“বঙ্গবন্ধুর কবরের উপর মূর্তি বানানো হোক! মূর্তি যদি খারাপ না হয়, উনার কবরের উপরে বানাতে সমস্যা কি?”
আমি তা চাই না। একজন মুসলিম হিসাবে আমি তা কক্ষনোই চাইতে পারি না। এটা আমার মনের চাওয়া নয়। শুধু দিশেহারা মানুষগুলোর হুশ ফেরানোর জন্য বলা।
একজন মানুষের প্রতিকৃতি বা মূর্তি বানিয়ে তাকে অন্তরে ধারন করা যায় না। তাকে অন্তরে ধারন করা যায়, তার কর্ম বিষয়ে জেনে, তার জীবনী পড়ে।
প্রতিটি মানুষ আল্লাহর বান্দা, আল্লাহর জন্য, আর আল্লাহর দিকেই সবাই ফিরে যায়। সেই জন্যেই কেউ মারা গেলে আমরা বলি,
“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন!”
এটা মৃতের জন্য কোন দু’আ না। এটা নিজেদের জন্য দু’আ। বিপদে পড়লে, দূঃখে পতিত হলে, প্রিয়জন হারালে, নিজেকে সান্তনা জানাবার জন্য পড়তে হয়।
এটা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য, আর তাঁর দিকেই আমাদের ফিরে যেতে হবে।
আমাদের পূর্ববর্তীরাও চলে গেছেন। বঙ্গবন্ধুও নেই।
তার বিদেহী আত্মাকে আর কত অত্যাচার করবো আমরা? তাকে কি ক্কবরেও আমরা শান্তি দেবার চেষ্টা করবো না? আরো পাপাচার করে তার বিদেহী আত্মাকেও কষ্ট দিতে হবে? আর কত? অনেকতো হয়েছে! অনুগ্রহ করে এবার থামুন!
একজন মুসলিম হিসাবে আমি চাইবো, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা, বঙ্গবন্ধুর ঈ’মান আর আ’মলের উপর ভিত্তি করে তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন, তাকে ক্ষমা করে জান্নাতবাসী করবেন। এটাই আমার আন্তরিক চাওয়া।
আশা করি যারা জাহেল মূর্খদের মত আচরণ করে প্রধানমন্ত্রীকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন, তাদের ভুল ভাঙ্গবে।
রাজনীতি করেন, তবে মৃত ব্যক্তিদের কষ্ট দিয়ে না।
আশা করছি সম্মানিতা প্রধানমন্ত্রী সাহেবার শুভবুদ্ধি উদয় হবে। তিঁনি দুনিয়া এবং আখেরাত সফলতা বিষয়ে নিজে আরো বেশী সচেতন হবেন, অন্যদেরকেও সচেতন করবেন।
দেশের সিংহভাগ জনগনেরই এটা চাওয়া যে, দেশের প্রধান তাদের অনুভুতির কথা অনুধাবন করবেন, দেশের প্রধান হিসাবে না, মানুষ হিসাবে।
একজন সফল রাষ্ট্র নায়কের পরিচয় হচ্ছে, তিনি সবসময় সাধারণ মানুষের Pulse অনুধাবন করতে পারেন, তাদের অনুভুতির কাছাকাছি পৌছাতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ১৯৯৭ সালে হজ্জ্বে, মীনার মাঠে আমার কথা হয়েছে। আমি জানি, ব্যক্তি মানুষ হিসাবে তিনি চমৎকার একজন মানুষ। সেই চমৎকার মানুষটিকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি রাজনৈতিক কুট কৌশলের কাছে।
সেই চমৎকার মানুষটি যদি আরো একবার সাধারণ মানুষের অনুভূতি অনুধাবন করতে পারেন, তাহলে এখনো বাংলাদেশের অনেক কল্যাণ সাধিত হতে পারে। ওয়ামা তৌফিকি ইল্লা বিল্লাহ!
যতক্ষন শ্বাস, আল্লাহর কাছে ততক্ষন আশ! তওবাহ’র পথ যালিমের জন্যও উন্মুক্ত। আমরা আর কয়দিন বাঁচি!
আল্লাহ রাব্বুল-আ’লামীন আমাদের সহায় হোন। আমীন!
- সোহেল সারোয়ার
১৯ শে নভেম্বর, ২০২০