Wednesday, November 29, 2023

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরলক্ষ লক্ষ অনাহারীদের সাহায্যের জন্য ধনকুবেদের প্রতি জাতিসংঘের আহ্বান

লক্ষ লক্ষ অনাহারীদের সাহায্যের জন্য ধনকুবেদের প্রতি জাতিসংঘের আহ্বান

‘বিশ্বের তিন ডজন দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে’, ইয়েমেন এবং কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের (ডিআরসি)এর পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ (ডব্লিউএফও)-র প্রধান সতর্ক করেন।

সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং করোনাভাইরাস মহামারী সব মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভয়ংকর এক দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হতে চলেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডাব্লুএফপি) প্রধান ডেভিড ব্যাসলি।

গত বৃহস্পতিবারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সেশনে ব্যাসলি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব হিসেবে বিশ্বের তিন ডজন দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে। সংঘাতপূর্ণ দেশ গুলোর অবস্থা আরো নাজুক হতে পারে।

কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের (ডিআরসি) তে সহিংসতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষুধার সঙ্গে যুদ্ধ করছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। তহবিলের অভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মানুষ ও এখন রয়েছে অনাহারে।– বলেন ডেভিড ব্যাসলি ।

এদিকে, নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ সুদানে মহামারীজনিত কারণে লাখ লাখ মানুষ খাদ্য অনিশ্চয়তায় ভুগছে- তিনি আরো বলেন।

পাঁচ মাস আগে করোনা মহামারীর শুরু থেকেই চরম ‘খাদ্য সংকটের’ হুশিয়ারি দিয়ে আসছিল জাতিসংঘ। যা ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ এড়াতে সক্ষম হলেও ‘বিশ্বের ২৭ কোটি মানুষ খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়তে চলছেন’। এই সমস্যা উত্তরণের জন্য আরো বেশি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ (ডব্লিউএফও)-র প্রধান বলেন।

যাদের অগাধ আছে, এটাই শ্রেষ্ঠ সময় এগিয়ে আসার

খাবারের অভাবে মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৩ কোটি মানুষ যাদেরকে বাঁচাতে বছরে অন্তত ৪৯০ কোটি ডলার সাহায্য প্রয়োজন। যারা বেঁচে থাকার জন্য কেবলমাত্র জাতিসংঘের কর্মসূচিতে নির্ভর করে।

ব্যাসলি বলেন, ‘যাদের কাছে অগাধ আছে, এটাই সময়, তাদের এগিয়ে আসার। বিশ্ব ইতিহাসের এই সংকটাপন্ন মুহূর্তে আপনাদের প্রয়োজন। সঠিক কাজ করে দেখানোর এটাই সময়।’ 

‘বিশ্বে অন্তত দুই হাজার বিলিওনিয়র রয়েছেন। তাদের মোট ধনসম্পদ, বার্ষিক আয় যোগ করলে আট লক্ষ কোটি ডলারেরও বেশি।’ দক্ষিণের ক্যারোলাইনের প্রাক্তন গভর্নর ব্যাসলি বলেন।

একটি রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি আরো বলেন, ‘এই মহামারী পরিস্থিতিতেও মার্কিন কোটিপতিরা কোটি কোটি ডলার কামিয়েছেন।’

বিজনেস ইনসাইডারের মতে, মহামারী পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, মাইক্রোসফ্টের প্রাক্তন সিইও স্টিভ বাল্মার, টেসলার সিইও ইলন মাস্ক, ক্যাসিনো ম্যাগনেট শেল্ডন অ্যাডেলসন এবং অন্যদের সম্পদের পরিমাণ কোটি কোটি বেড়েছে।

‘কেউ বিপুল অর্থ উপার্জন করতেই পারেন। তাতে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু মানব সভ্যতা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। এমন পরিস্থিতি আমরা অনেকেই জীবদ্দশায় দেখিনি।’- বলেন ডেভিড ব্যাসলি ।

জরুরি অবস্থা ইয়েমেনে

ইয়েমেনে পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক। যা ইতিমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে।

জাতিসংঘের ধারণা অনুযায়ী, ২৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার ইয়েমেনের তিন চতুর্থাংশ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য কোনো না কোনোভাবে সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।

বৃহস্পতিবার কুয়েত ইয়েমেনের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষে ২০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে বলে ঘোষণা করেছে। যদিও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের আহ্বানের দু’দিন পরে তারা এই ঘোষণা করে।- কূটনীতিকদের মতে (এএফপি)।

জার্মানি, কুয়েত, সুইডেন এবং যুক্তরাজ্য আয়োজিত গোপনীয় এক সভায় ভিডিও কনফারন্সে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ নাসের আল-মোহাম্মদ আল সাবাহ এই ঘোষণা দেন। চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও এতে অংশ নিয়েছিল।

বৈঠককালে অন্যান্য দেশ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঘোষণা করলেও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন কূটনীতিকরা।

মঙ্গলবার, মানবতা বিষয়ক জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল, মার্ক লোকক, নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলে, ইয়েমেনে “দুর্ভিক্ষের আতঙ্ক ফিরে এসেছে”।

‘সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কুয়েত সহ বেশ কয়েকটি দেশ এখনও এই বছরে কোন ধরনের সহায়তা দেয়নি। দায়বদ্ধতা থাকা সত্বেও সাম্প্রতিক বছরে তারা এখান থেকে অনেক দূরে।’- তিনি তিরস্কার সুরে সদস্য দেশ গুলিকে বলেন।

‘কারো কাছ থেকে অর্থের প্রতিশ্রুতি পাওয়া সবসময় মানুষকে আশা দেখায়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়া অত্যন্ত নিন্দাজনক। যা সেই আশা গুলোকে দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে ফেলে।’

‘মানবিক বিপর্যয়ে অব্যাহতভাবে অর্থ আটকে রাখা অনেক পরিবারের মৃত্যুর কারণ হবে।’- লোকক বলেন।

ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার ২০১৪ সাল থেকে হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। যেখানে বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা সহ উত্তরের বেশিরভাগ অংশ দখল করেছিল। পরের বছর সৌদি নেতৃত্বাধীন একটি সামরিক জোট সরকারের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করে।

পাঁচ বছরেরও বেশি যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। যাদের বেশির ভাগ বেসামরিক নাগরিক। এবং যা দেশের অবকাঠামোকে ধ্বংস করেছে।

জাতিসংঘের প্রধান অ্যান্টোনিও গুতেরেস বৃহস্পতিবার বলেন যে, ‘এই সংঘাত দরিদ্র দেশটির “দশক ধরে” উন্নয়নের হারকে নিম্নমুখী করেছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে “পতনের পথে” ফেলেছে।’

মহামারী মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির জন্য, ২৩ শে মার্চ তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধরত পক্ষগুলি প্রাথমিক সায় দেয়। তারপরেও “সংঘাত অব্যাহত রয়েছে” এবং “সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে দুর্ভাগ্যক্রমে সংঘাত আরও বেড়েছে”। – বলেন গুতেরেস।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

one + fourteen =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য