যুগান্তর
দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া নানা সংস্কার, দেশ পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক সংকট নিরসনসহ নানা পদক্ষেপে সব ধরনের সহযোগিতায় পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। সহায়তা করবে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে। দেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র ২০০ মিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা চুক্তি সই করেছে। সফররত উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদল দ্বিতীয় দিন রোববার দিনভর নানা বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য নতুন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।
এদিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পুনর্গঠন, মৌলিক সংস্কার ও পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তারা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়ে তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আগামী নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র কিছু জানতে চায়নি বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। প্রতিনিধিদল এদিন বৈঠক করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে।
দেশ পুনর্গঠনে মার্কিন সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ পুনর্গঠন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন। রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সফররত উচ্চপর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ সহায়তা চান।
প্রথম আলো
‘এস আলমের গৃহকর্মীর ব্যাংক হিসাবে কোটি টাকা’-এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের একজন গৃহকর্মীর নামেই মিলেছে কোটি টাকা। এই গৃহকর্মীর নাম মর্জিনা আকতার। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত এই ব্যবসায়ীর বাসায় কাজ করতেন। মর্জিনা আকতারের নামেই ব্যাংকে এক কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের সন্ধান পেয়েছেন কর কর্মকর্তারা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অঞ্চল-১৫–এর একটি অনুসন্ধানী দল এস আলম পরিবারের কর ফাঁকির বিষয়টি তদন্ত করছে। সে তদন্ত চালাতে গিয়ে মর্জিনা আকতারের নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে এ অর্থ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে ইসলামী ব্যাংকের পাঁচলাইশের এসএফএ টাওয়ার শাখায় ২২টি স্থায়ী আমানতের মাধ্যমে এক কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন গৃহকর্মী মর্জিনা আকতার। এসব স্থায়ী আমানত খোলা হয়েছে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি। শুরুতে প্রতিটি এফডিআরে গড়ে সাড়ে চার লাখ টাকা করে রাখা হয়। এখন প্রতিটি এফডিআরের বিপরীতে সুদসহ ৪ লাখ ৭০ হাজার ৯০৩ টাকা জমা হয়েছে। সেই হিসাবে ইসলামী ব্যাংকে মর্জিনা আকতারের ২২টি এফডিআরে জমা আছে ১ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৬ টাকা।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রধান সংবাদ ‘সিআইডিতে তিনি ছিলেন অপকর্মের প্রধান’। খবরে বলা হচ্ছে, বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার তথ্য পাওয়া গেছে। সিআইডিতে অন্তত ছয়জনের একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলত তাঁর আইনবহির্ভূত কার্যক্রম। মামলা রুজু, অভিযান, তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে নিষ্পত্তি পর্যন্ত সবকিছুই রেখেছিলেন নিজের নিয়ন্ত্রণে। এসব কাজ চালাতে বিভিন্ন ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার ও ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের ক্ষমতা খর্ব করে রেখেছিলেন তিনি।
মোহাম্মদ আলী মিয়ার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধীন কোনো কর্মকর্তার ‘টুঁ’ শব্দ করার ক্ষমতা ছিল না। তবে তিনি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।
বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার ১৫তম ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর যোগ দেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার মোহাম্মদ আলী মিয়া। ২০২২ সালের আগস্টে তিনি সিআইডিপ্রধান হন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট মোহাম্মদ আলীকে সিআইডি থেকে সরিয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ আগস্ট তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।
নয়া দিগন্ত
‘লুটপাট আড়াল করতে দায়মুক্তি আইন’- এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কোনো প্রকল্পের চুক্তি করা হলে একদিকে যেমন ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হয়, অপরদিকে লুটপাটের সুযোগ কম থাকে। বরং থাকে দায়বদ্ধতা। কিন্তু শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোনো ন্যায্যতা ছিল না। উপরন্তু সরকার সমর্থিত কিছু ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিকে এ খাত থেকে লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। আর এ সব দুর্নীতি আড়াল করতে করা হয় দায়মুক্তি আইন।
এ আইনের আওতায় বিনা টেন্ডারে শতাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসেন্স পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব ঘনিষ্ঠ লোকদের দেয়া হয়। উচ্চ মূল্যের এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অর্ধেকই কোনো কাজে না আসলেও দেশ ও জনগণের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে ঋণের বোঝা। জনগণের পকেট থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বের করে নেয়া হয়েছে বিদ্যুতের বাড়তি মূল্য পরিশোধের জন্য। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দেশ বিদেশ থেকে ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা না থাকায় নতুন করে ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির (সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ) গবেষণা পরিচালন খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম এ বিষয়ে গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বিনা টেন্ডারে শতাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসন্সে দেয়া হয়েছিল দায়মুক্তি আইনের মাধ্যমে। এ আইন করা হয়েছিল, বিদ্যুৎ খাতে বিনা টেন্ডারে যেসব কেন্দ্রের অনুমতি দেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। এতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থিত কিছু মানুষ বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। এ আইনের আওতায় সরকার ও দেশের জনগণের বিপুল ক্ষতিসাধন হয়েছে। দেশ তথা জনগণের ঘাড়ে বাড়তি দেনা চেপেছে। নতুন ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ঋণের দুষ্ট চক্রে আটকে গেছে সরকার।
তিনি মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতের লুটপাট বন্ধে দায়মুক্তি আইন বাতিল করতে হবে। এ আইনের আওতায় যতগুলো চুক্তি হয়েছে তা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। যেসব ধারা দেশ ও জনগণের বিপেক্ষ রয়েছে সেগুলো বাতিল করতে হবে। আর এ আইনের আওতায় যেসব প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে সেগুলো আর নবায়ন করা যাবে না। তিনি বলেন, সামনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে যতগুলো চুক্তি হবে তা উম্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে করতে হবে, যাতে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে না পারে।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রথম পাতার খবর, ‘Stay in power as long as it takes for reforms’ অর্থাৎ ‘সংস্কারের জন্য যতক্ষণ লাগে ততক্ষণ ক্ষমতায় থাকুন’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দুই হাজার ৩৬৩ জনের ওপর করা জরিপে দেখা গেছে ৮১ শতাংশ চান সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার টিকে থাকুক।
ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ২২ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফোনে নেওয়া সাক্ষাৎকারে কমপক্ষে ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তার বেশি হওয়া উচিত। অন্যদিকে ৩৫ শতাংশ বলেছেন এটি এক বছর বা তার কম হওয়া উচিত।
আর মাত্র ১৩ শতাংশ বলেছেন যে সরকারের অবিলম্বে নির্বাচন করা উচিত এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
দেশ রূপান্তর
‘এখনো লাপাত্তা ১২০০ পুলিশ’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে নিজের মনমতো পুলিশ বাহিনীকে সাজিয়েছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে ওই আন্দোলনের সময় রাজধানীর বেশিরভাগ থানাসহ দেশের শত শত থানা ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর জীবন বাঁচাতে আত্মগোপনে চলে যান পুলিশের বেশিরভাগ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। গা-ঢাকা দেন অধস্তনরাও। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ সদস্যদের কাজে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। শুধু তাই নয়, নতুন করে সাজানো হচ্ছে পুরো পুলিশ বাহিনীকে।
পুলিশপ্রধান (আইজিপি) এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারসহ ইউনিটপ্রধানদের নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুনরা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো পুরোপুরি গতি আসেনি মাঠপর্যায়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা এই বাহিনীর সার্বিক কাজকর্মে।
আগের প্রশাসনের অতিরিক্ত আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত পদমর্যাদার অন্তত ১২০০ সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি। তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই হত্যাসহ নানা অপরাধের মামলা হয়েছে। যারা উপস্থিত হননি, তাদের তালিকা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশ কিছু কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের নির্দিষ্ট সময় পার হলে বরখাস্ত করা হবে। তা ছাড়া কর্মস্থলে না ফেরাদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তা বিদেশে পালিয়েছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।