নতুন ট্রেন্ড দেখছি ফেসবুক জুড়ে “কামাই থাকলে জামাই লাগে না”।
আই মিন সিরিয়াসলি ?!!!!
আমার জামাই নাই , তবুও এই ট্রেন্ড আমি একেবারেই সাপোর্ট করছি না। কাদের মাথায় আসে এসব ? অত্যন্ত নীচু মানসিকতার প্রকাশ হয়েছে এই কথাতে। মেয়েরা টাকা দেখে বিয়ে করে, এটাই কি এস্ট্যাবলিশ হয় না এই লাইনগুলোতে ?
হ্যা, আমি মানছি জামাইরা বহুত পেইন দেয়
, শ্বাশুড়ির বুড়ো ছেলে বাবুটাকে আমাদের সমাজে লালন পালন বৌদেরকেই করতে হয়, এরা টাওয়াল বিছানায় সোফাতে ফেলে রাখে, ওয়াশরুমে পানি ছড়িয়ে নোংরা করে, গন্ধআলা মোজা এদিক ওদিক ফেলে রাখে। কিন্তু তারপরও জামাইর মতো জামাই হলে অবশ্যই জামাই লাগে জীবনে।
এখন কথা হচ্ছে, জামাইর মতো জামাই আবার কি ? ইসলাম ধর্মে যে ধরনের জামাইর কথা বলা আছে, সে রকম দায়িত্ব সম্পন্ন, ভরন পোষণ দেয়া, নিরাপদ জীবন দেয়া, স্ত্রীকে যথাযথ মর্যাদা দেয়া যেভাবে কোরআন শরীফ বলা আছে ঠিক সেভাবে , ভালোবাসতে পারা জামাইকেই জামাইর মতো জামাই বলে।
যে সমাজে আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা সেখানে জামাই না থাকলে আমার সন্তান ক্যাম্নে আসত ? এই একটাই কারন আমার জন্য যথেষ্ট জামাই থাকার পেছনে। পরবর্তীতে আমার ব্যক্তিগত জীবনে কি সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তা ভিন্ন প্রসঙ্গ। সেটাও ধর্ম সমাজ বিধি মোতাবেকই হয়েছে।
আমার পক্ষে জামাই ছাড়া বাচ্চার জন্ম দেয়া কখনো সম্ভব হতো না। আমার upbringing তা হতে দিত না। আমি পারতাম না। সমাজকে বদলাতে হলে, সমাজের কুপোমন্ডকতা দূর করতে হলে সমাজের ভেতরে থেকেই তা করতে হবে। ভালো বিষয়গুলো গ্রহণ করতেই হবে। হুদাই, লাইম লাইটে আসার জন্য জরুরী না উল্টা পাল্টা কথা বলা। ওগুলো টিকবে না দিনশেষে।
কামাই আমার আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছে। একটা পরিবার তো বটেই, দুই তিনটা পরিবারকে ডাল ভাত খাইয়ে লালন পালন করার যোগ্যতা সৃষ্টিকর্তা আমাকে দিয়েছেন অল্প বয়সেই কিন্তু তার জন্য আমি কখনোই পরিবার প্রথার বিপক্ষে না। পরিবার প্রথা পৃথিবীর প্রাচীনতম এবং আমার মতে সবথেকে পজিটিভ প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকেই মূলতঃ মানুষ হবার জার্নির শুরু।
আর একটা কথা লিখতে চাই, নারীর একলা জীবন শুনতে যত রোমান্টিক আর এডভান্চারাস লাগে ঠিক ততটাই ভয়ংকর এই জীবনটা। এই জীবন সবার জন্য না। আপনি টেরও পাবেন না কখন চোরাবালিতে পা ফেলে দিবেন। কখন চারপাশ থেকে অদৃশ্য জালে আটকে যাবেন আপনি। যদি কখনো অনেক বড় আমি হতে পারি, সেদিন নিশ্চয়ই লিখব । এখন তো ছোট মানুষ কেউ পাত্তা দিবে না লিখলে
যত সহজ মনে করছেন আপনারা কামাই থাকলেই চলবে ততটাও সহজ না এই সমাজে টিকে থাকা একজন একা নারীর জন্য। আপনি ভাবতেও পারবেন না সমাজ কি কিভাবে খুবলে খাবে আপনাকে। আমি জানি। তাই বলছি। দশটা বছরের এক একটা দিন আমি মাথা উঁচু করেই বেঁচেছি ঠিকই । কিন্তু the journey wasn’t bed of roses .
নিজের কতটা দিলে, কতটা কঠিন হলে, কতটা সংযমী হলে, কতটা নির্লিপ্ত হলে, কতটা নিজেকে গুটিয়ে নিলে, কতটা পোশাকের দৈর্ঘ্য প্রস্হ বাড়ালে, কতটা বরফ মানবী হলে, কতটা হাসি হাসলে, কতটা না বলতে শিখলে (এইটুকু লেখার সময় এখনো চোখ থেকে পানি ঝরে আমার) আপনি নিজেকে এই সমাজে প্রমাণ করতে পারবেন কল্পনাও করতে পারবেন না। কাউকে পাশে পাবেন না নিজেকে ছাড়া , লিখে রাখুন। তাই যা স্বাভাবিক সেটাই গ্রহণ করুন। হ্যা তবে, যদি আপনি নিজেকে জানেন, নিজের উপরে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে, সৎ পরিশ্রমী আপনি হন, নিজের সাথে ঘটা অন্যায় মেনে নিতে না পারেন তাহলে অবশ্যই টক্সিক জীবন আঁকড়ে ধরে থাকবেন না। তা আপনি নারী পুরুষ যাই হন না কেন।
জীবন একটাই। সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার অবশ্যই সবার আছে।
#মিম্ মি
কামাই থাকলে জামাই লাগে না।
এই তত্ত্ব যত তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত হবে, তত তাড়াতাড়ি পুরুষ নির্যাতন বন্ধ হবে।
পুরুষ তার ইচ্ছে মত একাধিক প্রেমিকা, স্ত্রী সঙ্গী রাখতে পারবে।
ভোগ করতে পারবে কোরআনে বর্নিত বেহেশতে থাকা হুরের সাথে মিলিত হওয়ার মত সুখ।
থাকবেনা কোনো দেনমোহর দেওয়ার মত পেরেশানি।
থাকবেনা অন্য কোনো নারীর সাথে লুকোচুরি করে পরকীয়া করার মত ভয়।
থাকবেনা কোনো স্ত্রীর সাথে মনমালিন্য হয়ে জেল খাটার মত, জরিমানা দেওয়ার মত, নির্যাতিত হওয়ার মত আশংকা।