শেরপুরে শ্রীবরদীতে আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় অমানবিক নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী সাদিয়া পারভীন ওরফে ফেলি (১০) মারা গেছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ ২৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সাদিয়া শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার গৃহকর্মী সাদিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রায় এক বছর আগে শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলো পৌরশহরের মুন্সীপাড়ার রিকশাচালক সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া পারভিন ফেলি। বিভিন্ন অজুহাতে পান থেকে চুন খসলেই গৃহকর্মী শিশুটিকে অকথ্য নির্যাতন করতেন শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর। গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে ৯৯৯-এ করা ফোন কল পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে নির্যাতিত শিশুটিকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত গৃহকত্রী ঝুমুরকে শহরের বিথি টাওয়ারের ছয় তলায় ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। সেসময় শিশু গৃহকর্মী সাদিয়ার আপাদমস্তক অমানবিক নির্যাতনের নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়। মাথা, পিঠ, হাতসহ শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন এবং পেট ফুলে পানি আসায় শিশু সাদিয়াকে উদ্ধারের পর পরই তাকে জেলা হাপসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু নির্যাতিত সাদিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবশেষে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় সে মারা যায়।
ওসি রুহুল আমিন তালুকদার জানান, শিশু সাদিয়া নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শ্রীবরদী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত গৃহকত্রী রুমানা জামান ঝুমুর (৩৫) বর্তমানে জেলা কারাগারে রয়েছেন।