাকতে পারে বলেও প্রতিবেদনে মত দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আনুমানিক হিসাবে ২০২০ সাল থেকে ইউরোপে ১১ থেকে ১২ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া গেছে ছয় লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য। আমেরিকার অঞ্চলগুলোতে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা ১৩ থেকে ১৫ লাখ হবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা, যেখানে সরকারি ভাষ্যে নয় লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে।
পিডিএসও/ইউসুফ