Monday, October 14, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমযুগ জিজ্ঞাসারমাযানের রোযা কাযা করার বিবরণ

রমাযানের রোযা কাযা করার বিবরণ

রমাযানের রোযা কাযা করার বিবরণ
কারো রমাযান মাসের রোযা ছুটে গেলে তা সত্বর কাযা করা ওয়াজেব নয়। বরং এ ব্যাপারে প্রশস্ততা আছে; সুযোগ ও সময় মত তা কাযা করতে পারা যায়। তদনুরূপ কাফ্ফারাও সত্বর আদায় করা ওয়াজেব নয়।

যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন, (فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيْضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَر) অর্থাৎ, কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ বা মুসাফির হলে সে অপর কোন দিন গণনা করবে। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৪) অর্থাৎ, সে অপর কোন দিনে রোযা রেখে নেবে।

এখানে মহান আল্লাহ লাগাতার বা সাথে সাথে রাখার শর্ত আরোপ করেন নি। সে শর্তের কথা উল্লেখ থাকলে অবশ্যই তা সত্বর পালনীয় হত। অতএব বুঝা গেল যে, এ ব্যাপারে প্রশস্ততা আছে।[1] বলা বাহুল্য, যদি কেউ তার ছুটে যাওয়া রোযা পিছিয়ে দিয়ে শীতের ছোট ছোট দিনে রাখে, তাহলে তাও তার জন্য বৈধ এবং যথেষ্ট। তাতেও মহান আল্লাহর ঐ ঋণ পরিশোধ হয়ে যাবে।[2] তবে ঈদের পরে ওজর দূর হয়ে গেলে সুযোগ হওয়ার সাথে সাথে সত্বর কাযা রেখে নেওয়াই উচিত। কারণ, তাতে সত্বর দায়িত্ব পালন হয়ে যায় এবং পূর্বসতর্কতামূলক কর্ম সম্পাদন করা হয়।[3] মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘আমার রমাযানের রোযা কাযা থাকত। কিন্তু সে রোযা শা’বান ছাড়া তার আগে কাযা করতে সক্ষম হতাম না।’ এই কথার এক বর্ণনাকারী ইয়াহয়্যা বিন সাঈদ বলেন, ‘এর কারণ এই যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)-এর খিদমত তাঁকে ব্যস্ত করে রাখত। আর তাঁর কাছে তাঁর পৃথক মর্যাদাও ছিল।’[4] এখানে মা আয়েশার বাহ্যিক উক্তি এই কথাই দাবী করে যে, তাঁর ব্যস্ততা না থাকলে ছুটে যাওয়া রোযা সত্বরই কাযা করতেন। এ থেকে বুঝা যায় যে, যার কোন ওজর-অসুবিধা নেই, তার জন্য দেরী না করে সত্বর কাযা রেখে নেওয়াই উচিত।[5] কাযা রোযা ছুটে যাওয়া রোযার মতই। অর্থাৎ, যত দিনকার রোযা ছুটে গেছে, ঠিক তত দিনকারই কাযা করবে; তার বেশী নয়। অবশ্য উভয়ের মাঝে পার্থক্য এই যে, কাযা রোযা লাগাতার রাখা জরুরী নয়। যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন, (فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ) ‘‘কিন্তু তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ বা মুসাফির হলে সে অপর কোন দিন গণনা করবে।’’ (কুরআনুল কারীম ২/১৮৪) অর্থাৎ, যে দিনের রোযা সে ছেড়ে দিয়েছে, সেই দিনগুলোই যেন অন্য দিনে কাযা করে নেয়; নিরবচ্ছিন্নভাবে অথবা বিচ্ছিন্নভাবে। যেহেতু মহান আল্লাহ এখানে রোযা কাযা করার কথাই বলেছেন এবং তার সাথে কোন ধরনের শর্ত আরোপ করেন নি।[6] পক্ষান্তরে কাযা রোযাসমূহকে ছেড়ে ছেড়ে অথবা লাগাতার রাখার ব্যাপারে কোন মরফূ’ হাদীস বিশুদ্ধরূপে বর্ণিত হয় নি। সঠিক হল, উভয় প্রকার বৈধ। যেমন আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, ‘ইচ্ছা করলে একটানা রাখবে।’[7] অবশ্য এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তিনটি কারণে কাযা রোযাগুলিকে একটানা -অর্থাৎ মাঝে এক দিনও বাদ না দিয়ে- রেখে নেওয়াই উত্তমঃ- প্রথমতঃ একটানা রোযা কাযা রাখাটা আসল রোযার সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ, আসল রোযা একটানাই রাখতে হয়। দ্বিতীয়তঃ লাগাতার রাখলে অতি সত্বর দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। যেহেতু একদিন রোযা রেখে মাঝে ২/১ দিন বাদ দিয়ে আবার রাখলে কাযা পূর্ণ করতে বিলম্ব হয়ে যায়। অথচ লাগাতার রেখে নিলে তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। তৃতীয়তঃ একটানা রোযা রেখে নেওয়াটাই পূর্বসতর্কতামূলক কর্ম। কারণ, মানুষ জানে না যে, আগামীতে তার কি ঘটবে। আজ সুস্থ আছে, কিন্তু কাল হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বে। আজ জীবিত আছে, কিন্তু কাল হয়তো মরণের আহবানে সাড়া দিতে হবে।[8] অনুরূপভাবে আসল রোযা থেকে কাযা রোযার একটি পার্থক্য এই যে, কাযা রোযা রাখা অবস্থায় দিনের বেলায় সঙ্গম করে ফেললে কোন কাফ্ফারা লাগে না। যেহেতু সেটা রমাযান মাসের বাইরে ঘটে তাই।[9] [1] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৪৯)

[2] (ফাসিঃ মুসনিদ ৮১পৃঃ)

[3] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৪৬)

[4] (বুখারী ১৯৫০, মুসলিম ১১৪৬, আবূ দাঊদ ২৩৯৯, ইবনে মাজাহ ১৬৬৯, ইবনে খুযাইমাহ, সহীহ ২০৪৬-২০৪৮নং, বাইহাকী ৪/২৫২)

[5] (তামামুল মিন্নাহ, আল্লামা আলবানী ৪২২পৃঃ দ্রঃ)

[6] (ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪১৬)

[7] (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৪/৯৪-৯৭, তামামুল মিন্নাহ, আল্লামা আলবানী ৪২৪পৃঃ)

[8] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৪৬)

[9] (ঐ ৬/৪১৩)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

three + nineteen =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য