Saturday, December 14, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদাওয়াশয়তানের প্রতারণা থেকে বাঁচার আমল

শয়তানের প্রতারণা থেকে বাঁচার আমল

শয়তান মানুষের শত্রু। শয়তান মানবদেহে রক্তের মতো চলাচল করতে পারে। তাই সে মানুষের ঈমান ও আমল ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রতারণা করে। নিম্নে শয়তানের প্রতারণা থেকে বাঁচার আমল বর্ণনা করা হলো—

প্রতারণা থেকে বাঁচার আমল:

শয়তান যত ধূর্ত ও শত্রু হোক না কেন ঈমানের দৃঢ়তা, আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা, ইবাদত-বন্দেগি ও নেককার লোকের সঙ্গ অবলম্বন করে শয়তানের প্রতারণা থেকে বাঁচা সম্ভব।

হাদিসে বর্ণিত ছয়টি আমল এখানে উল্লেখ করা হলো।

এক. ঈমান বিষয়ক প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজিম পড়তে হয়।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারো কাছে শয়তান আসতে পারে এবং সে বলতে পারে এ বস্তুকে কে সৃষ্টি করেছে? ওই বস্তুকে কে সৃষ্টি করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে তোমাদের প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন ব্যাপারটি এই স্তরে পৌঁছে যাবে, তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং বিরত হয়ে যায়।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২৭৬)

দুই. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পাঠের মাধ্যমে শয়তানের শক্তি দুর্বল হয়ে যায়। আবু মালিহ (রহ.) একজন সাহাবি থেকে বর্ণনা করেন, আমি নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে একই উটের পিঠে সাওয়ার ছিলাম। এমন সময় উটটি লাফালাফি করতে থাকলে আমি বলি, শয়তানের সর্বনাশ হোক! তখন নবী (সা.) বলেন, তুমি এরূপ বলো না যে শয়তানের সর্বনাশ হোক! কারণ তুমি যখন এরূপ বলবে, তখন শয়তান অহংকারে ঘরের মতো ফুলে যায়। আর বলে, আমি খুবই শক্তিমান।

বরং তুমি বিসমিল্লাহ বলো। যখন তুমি এ রকম বলবে, তখন শয়তান ছোট মাছির মতো (দুর্বল) হয়ে যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৮২)

তিন. নামাজের মধ্যে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য বামদিকে তিনবার থুতু নিক্ষেপের মতো ভাব করতে হয়। উসমান ইবনে আবুল আস (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, শয়তান আমার এবং আমার সালাত ও কিরাতের মধ্যে প্রতিবন্ধক হয়ে তা আমার জন্য এলোমেলো করে দেয়। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ওটা এক (ধরনের) শয়তান যার নাম খিনজিব।

যখন তুমি তার উপস্থিতি অনুভব করবে তখন (আউজুবিল্লাহ পড়ে) তার কবল থেকে আল্লাহর নামে আশ্রয় নিয়ে তিনবার তোমার বাম দিকে থুতু নিক্ষেপ করবে। তিনি বলেন, পরে আমি তা করলে আল্লাহ আমার থেকে সেটা দূর করে দিলেন। (মুসলিম, হাদিস : ৪০৮৩)

চার. জিকিরের মাধ্যমে শয়তান পরাজিত হয়। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শয়তান আদম সন্তানের কলবের বা অন্তরের ওপর জেঁকে বসে থাকে। যখন সে আল্লাহর জিকির করে তখন সরে যায় আর যখন গাফিল বা অমনোযোগী হয় তখন শয়তান তার দিলে ওয়াসওয়াসা দিতে থাকে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ২২৮১)

পাঁচ. আজানের দ্বারা শয়তান পালিয়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আজানের শব্দ না শোনে। যখন আজান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন নামাজের জন্য ইকামত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইকামত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ করো, ওটা স্মরণ করো, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে স্মরণ করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে সে কয় রাকাত নামাজ আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না। (বুখারি, হাদিস : ৫৮১)

ছয়. শয়তান থেকে নিরাপত্তা গ্রহণ। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির।’

এই দোয়া দিনে এক শবার পাঠ করে সে ১০ জন গোলাম আজাদ করার সাওয়াব পাবে, তার আমল নামায় এক শ নেকি লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তার থেকে এক শ গুনাহ মুছে দেওয়া হবে। আর তা ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান (তার কুমন্ত্রণা) থেকে তার জন্য রক্ষাকবচ হয়ে যায়। সেদিন সে যা করেছে তার চেয়ে উত্তম পুণ্য সম্পাদনকারী কেউ হবে না। কিন্তু কেউ তার বেশি আমল করলে তার কথা ভিন্ন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৯৮)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

fourteen − 1 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য