তাফসীর সূরা আল-লাহাবআয়াত নং ০২مَاۤ اَغْنٰى عَنْهُ مَالُهٗ وَ مَا كَسَبَؕ তার ধন-সম্পদ এবং যা কিছু সে উপার্জন করেছে তা তার কোন কাজে লাগেনি।
আবু লাহাব ছিল অত্যন্ত ধর্নাঢ্য ব্যক্তি। সে ছিল কুরাইশদের প্রথম সারির কয়েকজন গুণীদের ধনীদের মধ্যে একজন। তার অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘনের অন্যতম কারণ ছিল সম্পদের আধিক্যতা। আবু লাহাব ছিল হাড়কৃপণ ও অর্থলোলুপ।
তাই ( ما كسب ) তার ধন সম্পদ তার কোনো কাজে আসেনি দুনিয়া ও আখেরাতের বিবেচনায়।
কোন কোন তাফসীরকার مَا كَسَبَ শব্দটিকে উপার্জন অর্থে নিয়েছেন। অর্থাৎ নিজের অর্থ থেকে সে যে মুনাফা অর্জন করেছে তা তার উপার্জন। আবার অন্য কয়েকজন তাফসীরকার এর অর্থ নিয়েছেন সন্তান-সন্ততি। কারণ রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
أنتَ ومالُك لأبيك
“তুমি এবং তোমার সম্পদ তোমার পিতার”। (আবু দাউদ ও ইবনে আবী হাতেম)।
এ দু’টি অর্থই আবু লাহাবের পরিণতির সাথে সম্পর্কিত। কারণ সে মারাত্মক ফুসকুড়ি রোগে আক্রান্ত হলে তার সম্পদ তার কোন কাজে লাগেনি এবং তার সন্তানরাও তাকে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করার জন্য ফেলে রেখে দিয়েছিল। তার ছেলেরা তার লাশটি মর্যাদা সহকারে কাঁধে উঠাতেও চাইল না। এভাবে এ সূরায় আবু লাহাব সম্পর্কে যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তা সত্য হতে দেখলো।
শিক্ষা ও প্রায়োগিক ক্ষেত্র: ধন সম্পদ আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নিয়ামত। এই নে’য়ামত অর্জনের ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে বৈধ পন্থায় উপার্জন করা এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে ও আল্লাহ তায়ালার দিকনির্দেশনা কে অনুসরণ করা প্রত্যেকটা মু’মিনের কর্তব্য। সম্পদের কারণে অহংকার সীমালংঘন এবং উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কখনোই কাম্য নয়। আল্লাহর হক আদায় করে সম্পদ উপার্জন ও ব্যয় না করলে ধ্বংস অনিবার্য। আবু লাহাব ধ্বংস হয়েছে এবং কারণ কেউ একই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে।