যারা এখনো সমকামীতা, সমতন্ত্র, নারী-অধিকারের নামে স্বেচ্ছাচারিতার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারেননি, যারা এখনো নীরব আছেন, যারা ভাবছেন, আমার ছেলেমেয়ে কখনো এ পথে পা বাড়াবে না, সেই সকল ঘুমন্ত বাবা-মায়ের জন্য এই পোস্ট।
ব্র্যাক কেন একটা ভয়াবহ জাহেলিয়াতের ব্র্যান্ড এম্বাসেডর, সেটা উপলব্ধি না করতে পারলে, আপনার আগামী প্রজন্মের পরিণতি কেমন হবে – একবার ভেবে দেখবেন।
আর যদি অন্তরে আখেরাতের ভয় থাকে, জাহান্নামের আগুনের ভয় থাকে, তাহলে এই বিষয়ে নীরবতা ভেঙ্গে, সরব মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াবেন।
মেয়েটির বয়স ছিল মাত্র আঠার বছর। খুবই মিষ্টি মায়াভরা অবয়বের একটা মেয়ে। সৌদি আরবের বিত্ত-বৈভবে যার জন্ম। রব্বুল আ’লামীন তার আরাম আয়েশের কোন কিছুই কমতি রাখেননি। দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানো ছাড়া আর কোন কাজই তার ছিল না। কর্মজীবি নারীদের মত তারতো কাজকর্ম করারও প্রয়োজন ছিল না।
লম্বা চুল কেটে ফেলার কারনে, মা-ভাই গায়ে হাত তুলেছিলেন। বাবার অপরাধ? বাবার অপরাধ, তিনি মায়ের শাসন মেনে নিয়েছিলেন। পরিবারের এই শাসনকেই তার কাছে মনে হয়েছিল পুরুষশাসিত সমাজের বর্বরোচিত আচরণ।
সুতরাং সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যেমন করেই হোক তাকে স্বাধীন হতে হবে। পুরুষশাসিত সৌদি আরবে আর না।
হায়রে স্বাধীনতা! শয়তান যখন কাউকে মন্দ কাজের ওয়াসওয়াসা দেয়, তখন সেই ওয়াসওয়াসাকে বাস্তবায়ন করার জন্য মানুষরূপী শয়তানেরও অভাব হয় না। থাইল্যান্ড পালিয়ে যায় সে। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের চেষ্টা করে।
মেয়েকে হারিয়ে অসহায় বাবা ছুটে আসেন মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে। বাবাকে নিয়ে টুইটারে অবজ্ঞা ভরা পোস্ট করতেও দ্বিধাবোধ করে না সে।
এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ধূর্ত শৃগালেরা। আমরা আছি, তোমার ভয় কী মেয়ে? মুরগীকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেয় তারা।
শুরু হয় বিশ্ব জুড়ে সৌদি বাসিং, মিডিয়া প্রপাগান্ডা। রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য এগিয়ে আসেন কানাডার মন্ত্রী মহোদয়া, আর ইউএনএইচসিআর। রাতারাতি একটা সাধারন মেয়েকে বানিয়ে দেওয়া হয়, নারী-স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক।
মিলে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়। মিডিয়াতে চলতে থাকে একের পর এক সাক্ষাতকার, আর বাহবা দেবার প্রতিযোগীতা। একের পর এক অবান্তর প্রশ্নে সাংবাদিকদের লক্ষ্য থাকে একটাই, সৌদি আরবকে একটা বর্বর দেশ হিসাবে প্রমান করার অপচেষ্টা।
কানাডা প্রবাসী আরেক সৌদি নারী-ব্লগার এই নাটকীয়তার প্রতিবাদ করেন। ভিডিও ব্লগে তিনি মেয়েটিকে বলেন, “শোন মেয়ে, সবেতো কানাডায় এলে, মন্ত্রীমহোদয়া নিজে বিমানবন্দরে গিয়েছেন, ফুলের তোড়া দিয়ে তোমাকে অভ্যর্থনা জানাতে। কিছুদিন পরেই টের পাবা, কত ধানে কত চাল।” মিডিয়া চড়াও হয়, সেই নারী ব্লগারের উপরে। তারপরেও তিনি নির্ভয়ে বলেন, “আমি ভয় পাই না, যা সত্য, তাই বলেছি।”
লাস্যময়ী অষ্টাদশী মেয়েটি পুরুষশাসিত সমাজ থেকে মুক্তি চেয়েছিল। যে সমাজে তাকে বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে নামতে হয়নি, আরাম আয়েশ করা ছাড়া যার আর অন্য কোন কাজ ছিল না, সেই সমাজকে তার কাছে পুরুষ-শাসিত বর্বর সমাজ মনে হয়েছিল।
নিকাব খুলে অর্ধনগ্ন শরীরে মেয়েটি পোষ্ট দেয়, “আমার জীবনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন, কালো চাদর পড়া ছেড়ে দিয়ে, পুরুষ নিয়ন্ত্রনমূক্ত স্বাধীন জীবন।”
নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! চারবছর পরে, ইউকিপিডিয়াতে তার পেশা লেখা আছে Fansonly – জীবন ধারনের নিমিত্তে দেহ প্রদর্শন করিয়ে অর্থ উপার্জন করাই তার পেশা।
ও হ্যাঁ, বইও লিখেছে একটা। জানিনে কে পড়ে সেই বই। নিজে লিখেছে বলে মনে হয় না। হয়তো গোস্ট রাইটার দিয়ে তার নামে লেখানো হয়েছে।
যেভাবেই হোক, মেয়েটা তাদের ফাঁদে পা দিয়েছে। সুযোগের কিছু সদ্ব্যবহারতো করতেই হবে।
পুরুষ শাসিত সমাজের দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল মেয়েটি। অথচ আজকে সে পুরুষদের দয়া দাক্ষিণ্যের পুতুল।
উল্কি আর সার্জারীর কারনে চেহারা কোমলতা হারিয়েছে বহু আগেই। একবার দেখলে দ্বিতীয়বার ফিরে তাকাবে না কোন সুস্থ মানুষ। রঙধনু সমকামী বন্ধুদেরকেও পাওয়া যায় না আগের মত। আজ এ-ডাল তো কাল ও-ডাল। একমাত্র ছেলে পায়নি জন্মদাতা পিতার স্বীকৃতি। এই হচ্ছে তার নারী-স্বাধীনতার প্রকৃত স্বরূপ।
মিডিয়াতে অহংকারবশত বড় বড় অর্জনের কথা বললেও, টুইটারে তার মানসিক অবস্থার প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি বুঝা যায়, যখন সে টুইট করে, “পার্টনাররা আমার মানসিক চাপ বুঝে না।”
এখনো কি অনুধাবন করবেন না, পশ্চিমারা আর তাদের দালালেরা আপনাদের ছেলেমেয়েদের কী বানাতে চায়? এখনও অনুধাবন না করলে, আর কবে?