ভিক্ষায় বেশি আয়ের লোভে সাড়ে তিন বছরের শিশু রোহানকে গত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর হাসপাতাল চত্বরে। তবে কিছুক্ষণ পরই দুধের শিশুটি কান্না জুড়ে দেয়। এ অবস্থায় হাসপাতালের পেছনে খোলা সেপটিক ট্যাংকের ভেতর শিশুটিকে ফেলে দেওয়া হয়।
এই হত্যার অভিযোগ উঠেছে ১৩ বছরের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আরামবাগ এলাকার নিজ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। সে স্বীকার করেছে, ভিক্ষায় তার তেমন রোজগার না হওয়ায় টিভিতে অপহরণ ও ভিক্ষার কাহিনি দেখে সে পাশের মসজিদপাড়ার নির্মাণ শ্রমিক সুজন আলীর ছেলে রোহানকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মসজিদপাড়া থেকে নিখোঁজের দুই দিন পর শনিবার রাতে সাড়ে তিন বছরের শিশু রোহানের মরদেহ সদর হাসপাতালের খোলা সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযুক্ত কিশোরের বাবা মারা গেছেন। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান গতকাল জানান, নিখোঁজের পর রোহানের মা সদর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজের সূত্র ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশুটির মরদেহ হাসপাতালের খোলা সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত কিশোরকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান জানান, রোহানের মরদেহ উদ্ধারের পর হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত কিশোরকে চিহ্নিত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, রোহানকে অপহরণ করে ভিক্ষা করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় সে। তবে রোহান বাড়ি যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। ফলে সে রোহানকে হাসপাতালের পেছনের ঢাকনাবিহীন ট্যাংকের কাছে নিয়ে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখায়। এর পরও চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিশুটিকে জোর করে ধরে রাখার একপর্যায়ে মাথায় আঘাত লাগে। এরপর ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেয় সে।
এ ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান।
রোহানের মরদেহ উদ্ধারের পর মসজিদপাড়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গতকাল রবিবার সকালে জানাজা শেষে শিশুটিকে দাফন করা হয়।