Saturday, April 26, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরচিরকুমার বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর মেয়ের ‘জন্ম’, তুলছে ভাতা!

চিরকুমার বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর মেয়ের ‘জন্ম’, তুলছে ভাতা!

নেত্রকোনার মদনে চিরকুমার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে পরিচয়ে ভাতা, বোনাসসহ অন্যান্য সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার ভাতিজির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জনৈক এক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর বিষয়টি সবার সামনে উঠে আসে। 

অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের জঙ্গলডেমারগাতি গ্রামের মৃত আওলাদ হোসেন চৌধুরীর সন্তান জহিরুল হোসেন চৌধুরী ওরফে মতিন চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন (গেজেট নং-২৪১৪), মুক্তিবার্তা নং-০১১৬০৯০৩২৭। পরবর্তী সময়ে তিনি অবিবাহিত থাকা অবস্থায় মারা যান।  কিন্তু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, স্থানীয় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন মাঘান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবুর জোগসাজশে জহিরুল হোসেন চৌধুরীর ছোট ভাই মিলন চৌধুরীর মেয়ে তানিয়া শারমিন তন্বীকে ‘তানিয়া’ নামে জহিরুল হোসেন চৌধুরীর মেয়ে পরিচয় দিয়ে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে দেয়। সেই নিবন্ধন মূলে ২০১৩ সালে তানিয়াকে কোনও প্রকার তদন্ত ছাড়াই জমাকৃত অর্থ উত্তোলনের ছাড়পত্র ও নতুন ব্যাংক হিসাব খোলার অনুমতি দেয় উপজেলা প্রশাসন। 

এরপর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মিথ্যা পরিচয়ে মাসিক ভাতা, উৎসব ভাতা, বোনাসসহ বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করে আসছে তানিয়া। যা সম্পূর্ণরূপে মুক্তিযোদ্ধা পোষ্য আইনের পরিপন্থি। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে এধরনের ঘটনার দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাদিস উদ্দিন দুলাল ও সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশুজ্জামান খান বলেন, কয়েকজন দুর্নীতিবাজ ও অসৎ মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তৎকালীন কিছু কর্মকর্তার জোগসাজশে রাষ্ট্রের সাথে এই প্রতারণা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ব্যক্তিগতভাবে জহিরুল হোসেন চৌধুরীকে চিনি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। 
উনি অবিবাহিত ছিলেন। কিন্তু চিরকুমার এই মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর যখন তার ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়ার কথা তখন ভাতা, বোনাসসহ অন্যান্য সুবিধা নেওয়ার জন্যে ভাতিজিকে মেয়ে পরিচয় দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে এবং প্রতিনিয়ত ভাতা উত্তোলনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে। 

এ ব্যাপারে জন্মনিবন্ধন প্রদানকারী মাঘান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হবু বলেন, জহিরুল হোসেন চৌধুরী চিরকুমার ছিলেন। কিন্তু আমি তা জানতাম না। এই পরিবারটি এলাকার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি পরিবার। এমন সনামধন্য পরিবারের লোকজন আমার কাছে মিঠা বলে নিবন্ধন করিয়ে নিয়েছে। এটা আমি নিবন্ধন দেয়ার কয়েকদিন পর জানতে পারি। 

অভিযুক্ত তানিয়া শারমিন তন্বীর পিতা মিলন চৌধুরী জানান, আমার ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হোসেন চৌধুরী অবিবাহিত ছিলেন। কিন্তু ভাতা উত্তোলনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোন কেটে দেন। পরে বারবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহজামান আহম্মেদ বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় আমাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছেন। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ইউএনও বুলবুল আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ভাতা বন্ধ রাখার জন্য ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

2 × two =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য