তের মাস বয়সী নাঈম হোসেন রনি। দিনের বেলায় প্রতিবেশী শিশুরা যখন হামাগুড়ি দিয়ে ঘরের নানা প্রান্ত ঘুড়ে বেড়ায় তখন, শিশুটিকে পরিবারের কারো না কারো কোলে থাকতে হয়।
আর রাতের বেলায় অন্য শিশুরা যখন ঘুমায় তখন শিশুটি কান্নাকাটি করে অসহ্য যন্ত্রণায়। হাইড্রোসেফালাস নামক মস্তিষ্কজনিত বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটির মাথা ক্রমেই শরীরের চেয়ে বড় হয়ে উঠছে।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা উত্তরপাড়া গ্রামের দিনমজুর বাবা নাজমুল আলী ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
এখন এনজিওর ঋণ ও সুদের টাকার ভারে জর্জরিত। উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারার আক্ষেপ কাজ করলেও হাল ছেড়ে দিয়েছেন
অসহায় বাবা। আর ছেলের এমন করুণ পরিণতিতে বিলাপ করছেন মা পারভীন আরা। চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশুটি।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, জন্মের পর থেকেই অসুস্থ হতে থাকে শিশু নাঈম। বয়স বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে ক্রমেই তার মাথার আকৃতি বাড়তে থাকে। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়ির গরু, স্ত্রীর গহনা বিক্রি, এনজিও থেকে ঋণ, সুদে টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকার বেশি খরচ করেছেন।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরমিলা আক্তার ঝুমি যুগান্তরকে বলেন,হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত ওই শিশুটি। চিকিৎসা করালে শতভাগ না হলেও সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরজন্য শিশুটির উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তবে এই রোগের চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল বলে জানান তিনি।
কিন্তু দিনমজুর নাজমুল আলীর পক্ষে ছেলের চিকিৎসা করানো কোনোমতেই সম্ভব নয়! তাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
রনির মা পারভীন আরা যুগান্তরকে বলেন, ‘টেলিভিশনে দেখেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতায় অনেকেই সুস্থ হয়েছেন। আমার বিশ্বাস তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সহযোগিতার হাত বাড়ালে হয়তো আমার ছেলেকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু আমার মতো হতভাগী মায়ের কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবে কে? আমার জন্য কী কোনো দরজা খোলা নেই?’
শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে এই নাম্বারে- ০১৭৫৫-৪৪০০৮২