Saturday, October 5, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরবেখবরবিএনপি নেতার হিমাগারে অভিযান চালানো কর্মকর্তাদের জুলাই–হত্যাকাণ্ডের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

বিএনপি নেতার হিমাগারে অভিযান চালানো কর্মকর্তাদের জুলাই–হত্যাকাণ্ডের মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

যাত্রাবাড়ীর ডেমরা রোডের কাজীর গাও এলাকার ‘নবী টাওয়ার’। ‘নবী টাওয়ার’ নামের এই বাড়িটির মালিক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী। বাড়িটির নিচতলায় রয়েছে একটি হিমাগার, যারা মালিকানা দেখানো হয়েছে নবীর জামাতা এম সিরাজউদৌল্লাহকে। তবে এই হিমাগার স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য ২০২০ সালে নথি জালিয়াতি করেন শ্বশুর-জামাতা।

চার বছর আগে এই নথি জালিয়াতির ঘটনা যাচাই করতে ঢাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ে চিঠি দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। অভিযোগের সত্যতা মেলায় সিরাজউদৌল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করে ডিসি অফিস। পরে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করে বন্ধ করে দেন হিমাগারটি। 

অভিযোগ উঠেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ীতে সাকিব নামের এক শিক্ষার্থী ও পথচারী হত্যা ঘটনায় দুটি মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের সেই তিন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেট থেকে শুরু করে অফিস সহকারীকেও। এই সরকারি কর্মকর্তারা চার বছর আগে ওই হিমাগারটির নথি জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। 

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান বলেন, ‘অ্যাগ্রো বেজড কোল্ড স্টোরেজের বিরুদ্ধে যারা আমরা রাষ্ট্রীয় স্বার্থে, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে কাজ করেছি তাদের নামই মামলায় ঘুরে ফিরে এসেছে। ফলে আমরা বলতে পারি, এটা আমাদের ওপর প্রতিহিংসামূলকভাবে মামলাটা দেওয়া হয়েছে।’

অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইলিয়াস মাহমুদ বলেন, ‘সনদ জাল কি-না এটা জানার জন্য চিঠি লিখে আমরা কি অপরাধ করেছি। এ জন্য তারা এখন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে, হয়রানির শিকার হচ্ছি। আসল আসামিদের সঙ্গে আমাদের মতো নিরপরাধ লোক যাদের সঙ্গে জুলাই-হত্যাকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তাদের আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি হত্যা মামলা হয়। হিমাগারের বিরুদ্ধে করা ওই জালিয়াতি মামলার বাদী ডিসি অফিসের অফিস সহকারী মোশারফ হোসেন ও অভিযানে যাওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলাম, এমনকি এই ঘটনায় সরকারি চিঠি দেওয়া অফিস সহায়ক ও মামলার সাক্ষী নজরুল ইসলাম আর জাফর সিকদারকেও মামলার আসামি করা হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহতদের স্বজন না হয়েও জুলাই হত্যাকাণ্ডের ওই মামলা দুটির বাদী হয়েছেন ৬৩ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর। মামলা দুটিতে ৪৪২ জনের নামসহ আসামি ৩ থেকে ৪ হাজার। আসামিদের বেশিরভাগই চেনেন না বাদী নিজেই।

ডিসি অফিসসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের চিনেন কি না বা হত্যাকাণ্ডের সময় আসামিদের দেখেছেন কি না—এই প্রশ্নে আবু বক্কর বলেন, ‘দেখছি না দেখছি সেইডা পরের হিসাব। যখন গোলাগুলি হইছে, তহন কই আছিলেন।’ বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবী মামলাটি আপনাকে দিয়ে করিয়েছেন কি না এই প্রশ্নের উত্তরে আবু বক্কর বলেন, ‘তাইলে তো সব আপনে জানেনই।’

অভিযোগ উঠেছে, এ ঘটনার মূল কারিগর বিএনপির নেতা নবীউল্লাহ নবী। তিনিই মামলা দুটি করিয়েছেন আবু বক্করকে দিয়ে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যক্তিগত কাজ না। আসামিরা নিজেদের বাঁচাতে মিথ্যা অভিযোগ করছে। এটা আমাদের পার্টির নির্দেশ যারা সরকারি আমলা বা সরকারি ক্যাডার, ছাত্রলীগের ক্যাডার…  হাইকমান্ড থেকে …।’

ডিসি অফিসের কম্পিউটার অপারেটরেরও এই ঘটনায় জড়িত ছিল কি না এমন প্রশ্নে অপ্রস্তুত হয়ে যান বিএনপির এই নেতা। বলেন, ‘ছিল বিধায়ই মামলায় নাম এসেছে।’

এদিকে, শিক্ষার্থী সাকিব হত্যা মামলায় সাক্ষী করা হলেও বাবা মর্তুজা আলম এর কিছুই জানেন না। মর্তুজা আলম বলেন, ‘আমাকে নেতারা বলেছিল, এই ঘটনায় মামলা করার জন্য। তখন আমি তাদের জানিয়েছি, এই ঘটনায় আমি কোনো মামলা করব না।’

এ অবস্থায় পুলিশ বলছে, আইন অনুযায়ী নেওয়া হবে ব্যবস্থা। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সে পুলিশ হোক বা সরকারি লোক হোক, এটা তদন্ত করে যদি মনে হয় ওই নামটা থাকা উচিত তাহলে নাম থাকবে।’

সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের মামলায় গণঅভ্যুত্থানের চেতনাই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

ten − 7 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য