Wednesday, February 12, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা যৌক্তিক, ভাঙা নিয়মবহির্ভূত: ইসলামী আন্দোলন

ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা যৌক্তিক, ভাঙা নিয়মবহির্ভূত: ইসলামী আন্দোলন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলেছে, ইসলামের দৃষ্টিতে যৌক্তিকভাবে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়েছে। কিন্তু  তাঁরা ভাস্কর্য বা মূর্তি ভাঙার বিষয়ে কোনো মতামত প্রকাশ করেননি। কেউ এ ধরনের আচরণ করলে তা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এসব কথা  বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে হেফাজত ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, আরেক নেতা মাওলানা মামুনুল হক ও  ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি যাঁরা দেশের ওলামা সমাজ ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের গালাগাল, ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে অপমান করে, সংঘাত ও মল্লযুদ্ধের আহ্বান করেন, তাঁদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, উলেমায়ে কেরামের দাবির মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোনো বিদ্বেষ ছিল না। বরং বিষয়টি ছিল দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ জনগণের বোধ বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মূর্তি স্থাপন না করে অন্য কোনো পন্থায় তাঁকে স্মরণ করার দাবি। আলেম সমাজ ও সাধারণ মুসলিম ধর্মপ্রাণ জনগণ সরকারের কাছে প্রাণের আকুতি তুলে ধরতেই পারে। মানা না-মানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু বিষয়টিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় উলেমায়ে কেরামকে অপদস্থ করার হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সুবিধাবাদী মহল বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশে চরম উসকানি ও উত্তেজনা তৈরি করছে।

রেজাউল করীম আরও বলেন, সরকার যদি তাদের সুবিধাভোগী উগ্র সমর্থক ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী শক্তিগুলোর বাড়াবাড়ি এবং উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। মূর্তি বা ভাস্কর্য নিয়ে বিরাজমান পরিস্থিতিকে দেশবিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত আকারে দেখছেন তিনি।

কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করীম বলেন, ‘আমরা শুধু ভাস্কর্য বা মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিতে মতামত প্রকাশ করেছি। কিন্তু মূর্তি ভাঙা বা উসকানির মতামত দিইনি। মূর্তি ভাঙার বিষয়ে পরিষ্কারভাবে বলেছি, যদি কেউ এই ধরনের আচরণ করে থাকে, তাহলে তা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, এটা আমরাও সমর্থন করি।’

দেশজুড়ে ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মোহাম্মদ মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীর বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলাটি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আসামিদের মধ্যে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির, জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজত ইসলামের আমির ও মাওলানা মামুনুল হক একই সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মামলার আরজি অনুযায়ী, গত ১৩ নভেম্বর সৈয়দ ফয়জুল করীম রাজধানীর গেন্ডারিয়াতে এক সভায় এবং একই দিনে মামুনুল হক রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেন। আর গত ২৭ নভেম্বর জুনায়েদ বাবুনগরী চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক সভায় রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেন।

এরপর বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। ১ ডিসেম্বর বাবুনগরী, মামুনুলদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ ৬৫টি সংগঠন। কিন্তু বিতর্ক থামেনি। ভাস্কর্যের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের মধ্যেই গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটি ভাস্কর্য ভাঙা হয়। এরপর গতকাল রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগে মামলাটি করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four − 1 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য