বেইজিংয়ের সরকারি টুইট অ্যাকাউন্ট থেকে এক আফগান শিশুর ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার সম্পর্কে চিড় ধরেছে। ওই ছবিতে অস্ট্রেলিয়ার এক সেনা সদস্যকে এক শিশুকে হত্যা করতে দেখা গেছে। এরপরই ছবিটিকে ভুয়া দাবি করে চীনকে ক্ষমা চাইতে বলেছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন এধরনের ঘৃণ্য ছবি টুইটারে শেয়ার করার জন্য চীনের গভীরভাবে লজ্জা বোধ করা উচিত। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই এ ঘটনাটি ঘটল।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক সরকারি প্রতিবেদনে জানা গেছে আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালনকালে অবৈধভাবে দেশটির ৩৯ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে অস্ট্রেলিয়ান সেনারা। আফগানিস্তানে সংঘটিত এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ১৯ জনের ব্যাপারে তদন্ত করতে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ বাহিনীর প্রতি সুপারিশ করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।বেআইনি হত্যাকাণ্ড চালানোয় জড়িত বিশেষ বাহিনীর ১৩ সদস্যকে চাকুরিচ্যুত করছে অস্ট্রেলিয়া।
সোমবার চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। এতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ান একজন সেনা রক্ত মাখা একটি ছুরি এক শিশুর গলার কাছে ধরে আছেন। পাশে দাঁড়ানো শিশুটির একটি ভেড়াকে ধরে আছে। অস্ট্রেলিয়র পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে এই ছবি বানোয়াট।
বিবিসি বলছে, অস্ট্রেলীয় সেনাদের বিরুদ্ধে দুজন ১৪ বছরের আফগান কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার যে অভিযোগ খবরে এসেছিল, মনে করা হচ্ছে সেই অভিযোগের কথা আরও তুলে ধরার জন্যই চীন এ ছবিটি পোস্ট করেছে।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন খবরে বলা হয়েছে, ওই ঘটনার কোনও প্রমাণ অস্ট্রেলিয়ার সরকারি তদন্তে পাওয়া যায়নি।
চীনা মুখপাত্রের পোস্টটি মুছে দিতে টুইটারকে অনুরোধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ছবিটিকে ভুয়া হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তারা।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ওই পোস্টটি সত্যিই অবমাননাকর, গভীর আক্রমণাত্মক এবং একেবারে আপত্তিজনক।
তিনি বলেন, এই পোস্টের জন্য চীনা সরকারের একেবারেই লজ্জিত হওয়া উচিত। দুনিয়ার চোখে তারা এর কারণে শেষ হয়ে গেছে। এটা একটা ভুয়া ছবি আর আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য ভয়ানক গ্লানিকর।
তিনি আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও উদার দেশের কাছ থেকে যা প্রত্যাশিত সেই অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া পদক্ষেপ নিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে তদন্ত করে দেখেছে।