এ সপ্তাহের শেষের দিকে বিক্ষোভকারীরা বেনগাজি শহরে অবস্থিত সরকারি সদরদপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
জেনারেল খলিফা হাফতারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আল মার্জেও প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবরে জাতিসংঘের লিবিয়া মিশন “গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে”।
এএফপি জানায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৫ জনকে আহত করেছে এবং জোরপূর্বক তাদেরকে পুলিশ স্টেশনে আটকে রাখছে।
জেনারেল হাফতারের এক মুখপাত্র বলেছেন, প্রশাসন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সমর্থন দিয়েছে। তবে তারা সন্ত্রাসবাদীদের এবং মুসলিম ব্রাদারহুডকে বরদাস্ত করবে না।
প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের পদত্যাগ কার্যকরে তব্রুক সংসদকে অনুমোদন করতে হবে।
লিবিয়া ন্যাটো সমর্থিত বাহিনী ২০১১ সালে দীর্ঘসময়ের স্বৈরাচারী শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে নানা সমস্যায় জর্জরিত ।
রাজধানী ত্রিপোলি কেন্দ্রিক, লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের নিয়ন্ত্রক, জাতিসংঘ স্বীকৃত গভর্নমেন্ট ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ) এখন পর্যন্ত ঘটা সকল বিক্ষোভ গুলিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
২০১৯ এর এপ্রিলে জেনারেল হাফতার বাহিনী ত্রিপোলি দখলের জন্য আক্রমণ চালিয়েছিল। তবে এ বছরের শুরুর দিকে তুরস্কের সামরিক সহায়তায় সরকারি বাহিনী, রাশিয়ান সমর্থিত হাফতার বাহিনীকে ত্রিপোলি থেকে হটাতে সক্ষম হয়।
গত মাসে লিবিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম ভিত্তিকএই দুই সরকার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।
মে মাসের শুরুর দিকে, জাতিসংঘের একটি ফাঁস হওয়া রিপোর্টে উল্লেখ ছিল যে, ওয়াগনার গ্রুপের (যেটি রাশিয়ান রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইয়েজেগেনি প্রিগোজিন দ্বারা পরিচালিত) কয়েকশত ভাড়াটে বিদেশী সৈনিক লিবিয়ায় নিয়োজিত রয়েছে।
জেনারেল হাফতারকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে জিএনএ, তুরস্ক, কাতার এবং ইতালির সমর্থন পাচ্ছে।
লিবিয়ায় রয়েছে আফ্রিকার বৃহত্তম তেল ও গ্যাসের ভান্ডার।
জানুয়ারী থেকে জেনারেল হাফতারের অনুগত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী মূল তেল ক্ষেত্রগুলিকে অবরুদ্ধ করে। ফলশ্রুতিতে তা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায় এবং তেল রপ্তানি বাণিজ্যে লিবিয়াকে কোটি কোটি টাকার লোকসানে ফেলে দেয়।
গত মাসে টার্মিনালগুলিতে সঞ্চিত তেল বিক্রির অনুমতি দেওয়া হলেও, নতুন উৎপাদিত তেল বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
লিবিয়ার নেতারা জনগণের আস্থা হারাচ্ছে
লিবিয়ার ক্ষমতাসীন সরকারের দুটির মধ্যে পূর্ব-ভিত্তিক সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্বারা স্বীকৃত নয়।
এই অঞ্চলটি বহু বছর ধরে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এ বিষয়ে কেউ কেউ জেনারেল হাফতারের স্বঘোষিত সেনাবাহিনীর স্বার্থে বিরোধে লিপ্ত থাকে। যারা বর্তমানে এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
এক মুখপাত্র বলেন যে, তারা বিক্ষোভকারীদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে চেষ্টা করবেন এবং দ্রুত এই প্রতিক্রিয়াটিকে তাদের উচ্চ মহলের আলোচনার বিষয় হিসাবে দেখা যেতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকার এর পদত্যাগের ঘটনার চেয়েও লিবিয়ার সশস্ত্র ও রাজনৈতিক সংস্থা গুলোর জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উদ্বিগ্ন সাধারণ জনগণ ও লিবিয়ার অব্যাহত অস্থিতিশীলতাকে নিয়ন্ত্রণ করা।
মারাত্মক বিদ্যুৎ হ্রাস, চলমান ব্যাংকিং সংকট, জীবনযাত্রার মানের অবনতি ও দুর্নীতি এ ধরনের ঘটনাগুলো বেসামরিক জনগণের বিক্ষোভকে আরো ত্বরান্বিত করে দিয়েছে।