Tuesday, May 13, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদাওয়ানেককার স্ত্রী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ

নেককার স্ত্রী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ

পৃথিবীতে আমরা যত নিয়ামত লাভ করি, এর মধ্যে নেককার স্ত্রী অন্যতম প্রধান নিয়ামত। স্ত্রী নেককার ও চরিত্রবান হলে পরিবারে জান্নাতি আবেশ বিরাজ করে, অন্যথায় শান্তির পরিবার হয় সাক্ষাৎ জাহান্নাম। তাই তো হাদিসের ভাষায় নেককার স্ত্রীকে উত্তম নিয়ামত এবং মহা সৌভাগ্য বলা হয়। আর বদকার স্ত্রী হলো দুর্ভাগ্যের খোলা দরজা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আদম সন্তানের সৌভাগ্য তিনটি আর দুর্ভাগ্যও তিনটি। সৌভাগ্য তিনটি হলো, দ্বিনদার-নেককার স্ত্রী, ভালো বাসস্থান, ভালো সওয়ারি বা বাহন। আর দুর্ভাগ্য  তিনটি হলো, খারাপ স্ত্রী, খারাপ বাসস্থান ও খারাপ সওয়ারি।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৪৪)

একজন নেককার স্ত্রী মুমিনের জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন।


হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহর ভয়ভীতি অর্জনের পর একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় অর্জন একজন দ্বিনদার-নেককার, পুণ্যবতী স্ত্রী। স্বামী তাকে কোনো কাজের আদেশ দিলে সে তা পালন করে, তার দিকে তাকালে সে তাকে সন্তুষ্ট করে এবং যদি সে তাকে কসম দিয়ে কিছু বলে, সে তা পূর্ণ করে, আর স্বামীর অনুপস্থিতিতে সে তার নিজের সম্ভ্রম এবং স্বামীর মালের হেফাজত করে।’ (ইবনে মাজাহ হাদিস : ১৮৫৭)
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। আর দ্বিনদার পুণ্যবতী স্ত্রীর চেয়ে উত্তম ও কল্যাণের কিছু এখানে নেই।’
(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৮৫৫)

আরেক হাদিসে এসেছে, ‘চারটি বস্তু যাকে দেওয়া করা হয়েছে, দুনিয়া ও আখিরাতের সব কল্যাণ তাকে দেওয়া হয়েছে। শোকর আদায়কারী অন্তর, জিকিরকারী জিহ্বা, বিপদ-আপদে ধৈর্যশীল শরীর এবং এমন স্ত্রী, যে নিজের ক্ষেত্রে এবং স্বামীর সম্পদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের  খিয়ানত করে না।’

(আল-মুজামুল কাবির, তাবরানি,

হাদিস : ১১২৭৫; আল-মুজামুল আওসাত, তাবরানি, হাদিস : ৭২১২; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ৭৪৩৭)

হাদিসের ভাষ্য—‘দ্বিনদারিকে প্রাধান্য দাও বা তুমি দ্বিনদার নারী পেয়ে সফল হও’—এর ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহ.) বলেন, এর অর্থ হলো, লোকেরা সাধারণত মেয়েদের চারটি গুণ দেখেন—সম্পদ, বংশমর্যাদা, রূপ-সৌন্দর্য ও দ্বিনদারি। আপনি সাবধান থাকুন, ধার্মিকতাকে গ্রহণ করুন এবং ধার্মিক মেয়েকে সঙ্গিনী করে ধন্য হোন। (শরহে রিয়াজুস সালিহীন : ৩/২৪৪)

ইমাম নববী (রহ.)-এর ব্যাখ্যার সারমর্ম হলো, এখানে অন্যান্য গুণ ও বৈশিষ্ট্য বিবেচনা থেকে একেবারে বাদ দিতে বলা হয়নি, বরং দ্বিনদারিকে প্রথম বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে, কারণ এটিই সব কল্যাণের উৎস; এর কোনো পরিবর্তন বা রূপান্তর হয় না।

এই গুণ যার আছে, সে অবশ্যই স্বামীর পরিবার-পরিজন, অর্থ-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করবে, শ্বশুর-শাশুড়ির খিদমত করবে এবং তার আত্মীয়-স্বজনদেরও সম্মান করবে। স্বামীকে কোমলতা ও ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে। যতক্ষণ না স্বামী অন্যায়ের আদেশ দেয়, ততক্ষণ সে আনুগত্য করে যাবে এবং কোনো অসুবিধা ও সমস্যার সম্মুখীন হলে তাকে সাহায্য করবে। প্রকৃতপক্ষে, সেই স্বামী সফল, যার ভাগ্যে জুটেছে এমন স্ত্রী, যে তার দায়িত্ব সততা ও উদ্যমের সঙ্গে পালন করে, তার সংসার হয় সুখের রাজ্য। (রাসায়েল ফিজ জিওয়াজ ওয়াল হায়াতিজ জাওজিয়্যাহ : ৩১)

লেখক : শিক্ষক, বাইতুল আকরাম মসজিদ ও মাদরাসা কমপ্লেক্স টঙ্গী, গাজীপুর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

nineteen + 12 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য