ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পাটনার কৃষিশ্রমিক মহেশ যাদব (৫৫)। অন্যের জমিতে কাজ করে দিন চলত তাঁর। অনেক দিন ধরেই অসুখে ভুগছিলেন। পরিবারে কেউ ছিল না তাঁর। একাই থাকতেন। পাড়া–প্রতিবেশীরাই ছিলেন আপনজন। তাঁরাই দেখভাল করতেন। ৫ জানুয়ারি মারা যান মহেশ।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর এক প্রতিবেশী বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। যেহেতু তাঁর পরিবার বলতে কেউ নেই, তাই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচের জন্য প্রতিবেশীরা তাঁর ঘরের জিনিসপত্র বিক্রির কথা ভাবলেন। কিন্তু ঘরে বিক্রির মতো কিছুই পেলেন না তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁরা মহেশের একটি ব্যাংকের জমা বই খুঁজে পান। সেখানে দেখেন, ব্যাংকে মহেশের ১ লাখ ১৭ হাজার ১৯৪ রুপি জমা আছে।
স্থানীয় পুলিশ অমরেন্দ্র কুমার এএফপিকে বলেন, দুপুরের পর গ্রামবাসী মহেশের লাশসহ পাসবই নিয়ে ব্যাংকে হাজির হন। তাঁরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে মহেশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার খরচের জন্য তাঁর হিসাব থেকে অর্থ ছাড় করতে বলেন। যতক্ষণ না অর্থ দেওয়া হবে, ততক্ষণ তাঁরা সেখান থেকে যাবেন না বলে বসে থাকেন। এই ঘটনায় ব্যাংক চাপে পড়ে যায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ব্যাংক গ্রামবাসীর হাতে কিছু অর্থ তুলে দেয়।
কানারা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সঞ্জীব কুমার এএফপিকে বলেন, ‘অস্বাভাবিক এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম। এক ঘণ্টা পর আমি তাদের ১০ হাজার রুপির মতো দেই। এরপর তারা মরদেহ নিয়ে শ্মশানে চলে যায়।’
মহেশের প্রতিবেশী শকুন্তলা দেবী বলেন, মহেশের কোনো জমি ছিল না। এমনকি তিনি সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তাও নিতেন না। ‘মাসের পর মাস অসুস্থ পড়ে থাকলেও তাঁকে দেখার কেউ ছিল না। আমরা তাঁকে রান্না করা খাবারসহ এটা–সেটা দিয়ে সহায়তা করতাম।’