Saturday, December 7, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরফরাসি প্রেসিডেন্টের দাবি-‘সংকটের মুখে ইসলাম’, বিশ্ব ব্যাপী সমালোচনার ঝড়

ফরাসি প্রেসিডেন্টের দাবি-‘সংকটের মুখে ইসলাম’, বিশ্ব ব্যাপী সমালোচনার ঝড়

ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ রক্ষায় ফ্রান্সের পরিকল্পনা উন্মোচন করে রাষ্ট্রপতি এমমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘পুরো বিশ্বেই আজ সংকটের মুখে রয়েছে ইসলাম ধর্ম ।’

ইসলামপন্থী চরমপন্থা দমনে এবং ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ রক্ষায় ফ্রান্সের পরিকল্পনা উন্মোচন করে রাষ্ট্রপতি এমমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “বিশ্বজুড়ে ইসলাম সঙ্কটে রয়েছে।” তার এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বের ইসলামি অ্যাক্টিভিস্টরা।

শুক্রবার দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত এক বক্তব্যে ম্যাক্রো জোর দিয়ে বলেন, ফ্রান্সে শিক্ষা ও সরকারি কাজকর্মের ক্ষেত্রে ধর্মকে বাইরে রাখার নতুন একটি প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ‘কোনো ধরনের আপস’ করা হবে না।

‘পুরো বিশ্বেই আজ সংকটের মুখে রয়েছে ইসলাম ধর্ম, শুধু আমাদের দেশেই এটা দেখা যাচ্ছে না।’- ম্যাক্রোঁ বলেন।

তিনি ঘোষণা করেন যে, ডিসেম্বর নাগাদ সরকার পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করবে, যাতে ১৯০৫ সালের রাষ্ট্র থেকে গির্জাকে আলাদা করার একটি আইনকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হয়।

ফ্রান্সে ক্রমবর্ধমান উগ্রপন্থা সমস্যা মোকাবিলা এবং যৌথভাবে একটি সমাজে জীবন যাপন করার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।

তিনি বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা হলো ঐক্যবদ্ধ ফ্রান্সের মূল ভিত্তি।’ কিন্তু এতে ইসলাম ধর্মবিশ্বাসীদের কলঙ্কিত করার কোনো মনোভাব নেই বলে জানান তিনি।

আইনে সবার জন্যই নিজেদের বিশ্বাস বেছে নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।- ম্যাক্রোঁ বলেন। কিন্তু, তাতে ধর্মীয় যোগাযোগ ও সংহতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা নিষিদ্ধ হতে পারে স্কুল ও সরকারি সেবা খাতগুলোতে।

ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে এবং সরকারি কর্মচারীদের হিজাব পরার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

ম্যাক্রোঁর ইসলাম সংকটে রয়েছে এমন বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

ইয়াসের লোয়াটি নামে দেশটির একজন মুসলিম অ্যাক্টিভিস্ট টুইটারে লিখেছেন, ‘মুসলিমদের হুমকি হিসেবে বিবেচনার বিষয়টি বর্তমানে তার প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হয়েছে। এক ঘণ্টার বক্তব্যে ম্যাঁক্রো ধর্মনিরপেক্ষতাকে কবর দিয়ে কট্টরডানপন্থী ও মুসলিমবিরোধী বামপন্থীদের উসকে দিয়েছেন এবং বিশ্বব্যাপী মহামারীতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জীবনকে আরও ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছেন।’

ফরাসি একাডেমিক আলোনি টুইট করেছেন: “প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইসলামকে এমন একটি ধর্ম বলে বর্ণনা করেছেন, যা আজ সারা বিশ্বে সংকটময় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। আমি কী বলব জানি না। এই মন্তব্যটি এত নির্বোধ যে আরও বিশ্লেষণের কোনো প্রয়োজন নেই। আমি যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তা আমি আড়াল করতে চাই না। যদিও আমরা দেখেছি যে ক্রাইস্টচার্চে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা ঘটিয়েছিল একদল শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী এবং ফ্রান্স পরিবর্তনের জোয়ার নামে বর্ণবাদী এবং সাদা আধিপত্যবাদী এই তত্ত্ব রফতানি করেছে, তবে তার কথায় এর উল্লেখ নেই।

আইয়াদ এল-বাগদাদী, নরওয়ে ভিত্তিক লেখক এবং কর্মী, টুইটারে ম্যাক্রোঁকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করেছেন।

ম্যাক্রোঁ তার বক্তব্যে দাবি করেন যে, তিনি ফ্রান্সে মসজিদ অর্থায়নের দিকগুলো উন্নত করে বিদেশী প্রভাব থেকে ইসলামকে উদ্ধার করতে চাইছেন।

সেক্ষেত্রে, শুধুমাত্র ধর্মীয় সম্প্রদায় কেন্দ্রিক স্কুল এবং সমিতিগুলিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

ফ্রান্স আবারও এর মুসলিম সংখ্যালঘুদের সাথে সম্পর্কের মূল্যায়ন করছে। ইউরোপের বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যালঘু সম্পন্ন দেশ ফ্রান্স।

গতমাসেই ম্যাক্রোর ‘লা রিপাবলিক এন মার্চে’’ পার্টির একজন ফরাসী সংসদ সদস্যের, সংসদীয় তদন্তে হিজাব পরিহিত ছাত্র ইউনিয়ন নেতার উপস্থিতির জের ধরে ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার এক সপ্তাহ আগে আরও এক বিতর্কের জন্ম নেয়, যখন একজন ফরাসী সাংবাদিক “১১ ই সেপ্টেম্বর” ক্যাপশন সম্বলিত একজন তরুণ প্রভাবশালী মুসলিমের পোস্টকে রিটুইট করেছিলেন। যেটি ২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার দিকে ইঙ্গিত করে।

বিদ্রুপাত্মক সাপ্তাহিক চার্লি হেবডোর প্যারিসে অবস্থিত প্রাক্তন অফিসের বাইরে ছুরি দিয়ে দুই জনকে আক্রমণের ঘটনার এক সপ্তাহ পরে গত শুক্রবার ম্যাক্রো এই বক্তব্য রেখেছিলেন। সরকার এটিকে ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দা জানায়।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সশস্ত্র বন্দুকধারীদের গুলিতে চার্লি হেবডোর কয়েকজন কর্মী নিহত হয়েছিল। যারা মূলত সাপ্তাহিকে প্রকাশিত বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এমনটি করেন।

ফ্রান্সের মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা সবসময় এই ক্রিয়াকলাপের নিন্দা করেছিলেন। এগুলো তাদের ধর্মের বিধিবিধানের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

18 − five =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য