কিয়ামতের পূর্বে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় ঘটে যাওয়া ও সংগঠিত হচ্ছে এমন ক্ষূদ্র আলামত গুলো কি আমাদের ঈমানী ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য যথেষ্ট নয়?-
১৪০০ বছর আগে রাসূল (ﷺ)-এর বর্ণিত প্রতিটি ভবিষ্যতবাণী সত্য হচ্ছে। অবশ্যই তার প্রতিটি কথা সত্য। সংশয়বাদীদের নিকট এই ভবিষ্যতবাণী গুলো ওপেন চ্যালেঞ্জ করছে। কি করে একজন মানুষ এত বছর পূর্বে, আজকের সমাজের হুবহু বর্ণনা দিতে পারলেন?- এটাই প্রমাণ তিনি ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত সত্য নবী। তিনি বলে গেছেন,
(১) সন্তানরা উগ্র ও অবাধ্য হয়ে যাবে।
(২) স্যাটেলাইট টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদির আবিস্কার হবে যদিও তা কল্যাণের জন্য হলেও সমাজ প্রায় ক্ষতিগ্রস্থ এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
(৩) অচিরেই আকাশ থেকে অনিষ্টকর বস্তু বর্ষিত হবে, এমনকি তা জনশূন্য সুদূর মরু প্রান্তরেও পৌঁছবে।”
(৪) আজ রেডিও, ডিস টিভি মরুভূমি ও সাগরের মাঝে পৌঁছে গেছে।
(৫) চাপাবাজি করে মানুষ টাকা আয় করবে, সমাজের নিকৃষ্ট ব্যক্তিরা বাজার দখল করবে।
(৬) সমকামিতা ও লেসবিয়ানিজম বিস্তার করবে।
(৭) নারীদের চরিত্রকে ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন মুভমেন্ট হবে যেমন : নতুন নতুন বাদ্যযন্ত্রের উদ্ভাবন হবে, এমনকি তিনি বলেছেন মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট মানুষের মাথায় থাকবে- অর্থাৎ বর্তমান হ্যাডফোন, জারজ শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে – আমেরিকায় মোট জন্মাহারের শতকরা ৫০ ভাগ হল জারজ শিশু, লাঠি ও জুতার ফিতা মানুষের সাথে কথা বলবে, মালিকের অবর্তমানে বাসায় কি কি হয়েছে তা বর্ণনা করবে – এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়েব ক্যাম, বিভিন্ন গেজেট ও স্মার্ট ফোন এর ইঙ্গিত করা হচ্ছে।
(৮) মানুষ কাপড় পরেও নগ্ন মনে হবে, মায়ের অবাধ্য হয়ে স্ত্রীর আনুগত্য করবে, প্রকাশ্যে যৌনাচার হবে ইত্যাদি সব কিছু ১৪শ বছর পূর্বে কি করে তিনি বলে গেছেন? অবশ্যই তিনি আল্লাহর রাসুল। তাঁর প্রতিটি বাণী সত্য – আজ আমরা নিজ চোখে এর প্রমাণ দেখছি। যেমন : হাদীসে এসেছে –
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا أَوْ يُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا ” .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন : অন্ধকার রাতের মত ফিতনা আসার আগেই তোমরা নেক আমলের প্রভি অগ্রসর হও। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে।” (মুসলিম, হা – ২১৪)।
উপসংহার
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার পর বলতে পারি যে – এগুলো হলো আল্লাহর কিয়ামত আগমণের পূর্ব ক্ষূদ্র নিদর্শন, তিনি চান বান্দারা তাওবা করে ফিরে আসুক।
অতএব, এসব ক্ষূদ্র আলামত জানার পরেও কি আমরা ঈমান হারা বা দুর্বল ঈমান রেখে এবং বদ আমল করেই যাব? এই আলামত আমাদের ঘুম ভাঙানোর জন্য যথেষ্ট নয়?
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন, ফিতনাকে ফিতনা হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।
ধন্যবাদান্তে –
সাজ্জাদ সালাদীন।
তারিখ : ০৬.১২.২০১৯ইং।