Saturday, January 25, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমকুরআন ও হাদীসআসুন, আজ কুরআনুল কারীমের একটি আয়াত শিখি।

আসুন, আজ কুরআনুল কারীমের একটি আয়াত শিখি।

তাফসীর সূরা আল-লাহাবআয়াত নং (০৪)
وَّ امْرَاَتُهٗؕ حَمَّالَةَ الْحَطَبِۚ

“এবং (তার সাথে) তার স্ত্রীও, লাগানো ভাঙানো চোগলখুরী করে বেড়ানো যার কাজ”,

আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম ছিল হাড়োয়া আরওয়া বিনতে হারব। “উম্মে জামীল” ছিল তার ডাক নাম। সে ছিল আবু সুফিয়ানের বোন। সে রাসূল সঃ এর শত্রুতার ব্যাপারে তার স্বামী আবু লাহাবের চাইতে কোন অংশে কম ছিল না। 
আবুদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত; এ সূরাটি নাযিল হবার পর উম্মে জামীল যখন এটি শুনলো, সে ক্রোধে ক্ষিপ্ত হয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খোঁজে বের হলো। তার হাতের মুঠোয় পাথর ভরা ছিল, রসূলুল্লাহকে ﷺ গালাগালি করতে করতে নিজের রচিত কিছু কবিতা পড়ে চলছিল। এ অবস্থায় সে কা’বা ঘরে পৌঁছে গেলো। সেখানে রসূলুল্লাহ (সা.) হযরত আবু বকরের (রা.) সাথে বসেছিলেন। হযরত আবু বকর বললেন, হে আল্লাহর রসূল! দেখুন সে আসছে। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, সে আপনাকে দেখে কিছু অভদ্র আচরণ করবে। তিনি বললেন, সে আমাকে দেখতে পাবে না। বাস্তবে হলোও তাই। তাঁর উপস্থিতি সত্ত্বেও সে তাঁকে দেখতে পেলো না। সে আবু বকরকে (রা.) জিজ্ঞেস করলো, শুনলাম তোমার সাথী আমার নিন্দা করেছে। হযরত আবু বকর (রা.) জবাব দিলেনঃ এ ঘরের রবের কসম, তিনি তো তোমার কোন নিন্দা করেননি। একথা শুনে সে ফিরে গেলো”। হযরত আবু বকরের (রা.) এ জবাবের অর্থ ছিল, নিন্দা তো আল্লাহ‌ করেছেন রাসূল সঃ করেননি।

حَمَّالَةَ الْحَطَبِ “হাম্মালাতাল হাতাব”এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, “কাঠ বহনকারিনী।” মুফাসসিরগণ এর বহু বর্ণনা করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ইবনে যায়েদ, যাহহাক ও রাবী ইবনে আনাস বলেনঃ সে রাতের বেলা কাঁটা গাছের ডালপালা এনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরজায় ফেলে রাখতো। তাই তাকে কাঠ বহনকারিনী বলা হয়েছে। 
কাতাদাহ, ইকরামা, হাসান বসরী, মুজাহিদ ও সুফিয়ান সওরী বলেনঃ সে লোকদের মধ্যে ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করার জন্য চোগলখুরী করে বেড়াতো। তাই আরবী প্রবাদ অনুযায়ী তাকে কাঠ বহনকারিনী বলা হয়েছে। কারণ যারা এর কথা ওর কাছে বলে এবং লাগানো ভাঙানোর কাজ করে ফিতনা-ফাসাদের আগুন জ্বালাবার চেষ্টা করে আরবরা তাদেরকে কাঠ বহনকারিনী বলে থাকে। এ প্রবাদ অনুযায়ী “হাম্মালাতাল হাতাব” শব্দের সঠিক অনুবাদ হচ্ছে, “যে লাগানো ভাঙানোর কাজ করে।” সাঈদ ইবনে জুবাইর বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের পিঠে গোনাহের বোঝা বহন করে আরবী প্রবাদ অনুসারে তার সম্পর্কে বলা হয়, 
فٌلَانٌ يُحْطَتِبُ عَلَى ظَهْرِهِ  (অর্থাৎ অমুক ব্যক্তি নিজের পিঠে কাঠ বহন করছে)। কাজেই হাম্মালাতাল হাতাব (حَمَّالَةَ الْحَطَبِ)মানে হচ্ছে, “গোনাহের বোঝা বহনকারিনী।”
 মুফাসসিরগণ এর আরো একটি অর্থও বর্ণনা করেছেন। সেটি হচ্ছে, আখেরাতে তার এ অবস্থা হবে। অর্থাৎ সেখানে যে আগুনে আবু লাহাব পুড়তে থাকবে তাতে সে (উম্মে জামীল) কাঠ বহন করে এনে ফেলতে থাকবে।

শিক্ষা ও প্রায়োগিক ক্ষেত্র:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরোধিতা করার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। হোক সে নারী অথবা পুরুষ তাকে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হতে হবে। এছাড়া আবু লাহাবের স্ত্রী যেহেতু চুগলখোরি করে বেড়াতো, পরিণতি স্বরূপ তাকে জাহান্নামে যেতে হলো তাই প্রত্যেকটা নারী-পুরুষ সকলকে চোগলখুরী ও অন্যের দোষ খোঁজা খুঁজি থেকে বিরত থাকা উচিত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

17 + twelve =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য