ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করার ব্যাপারে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৪)
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার উপায়গুলো হলো—
আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা, তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া। উপহার-উপঢৌকন দেওয়া, যথাযথ সম্মান করা ও মর্যাদা দেওয়া।
তাদের মধ্যে যারা অভাবী তাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করা।
আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে এলে হাসিমুখে বরণ করা এবং যথাসাধ্য আপ্যায়ন করা। মাঝেমধ্যে আমন্ত্রণ করা।
আত্মীয়-স্বজনের সুসংবাদে শরিক হওয়া এবং দুঃসংবাদে সমব্যথী হওয়া।
বিবদমান বিষয় দ্রুত মীমাংসা করা এবং সম্পর্কোন্নয়নের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখা।
আত্মীয়-স্বজনের কেউ অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া এবং সাধ্যমতো তার সেবা করা।
কোনো আত্মীয় দাওয়াত দিলে তার দাওয়াত কবুল করা।
আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, তাদের হিদায়াতের চেষ্টা করা; সৎ, সত্য ও দ্বিনের দাওয়াত দেওয়া। তাদের সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা।
যদি কোনো আত্মীয়ের মধ্যে অহংকার, শত্রুতা ও বিরোধী ভাব পরিলক্ষিত হয় অথবা কেউ যদি এই আশঙ্কা করে যে তার কোনো আত্মীয় তার সঙ্গে বাড়াবাড়ি করবে, তাহলে তার সঙ্গে নম্রতা অবলম্বন করা অথবা তাদের থেকে এমনভাবে দূরত্ব বজায় রাখা যে সেটা যেন তাদের কোনো কষ্টের কারণ না হয়। আর তাদের জন্য বেশি পরিমাণে দোয়া করা।
আত্মীয়দের কেউ মারা গেলে জানাজায় শরিক হওয়া।
সর্বোপরি, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে বিনম্র ব্যবহার এবং তাদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বৃদ্ধির উপায় হলো, আত্মীয়-স্বজনের দুর্ব্যবহার সুন্দরভাবে মোকাবেলা করা, ভুলের পর তাদের পেশকৃত কৈফিয়ত গ্রহণ করা, সাধ্যমতো ব্যয় করা, তাদের অবস্থা ও অবস্থানের প্রতি লক্ষ রাখা, স্বজনদের ভর্ত্সনা ও তিরস্কার করা থেকে বিরত থাকা, আত্মীয়দের সমালোচনা সহ্য করা, হাসি-ঠাট্টায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা, যৌথ কর্মকাণ্ডে ঐকমত্যের প্রতি আগ্রহী হওয়া, পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টনে দ্রুততা অবলম্বন করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম মনে করা।