ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া এবং চুরির মতো অবৈধ আর্থিক প্রবাহে আফ্রিকা এক বছরে প্রায় ৮৯ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা উন্নয়ন সহায়তা তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থের থেকেও বেশি- জাতিসংঘের নতুন এক গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ।
সোমবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে (ইউএনসিটিএডি) ২৪৮ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনে শুমারিটি প্রকাশিত হয়। জাতিসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত আফ্রিকার জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যাপক শুমারি এটি। যা সময়ের সাথে ক্রমবর্ধমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং পূর্ববর্তী সকল শুমারির তুলনায় বেশি।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ৮৮.৬ বিলিয়ন ডলার মোট বার্ষিক পরিসংখ্যানের প্রায় অর্ধেকই স্বর্ণ, হীরা এবং প্ল্যাটিনামের মতো পণ্য রফতানির জন্য দায়ী। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫ সালে মোট স্বল্প চালিত রফতানির ৭৭ শতাংশই ছিল স্বর্ণের, যার মূল্য ৪০ বিলিয়ন ডলার।
ইউএনসিটিএডি বলে, কোনো পণ্যের সত্যিকারের মূল্য সংক্ষিপ্তকরণ, বিদেশে গোপন বাণিজ্য লাভে সহায়তা করে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিকে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত করে ও পাশাপাশি তাদের করের ভিত্তিকেও হ্রাস করে।
অর্থনীতিবিদদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এই প্রবণতাগুলোর কারণেই সহায়তা-নির্ভর মহাদেশটি প্রকৃতপক্ষে মূলধনের এক নিখর রফতানিকারী হয়ে উঠেছে। অর্থনীতিবিদদের অনুসরণ করে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আফ্রিকাকে “বিশ্বের কাছে প্রকৃত ঋণদাতা” বলা হয়েছে।
“অবৈধ আর্থিক প্রবাহ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার হ্রাসের পাশাপাশি আফ্রিকার মানুষের আশা-প্রত্যাশা ছিনিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও আফ্রিকার সংস্থাগুলির উপর আস্থাভাজনতা কমিয়ে দিচ্ছে।” -ইউএনসিটিএডি এর মহাসচিব মুখিসা কিতুয়ী বলেন।
ইউএনসিটিএডি’র আফ্রিকা বিভাগের নীতি ও গবেষণা প্রধান জুনিয়র ডেভিস, তথ্য সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, পরিসংখ্যানটি সম্ভবত সংক্ষিপ্ত করে কমিয়ে দেখানো হয়েছে।
জাতিসংঘ অবৈধ অর্থ প্রবাহ কে মোকাবেলা করার জন্য অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। ২০১৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় এটি নিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
২৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে, আফ্রিকার দেশগুলিকে প্রতিবেদনটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে আন্তর্জাতিক ফোরামে “নতুন যুক্তি” উপস্থাপন করার আহ্বানও জানানো হয়।