তাফসীর সূরা ” আল ইখলাস”
আয়াত নং ০২” الله الصمد”
“আল্লাহ কারোর ওপর নির্ভরশীল নন এবং সবাই তাঁর ওপর নির্ভরশীল।”
অর্থাৎ:যিনি সকলের সমস্ত প্রয়োজন পূরণ করার ক্ষমতা ও সামর্থ্য রাখেন, যার নিকট সকলে তার আস্তিত্ব, স্থায়িত্ব, প্রয়োজন এবং অভাব মোচনের জন্য শরণাপন্ন হয়, যিনি সবার চাহিদা পূর্ণ করেন। যিনি কারো মুখপেক্ষী নন, যাকে কিছুর জন্য কারো নিকট শরণাপন্ন হতে হয় না।
তিনি শুধু হও বললে হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা বলেন-
اِنَّمَاۤ اَمْرُهٗۤ اِذَاۤ اَرَادَ شَیْــٴًـا اَنْ یَّقُوْلَ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ
“তিনি যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন তাঁর কাজ হয় কেবল এতটুকু যে, তিনি তাকে হুকুম দেন, হয়ে যাও এবং তা হয়ে যায়”। ইয়া-সীন:৮২,
তাকে কোন ধরনের দুর্বলতা স্পর্শ করে না। তিনি চিরস্থায়ী, চিরঞ্জিব। আসমান এবং জমিনের সবকিছু তাঁরই। তাকে কোন ধরনের ক্লান্তি ও তন্দ্রা আচ্ছন্ন করে না। তিনি এসবের অমুখাপেক্ষী।
اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ ﳛ لَا تَاْخُذُهٗ سِنَةٌ وَّ لَا نَوْمٌؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الْاَرْضِؕ
“আল্লাহ এমন এক চিরঞ্জীব ও চিরন্তন সত্তা যিনি সমগ্র বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি ঘুমান না এবং তন্দ্রাও তাঁকে স্পর্শ করে না। পৃথিবী ও আকাশে যা কিছু আছে সবই তাঁর।” আল-বাক্বারাহ:২৫৫,
তিনি সকল ধরনের ভুলের উর্ধে। তিনি ভুল করেন না এবং ভুলে যাওয়া তার জাত বা সত্তার অংশ নয়।
قَالَ عِلْمُهَا عِنْدَ رَبِّیْ فِیْ كِتٰبٍۚ لَا یَضِلُّ رَبِّیْ وَ لَا یَنْسَى٘
সে (মূসা) বললো “সে জ্ঞান আমার রবের কাছে লিপিবদ্ধ অবস্থায় সংরক্ষিত আছে। আমার রব ভুলও করেন না, বিস্মৃতও হন না।” : ত্ব-হা:৫২,
আল্লাহ তা’আলা সকলকে আশ্রয়দান করেন।তার আশ্রয়ের প্রয়োজন হয়না।
قُلْ مَنْۢ بِیَدِهٖ مَلَكُوْتُ كُلِّ شَیْءٍ وَّ هُوَ یُجِیْرُ وَ لَا یُجَارُ عَلَیْهِ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ. سَیَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِؕ
বলো যদি তোমরা জেনে থাকো, কার কর্তৃত্ব চলছে প্রত্যেকটি জিনিসের ওপর? আর তিনিই যিনি আশ্রয় দেন এবং তাঁর মোকাবিলায় কেউ আশ্রয় দিতে পারে না।তারা নিশ্চয়ই বলবে, এ বিষয়টি তো আল্লাহরই জন্য নির্ধারিত। আল-মু’মিনূন:৮৯,৯০.
শিক্ষা ও প্রায়োগিক ক্ষেত্রঃ
আল্লাহ তা’আলা সকল মাখলুকের স্রষ্টা। তাই সকল সৃষ্টি তার মুখাপেক্ষী তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। এমনকি তিনি কোন সৃষ্টির এবাদতের ও মুখাপেক্ষী নন। সকলে তাদের নিজেদের জন্য আল্লাহর এবাদত করে। আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এজন্য আল্লাহ তা’আলা বলেন-
وَ مَنْ جَاهَدَ فَاِنَّمَا یُجَاهِدُ لِنَفْسِهٖؕ اِنَّ اللّٰهَ لَغَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ
যে ব্যক্তিই প্রচেষ্টা- সংগ্রাম করবে সে নিজের ভালোর জন্যই করবে। আল্লাহ অবশ্যই বিশ্ববাসীদের প্রতি মুখাপেক্ষিতাহীন। -আল-আনকাবুত:৬,