বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
إِنَّ اللَّهَ يُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ أَن تَزُولَا وَلَئِن زَالَتَا إِنْ أَمْسَكَهُمَا مِنْ أَحَدٍ مِّن بَعْدِهِ إِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُورًا | ||
নিশ্চয় আল্লাহ আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন, যাতে টলে না যায়। যদি এগুলো টলে যায় তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলোকে স্থির রাখবে? তিনি সহনশীল, ক্ষমাশীল। |
(সুরা ফাতিরঃ আয়াত-৪১)
মানুষ নিরন্তর অনুসন্ধান করে কি তার জন্য কল্যাণকর, কি তাকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু, তার এই উদ্দেশ্য পুরন করতে হলে তাকে জানতে হবে, তার জন্য কি ক্ষতিকর? তার অবশ্যই জানা উচিৎ, কাকে তার প্রয়োজন, কার উপর তার ভরসা করতে হবে, কাকে তার ভালোবাসা উচিৎ, যাতে করে সে তার জন্য কল্যাণ অর্জন করতে পারে এবং সেই সাথে সে তার পছন্দের ব্যাপারে স্বস্তি লাভ করবে। আরো অবশ্যই তাকে যথাযথ এবং সুষ্ঠু পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে হবে, যা তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। আর তার জন্যই সেই মানুষটির নীচের জিনিস গুলো আয়ত্ব করতে হবেঃ
১। ক্ষতি সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা।
২। ক্ষতিকে দুরে রাখতে কি কি উপায় অবলম্বন করতে হবে।
নিশ্চিত ভাবে মানুষ তাঁর কাছে থেকেই সবচেয়ে ভালো দিক নির্দেশনা লাভ করবে, যিনি সকল কিছু সুনিপুন ভাবে গড়েছেন এবং যার নিজের সত্ত্বায় বা তাঁর গুণাবলীতে সামান্যতম ঘাটতি নেই। সেই সত্ত্বা, যিনি চিরঞ্জীব, কখনোই মৃত্যু বরন করবেননা। তার চেয়ে কখনোই কেউ ভালো হতে পারেনা। যিনি অভাব মুক্ত; যিনি সর্বাপেক্ষা ধনী; যিনি সর্বোচ্চ দাতা; সেই সত্ত্বা যিনি সর্বোপরি মানুষের আত্মাকে নিয়ন্ত্রণ করেন। মানুষ তাঁর নিকট নিতান্তই গরীব। তিনি আল্লাহ, পরম সত্য এবং একমাত্র উপাস্য। মানুষ যদি সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, তবে নিজেই তার জন্য ক্ষতি আনয়ন করে । আলাহই একমাত্র সত্ত্বা যে মানুষকে তার থেকে ক্ষতিকে দুরে সরিয়ে রাখতে পারে, তাঁর ইচ্ছা এবং ক্ষমতা ব্যাতিত এটি সংঘটিত হতে পারেনা।
আল্লাহ সুবহানুতাআ’লা মানুষের হেদায়াতের জন্য আসমানী কিতাব সমূহ ও রাসুলদের প্রেরণ করেছেন। যাতে করে তারা অবহিত হতে পারেঃ
১। তাদের রব সম্পর্কে, যেমন ভাবে তিনি নিজের ব্যাপারে বর্ণনা করেছেন।
২। তাঁর নির্দেশিত পন্থায় জীবন পরিচালনা করবে, এবং একমাত্র তাঁর কাছেই সাহায্য চাইবে।
আল্লাহর নাম সমূহ ও গুণাবলী সমূহ জানার মাধ্যমে সে কোনো সৃষ্টির উপাসনা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে, কারন সৃষ্টি নিতান্তই দুর্বল এবং সর্বদা স্রষ্টার মুখাপেক্ষী। আল্লাহ সম্পর্কিত জ্ঞান মানুষকে এটা জানতে সাহায্য করে যে, সে নিজে সৃষ্ট হয়েছে, আল্লাহ যা তার সর্বশেষ রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ওহী করেছেন, সে মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার জন্য। এই ওহীতে আছে পূর্ণাংগ জীবন বিধান। যা কিছু উপকারী বা ক্ষতিকর সব কিছুই এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে করে মানব জীবন এই ওহী বা প্রত্যাদেশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে পারে। যদি মানুষ জুলুম করে এবং জানে আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, সে তখন তাঁর দিকে এবং একমাত্র তঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেঃ
َاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ
জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ক্রটির জন্যে এবং মুমিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত।
(সুরা মুহাম্মদঃ আয়াত-১৯)
এটা চিন্তা করা ভুল যে, আল্লাহ তাঁর পাশাপাশি আরো উপাস্য সৃষ্টি করেছেন, যাতে করে মানুষ তিনি ছাড়া তাদের আছে সাহায্য চাইতে পারে; তাদেরকে ভালোবাসবে; তাদেরকে ভয় করবে ইত্যাদী। তিনি সকল জাতিরই এক উপাস্য। তিনি এই আদেশ দেন না যে, মানুষ তাঁকে ছাড়া নক্ষত্র, সুর্য, আগুন, ঈসা আলাইহিসসালাম, মুসা আলাইহিসসালাম ইত্যাদীকে তাঁর পাশা পাশি উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করবে। তিনি (সুবহানুতাআ’লা) ‘সংগতিবিহীন’ নন। তিনি ইসলামকে একমাত্র দ্বীন ( জীবন ব্যাবস্থা) হিসাবে মনোনীত করেছেন, যাতে করে করে মানুষ তাদের ইচ্ছাকে একমাত্র, শুধু একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছার কাছেই সমর্পন করে। তিনি সতর্ক করেছেন, যদি মানুষ ( যদি সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হয়) আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক স্থাপন করে, তাহলে তার সকল কর্ম বিনষ্ট হবে এবং সে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবেঃ
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন।
لِ اللَّهَ فَاعْبُدْ وَكُن مِّنْ الشَّاكِرِينَ
বরং আল্লাহরই এবাদত করুন এবং কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত থাকুন।
(সুরা যুমারঃ আয়াত-৬৬-৬৭)
আসুন আমরা জানি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি মানুষ- নবী, যিনি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী চিনতেন, তিনি বলতেনঃ
আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়রা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিছানায় না পেয়ে (অন্ধকারে) হাতড়াতে লাগলাম। হঠাৎ আমার হাত খানি তাঁর পায়ের তালুতে গিয়ে লাগল। তিনি সিজদারত আছেন, পা দু-খানি খাড়া রয়েছে। তিনি বলছিলেনঃ
اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
হে আল্লাহ! আমি তোমার অসন্তোষ থেকে তোমার সন্তোষের মাধ্যমে এবং তোমার আযাব হতে তোমার ক্ষমার মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এবং আমি তোমার (শাস্তি) হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার প্রশংসা করে শেষ করতে সক্ষম নই। তুমি তেমনই যেমন তুমি নিজে তোমার প্রশংসা করেছ।
( সহীহ মুসলিমঃ হাদীস নং-৯৭২)
হে আল্লাহ! আমি সমর্পন করলাম নিজেকে তোমার কাছে। আমি আমার চেহারাকে তোমার দিকে মুতাওয়াজ্জেহ করলাম। আমর সব বিষয়ে তোমাকে সোপর্দ করলাম তোমার প্রতি আগ্রহে ও তোমার ভয়ে। আমি তোমার প্রতি নির্ভর করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও মুক্তির পথ নেই। আমি ঈমান এনেছি তোমার কিতাবের প্রতি যা তুমি নাযিল করেছ এবং তোমার নাবীর উপর যাকে তুমি প্রেরণ করেছ।
সহীহ, আল কালিমুত তাইয়্যিব হাঃ ৪১/২৬, বুখারি ও মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৩৯৪ [আল মাদানী প্রকাশনী]
আমরা যখন কুরানে পড়িঃ
مَا يَفْتَحِ اللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَهُ مِن بَعْدِهِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ | ||
আল্লাহ মানুষের জন্য অনুগ্রহের মধ্য থেকে যা খুলে দেন, তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা বারণ করেন, তা কেউ প্রেরণ করতে পারে না তিনি ব্যতিত। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। |
(সুরা ফাতিরঃ আয়াত-২)
এবং আমরা যখন পড়িঃ
وَإِن يَمْسَسْكَ اللّهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ هُوَ وَإِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلاَ رَآدَّ لِفَضْلِهِ يُصَيبُ بِهِ مَن يَشَاء مِنْ عِبَادِهِ وَهُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ | ||
আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কোন কষ্ট আরোপ করেন তাহলে কেউ নেই তা খন্ডাবার মত তাঁকে ছাড়া। পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান করেন, তবে তার মেহেরবানীকে রহিত করার মতও কেউ নেই। তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ দান করতে চান স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত; তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু। |
(সুরা ইউনুসঃ আয়াত-১০৭)
ভালো ও মন্দ উভয় সময়ই একমাত্র আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনের জন্য আমাদের নিজেদের উৎসাহিত করা উচিৎ। এবং আমরা যখন পড়িঃ
إِن يَنصُرْكُمُ اللّهُ فَلاَ غَالِبَ لَكُمْ وَإِن يَخْذُلْكُمْ فَمَن ذَا الَّذِي يَنصُرُكُم مِّن بَعْدِهِ وَعَلَى اللّهِ فَلْيَتَوَكِّلِ الْمُؤْمِنُونَ
যদি আল্লাহ তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানগনের ভরসা করা উচিত।
(সুরা আলে ইমরানঃ আয়াত-১৬০)
সুতরাং, কুরান মানুষকে মিথ্যা প্রবঞ্চনার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করিয়ে প্রকৃত মুক্তির পথ নির্দেশ করে। এটি হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। এটি মুমিনকে কপটতা এবং সকল প্রকারের অসততার বিরূদ্ধে সাহায্য করে। উদাহরণ স্বরূপ মনে করুন, একজন মুমিন তার কর্মস্থলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সে অন্যায় এবং অবৈধ কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করছে। সে অন্যায় কে প্রত্যাখ্যান করতে ভয় পায়না। সে জানে যে, তার চাকুরী শুধু তার জীবিকা অর্জনের জন্য একটি মাধ্যম। সে হয়ত অন্যায়কে পরিবর্তন করতে পারেনা, কিন্তু সে ভালো মতই জানে যে, একমাত্র আল্লাহই তাঁর রিজিকের সংস্থান করেন। সে যদি আল্লাহর খাতিরে এই চাকুরীটি ছেড়ে দেয়, তাহলে আল্লাহ এর চেয়ে ভালো একটি চাকুরী দেবেন। আল্লাহ বলেনঃ
فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِّنكُمْ وَأَقِيمُوا الشَّهَادَةَ لِلَّهِ ذَلِكُمْ يُوعَظُ بِهِ مَن كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا |
অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায় ছেড়ে দেবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে দু’জন নির্ভরযোগ্য লোককে সাক্ষী রাখবে। তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাক্ষ্য দিবে। এতদ্দ্বারা যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাকে উপদেশ দেয়া হচ্ছে। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন।
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا |
এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।
(সুরা ত্বালাকঃ আয়াত ২-৩)
উপরোক্ত আয়াত গুলো এই তাগিদই দেয় যে, মানুষ অবশ্যই আল্লাহর উপর ভরসা করবে, এবং একমাত্র তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করবে। এর দাবী এও যে, মানুষ অবশ্যই আল্লাহকে ভালোবাসবে, তাঁর সন্তুষ্টি, তাঁর সাহায্য লাভের জন্য একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে। এটা কি সত্য নয় যে, যারা এই দুনিয়াকেই চুড়ান্ত লক্ষ্য ধার্য করে, তারা অবশেষে অনেক উপাস্যের ইবাদতে মশগুল হয়ে পরে? তারা সবাইকে তোয়াজ করতে অত্যন্ত সতর্ক থাকে। তারা নিজেদের নির্যাতন করেঃ বেদনা, কাঠিন্য, সার্বক্ষনিক দুশ্চিন্তা, তাদের “উন্নয়নের চাহিদা” মেটাতে হাত সর্বদা ব্যাঙ্ক থেকে ঋন উত্তোলনে ব্যাস্ত রাখা। তারা সর্বদা ভবিষ্যত নিয়ে ভীত থাকে, তার সর্বদা চোখের সামনে দারিদ্র দেখে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আলী ইবন খাশরাম (রহঃ) ……. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি নিজেকে ফারেগ করে নাও আমি তোমার হৃদয়কে অভাব মুক্ততা দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিব এবং তোমার অভাব বন্ধ করে দিব। আর তা যদি না কর তবে তোমার দু’ হাত আমি ব্যস্ততা দিয়ে ভরে দিব আর তোমার অভাব দূর করব না।
তিরমিজী, ইফা হাদিস নম্বরঃ ২৪৬৯ সহীহ, ইবনু মাজাহ ৪১০৭, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৪৬৬ [আল মাদানী প্রকাশনী]
এই পৃথিবীতে আমাদের টিকে থাকার উদ্দেশ্য দুনিয়াবী অর্জনের দাসত্ব করার চেয়ে অনেক বেশী অর্থময়। আমাদের স্রষ্টা আল্লাহ নির্দেশিত জীবনের চেয়ে অন্য কিনো কিছুই উত্তম হতে পারেনা। আল্লাহ নির্দেশিত পন্থায় করা যে কোনো কাজই হলো ইবাদত। মানুষই এর ফল ভোগ করে, আল্লাহর ইবাদতের কোনো প্রয়োজন নেইঃ
يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَنتُمُ الْفُقَرَاء إِلَى اللَّهِ وَاللَّهُ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর গলগ্রহ। আর আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
(সুরা ফাতিরঃ আয়াত-১৫)