বাংলাদেশের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি বিপজ্জনক বিবেচনায় নিয়ে এক বাংলাদেশিকে বসবাসের অনুমতি দিয়েছে ফ্রান্স। নিজ দেশে ফিরলে দূষণে তার মৃত্যু হতে পারে, এমন বিবেচনায় সম্প্রতি তাকে দেশটিতে থাকার অনুমতি দিয়েছেন একটি ফরাসি আদালত। এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির ইতিহাসে এ ধরনের অনুমতি দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
জানা গেছে, ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ২০১১ সালে বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন-এমন অভিযোগ তুলে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। সেখানে তুলু এলাকায় তিনি রাঁধুনী ও ওয়েটারের কাজ করেন।
২০১৭ সালে তার বসবাসের মেয়াদ শেষ হলে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আদেশ দেয় ফরাসি কর্তৃপক্ষ। সেসময় তার জন্য বাংলাদেশে ফিরে আসা নিরাপদ বলে জানিয়েছিলেন ফ্রান্সের একটি আদালত। এরপরপরই বাংলাদেশের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি এবং নিজের শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দেখান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি।
তার আইনজীবী দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তি গুরুতর অ্যাজমা সমস্যায় ভুগছেন। বাংলাদেশে ফিরলে দূষিত বায়ুর কারণে তার তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে।
তারা আরও দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তি যেসব ওষুধ খান, সেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এমনকি, তার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা এতটাই তীব্র যে, ঘুমানোর জন্য তার ভেন্টিলেশনের দরকার হয়।
এসব বিষয় বিবেচনা নিয়ে সম্প্রতি বোর্দোর আপিল আদালত ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আদেশ প্রত্যাহার করেছেন। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে ওই লোকের বাবা অ্যাজমার কারণে মারা গিয়েছিলেন, এটিও বিবেচনায় নিয়েছেন তারা।
ওই ব্যক্তির আইনজীবী লুদোভিচ রিভেরি বলেন, ‘আমার জানামতে, এ দেশে এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে পরিবেশগত বিষয় বিবেচনা নেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। আমি খুশি যে ফ্রান্স তাকে নিজ দেশে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে পাঠায়নি।‘
অবশ্য বাংলাদেশের বায়ু যে দূষিত, এটা মিথ্যা নয়। টেলিগ্রাফের তথ্যমতে, ২০১৯ সালে ধূলিকণা দূষণে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। আর রাজধানী ঢাকা বর্তমানে বিশ্বের ২১তম দূষিত শহর।
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সের হিসাবে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বায়ু দূষণের কারণে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন।