সাতক্ষীরায় দিনদুপুরে ঘুমন্ত মায়ের পাশ থেকে নবজাতক চুরির ঘটনাটি ছিল স্রেফ সাজানো নাটক। জন্মদাতা বাবা ও গর্ভধারণী মা-ই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছিলেন ১৫ দিন বয়সী সোহানকে। হত্যার পর লাশ ফেলে রেখেছিলেন বাড়ির বাথরুমের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর।
হত্যার কারণ হিসেবে পুলিশের কাছে তারা জানিয়েছেন, শিশুটি জন্মের পর থেকেই হার্ট ও কিডনিতে সমস্যা ছিল। এ সন্তানকে বড় করতে গেলে নিজেরা মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়বেন বলে মনে করেছিলেন দরিদ্র মা-বাবা। তাই তারা শিশুটিকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা আটেন। ‘হারানোর’ ৩৬ ঘণ্টা পর শুক্রবার রাত ১টার দিকে বাড়ির বাথরুমের ট্যাংক থেকে শিশু সোহানের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় মায়ের পাশ থেকে নবজাতকটি চুরি হয়ে গেছে বলে প্রচার দেয় নবজাতকটির মা ফাতেমা বেগম। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা সোহাগ হোসেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে সদর থানা পুলিশ ও পিবিআই পৃথকভাবে চুরি হওয়া শিশুটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় শিশুটির বাবা সোহাগ হোসেনকে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, দরিদ্র পরিবার হাওয়ালখালি গ্রামের সোহাগ হোসেন ও ফাতেমা দম্পত্তি। তাদের ১৫ দিনের নবজাতক মায়ের পাশ থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে চুরি হয়ে গেছে বলে প্রচার করা হয়।
ওসি বলেন, নবজাতকের বাবা ও মায়ের স্বীকারোক্তি মতে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত শিশুটির বাবার চাপে মা শিশুটিকে হত্যা করেছে।
ওসি আসাদুজ্জামান আরও জানান, হত্যার কারণ হিসেবে তারা বলছেন- শিশুটি জন্মের পর থেকে অসুস্থ। হার্ট ও কিডনিতে সমস্যা ছিল। এই বাচ্চাকে রেখে বড় করতে গেলে নিজেরাই অসুবিধায় পড়বেন ভেবে পরিকল্পিতভাবে বাবা ও মা দুজন মিলে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।