১৯ বছরের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে, ফেব্রুয়ারিতে কাতারের রাজধানীতে মার্কিন-তালেবান শান্তি চুক্তির একটি অংশ নিয়ে আলোচনা শুরু করা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই চুক্তির একটি শর্ত ছিল আন্তঃআফগান সমঝোতার পথকে উন্মুক্ত করা।
একটি তালেবান প্রতিনিধিদল কাতারে ফিরে এসে আফগান সরকারের সাথে শান্তি আলোচনা শুরু করার পথ প্রশস্ত করেছে, যেটি উপসাগরীয় রাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সেই লক্ষ্যেই শনিবার সকালে তালেবানের একটি প্রতিনিধি দল ফের দোহায় পৌঁছায়। এর আগেই প্রতিনিধি দলের একজন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন। গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। (আল জাজিরা)
যুদ্ধপরবর্তী আফগানিস্তান কেমন হবে তার রূপরেখা নির্ধারণে সমঝোতার জন্য বিবদমান পক্ষগুলোর উপর অব্যাহতভাবে চাপ তৈরি করছে ওয়াশিংটন।
গত সপ্তাহে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রেইন টেলিফোনে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে কথা বলেন। তালেবানকে আলোচনায় বসানোর জন্য আফগানিস্তানের প্রতিবেশি পাকিস্তানের উপরও চাপ দেয় মার্কিন কর্মকর্তারা।
আন্তঃ-আফগান আলোচনা
আফগান সরকার কর্তৃক আটক ছিল ৫ হাজার তালেবান এবং তালেবানদের হাতে ছিল ১ হাজার সরকারি বাহিনীর সদস্য। বন্দিবিনিময় নিয়ে অব্যাহত বিলম্ব, আন্ত:আফগান বৈঠকের প্রচেষ্টায় বড় বাঁধা ছিল।
তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান এবং ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রধান আলোচক মোল্লাহ আবুদল ঘানি বারাদার আগস্টে পাকিস্তান সফর করেন।
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয়ে সে সময় খুব কম তথ্যই প্রকাশ্যে আসে। ধারণা করা হচ্ছে বৈঠকে আন্ত:আফগান সম্মেলনের জন্য আবদুল ঘানির উপর চাপ দেয়া হয়।
তালেবানের নেতৃত্ব পরিষদের অনেকে পাকিস্তানে বসবাস করেন। এ প্রভাব কাজে লাগিয়ে তালেবানকে সমঝোতার পথে নিয়ে আসার জন্য ইসলামাবাদের উপর চাপ তৈরি করছিল ওয়াশিংটন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বারংবার বলে আসছেন যে, তিনি চান শান্তি আলোচনা শুরু হোক। সামরিক উপায়ে আফগান সংকটের সমাধান অসম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
দোহা সফরের আগে শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় বারাদারের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এবং দ্রুত আফগান শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য চাপ দেয়।
মার্কিন ও আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত সহিংসতা বন্ধ চান তারা। তবে তালেবান বলছে, আলোচনা শুরুর পর যুদ্ধবিরতিই হবে সংঘাত নিরসনের একমাত্র উপায়।
২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ থেকে বের হওয়ার জন্য ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছায় ওয়াশিংটন।
ইতোমধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। আফগান- তালেবান সমঝোতার উপর সেনা প্রত্যাহার নির্ভর করছে না বরং নির্ভর করছে তালেবান, আফগানিস্তানের মাটি মার্কিনীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে দেয় কি না তার উপর।