কোনো একজন ব্যক্তির অধীনে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের বিতর্কিত পদ্ধতি (কাফালা পদ্ধতি) বাতিল করার কথা ভাবছে সৌদি আরব। সে দেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানিয়েছে, ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই এই পদ্ধতি বাতিল করে নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের মধ্যে নতুন ধরনের চুক্তির কথা ভাবা হচ্ছে।
কাফালা পদ্ধতিতে একজন কফিল কিংবা নিয়োগকর্তা কোনো বিদেশি কর্মীকে স্পন্সর করলে সে কর্মী সৌদি আরবে যেতে পারেন এবং সেখানে যাওয়ার পর ওই নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে ওই কর্মীর কাজ পরিবর্তনসহ সার্বিক সব বিষয় নির্ভর করে নিয়োগকর্তার ওপর। প্রায় সাত দশক ধরে সৌদিতে চালু থাকা এই পদ্ধতির কারণে সেখানে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেন না। নিয়োগকর্তার ইচ্ছামতো চলতে হয়।
সৌদির মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে একটি নতুন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করতে চাচ্ছে যেখানে, নিয়োগকারী এবং প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে।
প্রথম থেকেই কাফালা পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। সৌদি কফিলরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আইনের মারপ্যাচে প্রবাসীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে থাকেন। এটি বাতিল হলে প্রবাসীরা তাদের কর্মজীবনে অনেকটা স্বাধীন হবেন এবং ইচ্ছামতো কাজ নির্বাচন করতে পারবেন।
২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই কাফালা বাতিলের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কাফালা পদ্ধতির অধীনে সৌদিতে বর্তমানে এক কোটির বেশি বিদেশি শ্রমিক কর্মরত আছেন। করোনা মহামারীর কারণে সৌদির তেল নির্ভর অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। ফলে তারা অর্থনীতিকে গতিশীল করতে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে অন্য সব ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়ার পরিকল্পনা করছে।
এবারের জি-২০ সম্মেলনের আয়োজক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। ওই সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের বেসরকারি খাতের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ করার চিন্তা করছে সৌদি আরব। দেশটি বিভিন্ন দেশের মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে চাইছে। সে কারণেই বিতর্কিত কাফালা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। রয়টার্স।