শিনজিয়াং প্রদেশের হাজার হাজার মাসজিদ একেবারে গুঁড়িয়ে বা ক্ষতিগ্রস্থ করে দিয়েছে চীন। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের (এএসপিআই) রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
মানাবধিকার সংস্থাগুলো বলছে, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়ানের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে অন্তত ১০ লাখ মানুষকে আটকে রেখেছে চীনা সরকার। যাদের অধিকাংশই উইঘুর মুসলমান এবং তুর্কিভাষী বাসিন্দা। তাদের জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার পাশাপাশি নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ধর্ম চর্চা ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও বলা হয়। এএসপিআই’র প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত ১৬ হাজার মাসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে চীন। স্যাটেলাইটে পাওয়া মাসজিদের ধ্বংসাবশেষের ছবি, তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানানো হয়।
সবচেয়ে বেশি মাসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে গেল তিন বছরে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ হাজার ৫০০ মাসজিদ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। উরুমকি এবং কাশগারে সবচেয়ে বেশি মাসজিদ ধ্বংস হয়।
যেসব মাসজিদ ধ্বংস করা হয়নি সেসব মাসজিদের মিনার ও গম্বুজ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে প্রদিবেদনে বলা হয়। জিনজিয়ানে অক্ষত এবং মিনার, গম্বুজ ছাড়া এমন মাসজিদের সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০০টির মতো।
১৯৬০ সালে দেশটিতে সংস্কৃতি বিপ্লব শুরু হয়। চলে কয়েক দশক। পরবর্তীতে জিনজিয়ানে যে পরিমাণ মাসজিদ ছিল বর্তমান সংখ্যা তার থেকে অনেক কম। জিনজিয়ানে খ্রিস্টনদের চার্চ এবং বৌদ্ধদের মন্দিরের বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এএসপিআই’র জানায়, মাজার, গোরস্থানসহ মুসলমানদের এক তৃতীয়াংশ পবিত্র স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি গেল বছর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানায়, জিনজিয়ানের বেশকিছু করবস্থান গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে চীন জোর দিয়ে বলেছে, জিনজিয়ানের বাসিন্দারা পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করছে। এএসপিআই’র গবেষণা সম্পর্কে শুক্রবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করা হয়। তারা জানান, ওই গবেষণার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। চীনবিরোধী প্রতিবেদেনে চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, জিনজিয়ানে ২৪ হাজার মাসজিদ রয়েছে। জিনজিয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের থেকে ১০ গুণ বেশি মাসজিদ রয়েছে।
নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গড়ে জনপ্রতি মুসলমানের জন্য চীনে যে পরিমাণ মাসজিদ রয়েছে তা কোনো কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও নেই।
বৃহস্পতিবার এএসপিআই জানায়, জিনজিয়ানে তারা ৩৮০ আটক কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে। আটক কেন্দ্রের সংখ্যা ধারাণার চেয়ে অনেক বেশি এবং সেগুলো দ্রুত প্রসারিত করা হচ্ছে বলেও দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।
যদিও চীন বলছে, আটক কেন্দ্র নয়, সেগুলো পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র। উগ্রবাদ মোকাবিলায় তাদের দেয়া প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও দাবি বেইজিংয়ের।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত