টানা তিন দিন ধরে তিন খুনের অভিযোগে এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মাত্র ২২ বছরের এই কিশোর ১০টি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল। বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতের পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তার আসল নাম মো. রাজি। তিনি বিহারের বাসিন্দা। দিল্লি, বিহার ও গুরুগ্রাম মিলিয়ে অন্তত ১০টি খুনে অভিযুক্ত তিনি।
এই ব্যক্তিকে বিহারে ‘সাইকো রাজি’ বলে ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে বলেছেন, অচেনা মানুষকে খুন করতে দারুণ মজা পান তিনি। পুলিশের জিজ্ঞাসাওবাদে নির্লিপ্তভাবে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
গত ২৩ থেকে ২৫ নভেম্বর, প্রতি রাতে একজন করে অচেনা মানুষকে খুন করেন ওই তরুণ। এর মধ্যে শেষজনের মাথাটা দেহ থেকে কেটে আলাদাও করে দেন তিনি। পরপর তিনদিন তিনটি খুনের দায়েই তাকে খুঁজছিল পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনগুলোর কোনো উদ্দেশ্যের সন্ধান মেলেনি। রাজি জানিয়েছে, মানুষ মারতে ভালো লাগে তার। তিনি বিশ্বাস করেন, এমনটা করে সহজেই বিখ্যাত হওয়া যায়। প্রতি ক্ষেত্রেই খুনের টার্গেট করা ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে মদ খেয়েছেন তিনি। অচেনা মানুষকে নেশায় জড়িয়ে তারপর তাকে নৃশংসভাবে খুন করতেন অভিযুক্ত।
বিহার ও দিল্লিতে হত্যালীলা চালানোর পর ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে গুরুগ্রাম চলে আসেন তিনি। বিভিন্ন নির্মাণক্ষেত্রে শ্রমিকের কাজ করতেন রাজি। গত অক্টোবর থেকে আবার জেগে ওঠে তার খুনের নেশা। প্রথম প্রথম এমনিই। পরে সঙ্গে যুক্ত হয় চুরির মজাও। খুন করে আক্রান্তের পকেটে থাকা টাকাপয়সা হাতিয়ে নতুন করে মদ কিনে নেশায় মেতে উঠতেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই তাকে শুনতে হয়েছে তার দ্বারা কিছু হবে না। রাজি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই ব্যাপারটা বুঝতে পারিনি। সবাই খালি বলত, তুই দুর্বল। তোর দ্বারা কিছু হবে না। তাই আমি দুনিয়াকে দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলাম আমি কী পারি।
পুলিশ জানায়, নিজের কৃতকর্মের জন্য ন্যূনতম কোনো অনুশোচনা নেই তার। ঠিক কতগুলো খুন তিনি করেছেন, জানতে এখনো তাকে জেরা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আর তিনিও নির্লিপ্তভাবে উত্তর দিয়ে চলেছেন। যদিও তার সহকর্মীরা কেউ বিশ্বাস করতে চাইছেন না, তিনি সত্যিই এমন ভয়ংকর এক খুনি। তাদের মতে, রাজি চুরি করতে পারে। কিন্তু খুনও করেছে, তা অবিশ্বাস্য।
আমারসংবাদ/এমআর