‘আর নিউজ করবি কি না বল? এ কথা বলতে বলতে আমাকে সাত-আট ঘণ্টা মারধর করেছে। তোদের কোনো নিরাপত্তা নাই, তোরা কী করতে পারবি? কিন্তু কোন নিউজের কারণে আমাকে অপহরণ করা হয়েছে, তা বলতে পারছি না। আমাকে কোন জায়গায় আটকে রাখা হয়েছিল, তাও বুঝতে পারিনি। তবে যেখানে আটকে রেখেছিল, সেখান থেকে ট্রেনের শব্দ শোনা গেছে।’
বলছিলেন নির্যাতনের শিকার চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার। গত বুধবার রাতে নগরের বাসা থেকে বের হয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন তিনি। সাপ্তাহিক আজকের সূর্যোদয় চট্টগ্রাম অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক গোলাম সরওয়ারকে গত রবিবার সীতাকুণ্ড থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সরওয়ার গতকাল সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
সরওয়ার বলেন, ‘চন্দনাইশ উপজেলায় নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য বুধবার রাত ১২টার দিকে নগরীর ব্যাটারিগলির বাসা থেকে বের হই। বাস ধরতে শাহ আমানত সেতু এলাকায় যাওয়ার জন্য ১০০ টাকায় একটি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে উঠি। সেখানে আরেকজন লোক উঠে আমাকে অজ্ঞান করে নিয়ে যায়। মোটরসাইকেল থেকে আরেকটি অ্যাম্বুল্যান্স জাতীয় কোনো গাড়িতে করে আমাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। একটি বাসায় নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করা হয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে বাসায় আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল, সেখানে চারজন ছিল। তাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আর অন্যরা শুদ্ধ বাংলায় কথা বলছিল। আমাকে ধরে অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে শরীরে কাপড় জাতীয় কিছু একটা মুড়িয়ে কাঠের তক্তা ও বেল্ট দিয়ে মারধর করা হয়েছিল। চার দিনের মধ্যে দুই দিন তারা আমাকে মারধর করে।’
সরওয়ার আরো বলেন, “মারধরের সময় ওই ঘরে থাকা লোকজন বাইরের কারও সঙ্গে ‘স্যার’ সম্বোধন করে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। এ সময় বলে, ‘স্যার রাখব নাকি ফেলে দিব?’ অন্য প্রান্ত থেকে বলে, ফেলতে হবে না, তারে দিয়ে অন্যদের থ্রেট দেওয়া দরকার, সে ‘তেনাফাডা সাংবাদিক’ তাকে কেন মারবি? তারে আনা হয়েছে সে বেশি উড়ছে সে জন্য।”