মালয়েশিয়ায় জাল হালাল মাংস বিক্রয়কারী একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চক্রটি কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে বহুদিন ধরে এই অনিয়ম করে আসছে। তারা আমদানি করা সব ধরনের মাংস হালাল সনদপ্রাপ্ত মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছিল।
মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম নিউ স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি চক্র চীন, ইউক্রেন ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ জাল বা ভুয়া সনদযুক্ত কসাইখানা থেকে মাংস আমদানি করছিল। এরা বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে এই ব্যবসা করে আসছিল। এই আমদানির মধ্যে কয়েকটি চালানে ক্যাঙ্গারু ও ঘোড়ার মাংসও ছিল। পরে সেগুলো ভেজাল হিসেবে ব্যবহার করে হালাল গরুর মাংস বলে বিক্রি করা হতো। হালাল সনদ থাকা মানে ধরে নেওয়া পণ্যটি ইসলামি বিধান মেনে প্রস্তুত করা হয়েছে। মালয়েশিয়াসহ বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর যেখানে মালয়েশিয়ার ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ মুসলিম, সেই দেশে এমন কাণ্ড দেশব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
সারা বিশ্বেই হালাল পণ্যের ব্যবসা এখন উদীয়মান ব্যবসাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক হালাল পণ্যের বাজারের হাব হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে মালয়েশিয়া। বর্তমানে দেশটি চীন, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং আরো কয়েকটি দেশে হালাল-সনদপ্রাপ্ত প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য, প্রসাধনী এবং ফার্মাসিউটিক্যালসহ নানা পণ্য রফতানি করে। কিন্তু ঘটনা ভোক্তাদের আস্থা সঙ্কটে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে সংবাদ মাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনে জালিয়াত চক্রটির কোনো সদস্যের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। যদিও পুলিশ একজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে। চোরাচালান, মজুদ ও প্রক্রিয়াকরণ চেইনের প্রতিটি অংশ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনা তদন্তে একটি রয়্যাল কমিশন গঠনের বিষয়ও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে, কুয়ালালামপুরভিত্তিক ব্যবসায়ী ও হকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৬ হাজার সদস্যকে অস্থায়ীভাবে গরুর মাংসজাত পণ্য বিক্রয় স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ