Sunday, December 10, 2023

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরভয়ঙ্কর অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোররা

ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোররা

দেশজুড়ে আতঙ্কের আরেক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে কিশোর গ্যাং। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরোনোর আগেই কিশোরদের একটা অংশের দলবদ্ধ বেপরোয়া আচরণ ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সমাজে। এরা বিভিন্ন নামে নানা ধরনের গ্রুপে বিভক্ত হয়ে জড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর সব অপরাধে। তাদের হাতে হয়রানির শিকার হচ্ছে নারী-শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষ। একই সাথে কিশোর গ্যাংয়ের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেড়েছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও। রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, বাড্ডাসহ ঢাকার ৪০টি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বে গত ১৭ বছরে ১২০ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে গত দুই বছরেই কিশোর অপরাধীদের হাতে মারা গেছে ৩৪ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের কেউ স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়েছে, কেউ বা এখনো পড়ছে। এদের সাথে যোগ হচ্ছে কিশোর বয়সের ছিনতাই ও মাদক মামলার আসামিরাও। এলাকায় আড্ডা আর খেলার ছলে অনেক কিশোরই জড়িয়ে পড়ছে গ্যাং কালচারে। এরপর জড়িয়ে পড়ছে মাদক সেবন, মাদক কারবারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে। প্রকাশ্যে রাস্তায় গুলি করতেও তাদের হাত কাঁপছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের কঠোর নজরদারি এবং পরিবারের নজরদারি ও মূল্যবোধ দিয়ে এই কিশোর অপরাধ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।

আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীরা অন্যান্য দেশের তুলনায় অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় উল্লেখ করে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, কিশোর গ্যাং বা কিশোর অপরাধ ইদানীংকালে একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের নজরদারি বাড়ালেই এটা কমে যাবে।

তিনি বলেন, বাঙালিরা মারামারি করে যখন রাজনৈতিকভাবে দলবদ্ধ হয়। মানুষ যখন দলবদ্ধ হয় তখন তাদের মধ্যে সাধারণত বুদ্ধি-বিবেচনা কমে যায়, উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এতেই অঘটন ঘটে। এটা কিশোরদের বেলায়ও প্রযোজ্য। তাদের দলবদ্ধ হওয়াটা অনেক সহজেই কমাতে পারে পুলিশ। তাই যে সব জায়গায় কিশোর গ্যাং বেশি বেপরোয়া ওইসব জায়গায় পুলিশের নজরদারি বাড়ালেই সমস্যার অনেকখানি সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, প্রথমতো আমাদের জীবন ব্যবস্থাগুলো পরিবারকেন্দ্রিক। পরিবারের একজন তরুণ সদস্যকে কিভাবে সমাজের জন্য উপযোগী করে তৈরি করতে হবে সেই শিক্ষায় আমাদের এখানে যথেষ্ট পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে। অনেক পরিবারে আমরা লক্ষ করি অভিভাবকরা কর্মের কারণে হোক, আর সময়ের স্বল্পতার কারণে হোক তারা সন্তানদের ভরণ-পোষণ থেকে শুরু করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করে তাদের দায়িত্বের জায়গাটি সমাপ্ত করতে চান। কিন্তু একজন তরুণকে বৃহৎপরিসরে একজন মানবিক, সংবেদনশীল, অধিকারবোধসম্পন্ন মানুষ, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষ হিসেবে তৈরি করতে আরো যে কিছু শিক্ষার দরকার আছে সে বিষয়টি পরিবার থেকে আসাটা খুব জরুরি। কিন্তু এই শিক্ষাটা বা এই পরিবেশটা আমরা ঘাটতি লক্ষ করছি।

দ্বিতীয়ত, কিশোরদের রাজনীতিতে ঢুকানো হচ্ছে। একটা এলাকায় যে রাজনৈতিক কোন্দলগুলো রয়েছে, সে কোন্দলগুলোকে ধরে রাখা, প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে প্রায় প্রতি রাজনীতিকেরই একটা করে গ্রুপ থাকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিশোরদের দিয়ে এ গ্রুপ তৈরি করলে কম খরচে গ্রুপটাকে পরিচালনা করা সম্ভব হয়।

সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড : গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পালাসুতা গ্রামে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠেই ছুরিকাঘাতে মোহাম্মদ আমিন (১৬) নামের এক কিশোর খুন হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর মান্ডায় হাসান (১৭) নামের এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। স্থানীয় কিশোর গ্রুপের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে কামরাঙ্গীরচরে খুন হয় ১২ বছরের শিশু সিফাত। জানা গেছে, বাসায় ফেরার পথে নিজের বয়সী এক শিশুর পা মাড়িয়ে দেয় সিফাত। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিশুটি তার সঙ্গীদের নিয়ে সিফাতকে ধাওয়া করে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিফাতের মৃত্যু হয়।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

twelve + 11 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য