Saturday, January 25, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদাওয়াবিশ্বাস, বিজ্ঞান ও যুক্তিঃ নাস্তিকতার অপনোদন ও স্রষ্টার অস্তিত্বের যৌক্তিক প্রমাণ- শেষ...

বিশ্বাস, বিজ্ঞান ও যুক্তিঃ নাস্তিকতার অপনোদন ও স্রষ্টার অস্তিত্বের যৌক্তিক প্রমাণ- শেষ পর্ব

অলৌকিক গ্রন্থ আল-কুরান  যা অবিশ্বাসীদের জন্য চ্যালেঞ্জ স্বরূপঃ

আবদল্লাহ্ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরাযরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক নাবীকে তার যুগের চাহিদা মুতাবিক কিছু মুজিযা দান করা হয়েছে, যা দেখে লোকেরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছে। আমাকে যে মুজিযা দেয়া হয়েছে তা হচ্ছে, ওহী- যা আল্লাহ পাক আমার প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং আমি আশা করি, কিয়ামতের দিন তাদের অনুসারীদের তুলনায় আমার অনুসারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হবে।

( সহীহ বুখারী ইফাঃ হাদীস নং-৪৬১৬)

একটি বই! একটি মুজিযা? হ্যাঁ, আল-কুরান মানব জাতির প্রতি নাজিল কৃত আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বশেষ গ্রন্থ যা আল্লাহর রসুল মুহাম্মদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেয়া হয়েছে। যদিও আল্লাহ  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম কে অনেক মুজিযা দান করেছিলেন, যার বর্ণনা করতে গিয়ে ইমাম বায়হাকী দালালুন নাবিয়ীন নামে কয়েক খন্ডের বই লিখেছেন, আরো অনেকে অনেক বই লিখেছেন, উপরে মুজিযার মধ্যে কিছু বর্ণনা করা হয়েছে। তবুও রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দান কৃত মুজিযা হিসাবে শুধু মাত্র আল-কুরানুল কারীমের কথা-ই বলেছেন। তাঁর কারণ কি?  এর উত্তর খুজতে গেলে দেখতে পাই। রসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যান্য মুজিযার কাছে আল-কুরান এত বেশী উজ্জ্বল যে, অন্যান্য মুজিযার আভা ম্লান হয়ে যায়। অন্যান্য মুজিযা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য, নির্দিষ্ট মানব গোষ্ঠীর জন্য, আর আল- কুরান কিয়ামত পর্যন্ত সারা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য। এটা গত সাড়ে চৌদ্দশত বছর ধরে মানব ও জ্বীন জাতির অবিশ্বাসীদের  চ্যলেঞ্জ দিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে অনেক বড় বড় খন্ডে বই লিখিত হয়েছে, এই নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ নেই। আমরা শুধু মুখ্য কিছু বিষয় এখানে আলোচনা করব।  

আল-কুরান একটি বহুমাত্রিক অলৌকিক গ্রন্থ, বহুল আলোচিত অলৌকিকত্ব হলো নিম্নরূপঃ

১। সন্দেহহীন গ্রন্থ হিসাবে ঘোষনাঃ  এটি একটি নির্ভুল গ্রন্থ, যাতে কোনো সন্দেহ নেই, এর মধ্যে পরস্পর বিরোধী কোনো বর্ণনা নেই। কুরান ছাড়া পৃথিবীতে এমন কোনো গ্রন্থ নেই, যেখানে এই ধরনের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। আপনি বিশ্বাস করেন না? তাহলে ভুল প্রমান করুন। তবে অবশ্যই তা পারবেননা। আল্লাহ বলেনঃ 

   ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ

এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,

(সুরা বাকারাঃ আয়াত নং- ২)

لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ

এতে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।

(সুরা ফুসিলাতঃ আয়াত নং- ৪২)

২। মিথ্যা প্রমাণের উপায়ঃ  ভুল প্রমাণ করার উপায় খুঁজছেন? শুধু নির্ভুল ঘোষনা-ই নয়, এই গ্রন্থ পথ বাতলে দেয় যে তাকে কিভাবে ভুল প্রমাণ করতে হবে। এটি যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে না আসতো, তাহলে অনেক অসংগতি থাকত। আপনি তথাকথিত নাস্তিক হলে, বাতলে দেয়া পদ্ধতি প্রয়োগ করে বৈপরিত্য খুঁজে বের করুন,  আর যদি তা করতে না পারেন, তাহলে তাকে মেনে নিতে হবে, এটি সৃষ্টিকর্তার কাছে থেকে আগত গ্রন্থ। আল্লাহ বলেনঃ

أَفَلاَ يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِندِ غَيْرِ اللّهِ لَوَجَدُواْ فِيهِ اخْتِلاَفًا كَثِيرًا

এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত।

(সুরা নিসাঃ আয়াত নং- ৮২)

৩। অবিশ্বাসীদের প্রতি চ্যালেঞ্জঃ  অবিশ্বাসীরা যদি একে মানব রচিত গ্রন্থ মনে করে, আল্লাহ তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন যে, তারা যেন এই কুরানের নুন্যতম একটি সুরার মতো একটি সুরা রচনা করে আনে। আল-কুরানের সবচেয়ে ছোট সুরাটি ছোট তিনটি  বাক্যের সমন্বয়ে গঠিত। সাড়ে চৌদ্দশত বছর ধরে এই চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান, এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে আজো কেউ সফল হয়নি। আপনি অবিশ্বাসী বা তথাকথিত নাস্তিক হলে এই ছোট চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করে দেখুন না। আর হ্যাঁ আপনি সাহায্যকারী হিসাবে সমগ্র মানব জাতিকে আপনার সঙ্গী হিসাবে নিতে পারেন, অবশ্য, যারা আপনাকে সংগ দিতে রাজী হবে। আর তাতেও না পারলে  সমগ্র জ্বীন জাতিকে ডাকুন আপনার সাহায্যকারী হতে। আপনি কিয়ামত পর্যন্ত সময় নিতে পারেন এই অসাধ্য সাধন করতে।

আল কুরানুল কারীমে আল্লাহ ঘোষনা করেনঃ

وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَى عَبْدِنَا فَأْتُواْ بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُواْ شُهَدَاءكُم مِّن دُونِ اللّهِ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।

(সুরা নিসাঃ আয়াত নং- ৮২)

৪। ভাষা তাত্ত্বিক ও সাহিত্যিক অলৌকিকত্বঃ কুরান অবতরন কালে আরবরা ভাষা ও সাহিত্যের অলংকরণ ও পান্ডিত্যে ইতিহাসের চুড়ায় অবস্থান করছিলো, তখনকার আরবী ভাষা ও সাহিত্য অলংকরন ও বাগ্মীতায় এত উঁচু মানের ছিলো যে, আজো তা বিস্ময় হয়ে আছে। জাহেলিয়াতের কবি ইমরুল কায়েসের কবিতা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আরবী সাহিত্যের পাঠ্য। তখন আরবের ঘরে ঘরে কবি ও সাহিত্যে পুর্ণ ছিলো, তাদের মধ্যে কাব্য চর্চার প্রতিযোগীতা  চলত। ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে আরবদের তখন গর্বের অন্ত ছিলোনা। এমন সময় কুরান এলো মহা বিস্ময়কর গ্রন্থ হিসাবে। আরবী সাহিত্যে তখন গদ্য, পদ্য ও তাদের সমন্বয় এই তিন ধারা প্রচলিত ছিলো, কিন্তু কুরান এলো এই তিন ধারার বাইরে ভিন্ন ধারা হিসাবে, আজো পর্যন্ত যাকে অনুকরণের সাধ্য কারো হয়নি। এ যেন দুবাইএ ত্রিমাত্রিক টাওয়ার বুর্জ আলা খলিফার পাশে একটি চতুর্মাতৃক প্রাসাদ যা বুর্জ আল খলিফা সহ পৃথিবীর সকল স্থাপত্য কর্মকে ম্লান করে দিলো। বলা বাহুল্য,  চতুর্মাতৃক কোনো স্থাপনা কোনো মানুষের পক্ষে নির্মান সম্ভব নয়। বিশ্বাস না হয়, আরবী শিখে আরবী সাহিত্য ও কুরান অধ্যয়ন করুন, পার্থক্যটা সচক্ষেই দেখতে পাবেন। আর একটা কথা স্মরণ রাখবেন, এই কুরান এমন এক ব্যাক্তির মাধ্যমে মানবাজাতির কাছে এসে পৌছেছে, যিনি উম্মী নবী অর্থাৎ নিরক্ষর নবী হসেবে পরিচিত।

وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ

শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের,

إِنَّا جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

আমি একে করেছি কোরআন, আরবী ভাষায়, যাতে তোমরা বুঝ।

وَإِنَّهُ فِي أُمِّ الْكِتَابِ لَدَيْنَا لَعَلِيٌّ حَكِيمٌ

নিশ্চয় এ কোরআন আমার কাছে সমুন্নত অটল রয়েছে লওহে মাহফুযে।

(সুরা যুখরুফঃ আয়াত নং- ২-৪)

৫। বিজ্ঞান ভিত্তিক অলৌকিকত্বঃ  আপনি যদি তথাকথিত বিজ্ঞান মনস্ক নাস্তিক হিসাবে নিজেকে  দাবী করেন, তবে হয়ত বিজ্ঞান কে আপনি আপনার ধর্ম  হিসাবে নিয়েছেন। আর তাহলেতো বিগব্যাং বা বৃহৎ বিস্ফোরণ তত্ত্ব  আপনার অন্যতম আক্বীদা, কিংবা আপনি বহু মহাবিশ্ব তত্ত্বের কথা চিন্তা করছেন। কুরান কোনো বিজ্ঞানের টেক্সট বুক নয় যে, আপনার কাংখিত তত্ত্বের বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে। তবে কুরান অনেক চিহ্ন দিয়েছে,  যেখান থেকে অনেক বৈজ্ঞানিক সত্যের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সেখানে আপনার বৃহৎ বিস্ফোরণ তত্ত্বের ইঙ্গিতও রয়েছে, কিংবা বহু মহাবিশ্ব তত্ত্বেরও। ১৯২৬ সালে এডুইন হাবল দুরবর্তী নক্ষত্রের রেড শিফট পর্যবেক্ষণের আগ পর্যন্ত আপনি বিশ্বাস করতেন মহাবিশ্ব স্থিতাবস্তায় আছে। কিন্তু এই মহাবিশ্বের উপাদান গুলো  একসময় একত্রে ছিলো এবং এর স্রষ্টা একে সম্প্রসারণ করছেন তা ১৪৫০ বছর আগেই এই গ্রন্থে আল্লাহ জানিয়েছেন। আপনি বহু মহাবিশ্বের কথা বলছেন? আল্লাহ  এই গ্রন্থে সাত আসমানের কথা কথা জানিয়েছেন, তিনি নিকটতম আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সুসজ্জিত করেছেন। আর তাই তারকা ও ছায়ায়াপথ পুর্ণ যে মহাবিশ্বকে আমরা দেখি বা যার অস্তিত্বের সীমা আমরা এখনো বের করতে পারিনি সেটা হলো প্রথম আসমান। এটি ছাড়াও আরো ছয়টি আসমান রয়েছে। তাছাড়াও আছে জান্নাত, তার উপর আছে আল্লাহর কুরসি আর তার উপর আছে আল্লাহর আরশ।  আপনার বিজ্ঞান সেখানে আদৌ কি কখনো পৌছতে পারবে?  

আল্লাহ বলেনঃ

وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ [٥١:٤٧]

আর মহাকাশমন্ডল — আমরা তা নির্মাণ করেছি হাতে, আর আমরাই একে সম্প্রসারন করছি।  

(সুরা আদ্দারিয়াতঃ আয়াত নং- ৪৭)

الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَّا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِن تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِن فُطُورٍ

তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি?

(সুরা আল-মূলক আয়াত নং- ৩)

আল কুরানুল কারীমে বিজ্ঞান ভিত্তিক আয়াত আছে প্রায় হাজারেরও এরও বেশী। এর মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়েই আছে অনেক।

এ ছাড়াও কুরানে ভ্রুন তত্ত্বের ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে, যা মানুষ কয়েক বছর  আগেও জানতোনা। কুরানে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে টরেন্টো বিশ্ব বিদ্যালয়ের এনাটমীর অধ্যাপক ডঃ কিথ মুর তার প্রণীত ডেভলপিং হিউম্যান বই এর কুরানিক এডিশন বের করেছেন। কুরানে প্রাপ্ত তথ্যের উপর তিনি মন্তব্য করেছেন, এটি আল্লাহ থেকে প্রাপ্ত ওহী ব্যাতিত কিছুই নয়।

আল্লাহ বলেনঃ

خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ

সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জোঁকের মত জমাট রক্ত থেকে।

(সুরা আলাকঃ আয়াত নং- ২)

ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظَامًا فَكَسَوْنَا الْعِظَامَ لَحْمًا ثُمَّ أَنشَأْنَاهُ خَلْقًا آخَرَ فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ

এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে  জোঁকের মত জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই মাংসপিন্ড থেকে অস্থি সৃষ্টি করেছি, অতঃপর অস্থিকে মাংস দ্বারা আবৃত করেছি, অবশেষে তাকে নতুন রূপে দাঁড় করিয়েছি। নিপুণতম সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কত কল্যাণময়।

(সুরা মুমিনুনঃ আয়াত নং-১৪)

কুরানে ভুতত্ব বিদ্যার আধুনিক তথ্য রয়েছে। 

কুরানে সমুদ্র বিদ্যার আধুনিক তথ্য রয়েছে।

কুরানে আবহাওয়া বিদ্যার আধুনিক তথ্য রয়েছে।

কুরানে মানব দেহের সুক্ষাতিসুক্ষ তথ্য রয়েছে, যা আধুনিক যুগের আগে কেউ জানতনা

কুরানে পদার্থ বিদ্যার তথ্য রয়েছে।

কুরানে জীব বিদ্যার তথ্য রয়েছে

এরকম আরো অনেক বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য রয়েছে।  আগ্রহো পাঠকগণ এই ব্যাপারে নিম্ন লিখিত পুস্তক গুলো অধ্যয়ন করতে পারেনঃ

১। Scientific indication in the Holy Quran- Islamic Foundation

২। আল কুরান দ্যা চ্যলেঞ্জ মহাকাশ পর্ব -১ ও ২- কাজী জাহান মিয়া

৩। বাইবেল, কুরান ও বিজ্ঞান- ডঃ মরিস বুকাইলি

৪। মানুষের আদি উৎস্য- ডঃ মরিস বুকাইলি

৫। Quran and Modern Science Compatible or Incompatible- Dr. Zakir Naik

৬। Amazing Quran- Dr. Gary Miller.

৭। Is the Quran God’s word?- Dr. Zakir Naik

এবং আরো অনেক গ্রন্থ। 

৫। ইতিহাস ভিত্তিক অলৌকিকত্বঃ  আল-কুরানে ইতিহাসের এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা ১৫০ বছর পুর্বের কোনো নিরক্ষর ব্যাক্তির পক্ষে  জানা সম্ভব নয়। যেমনঃ আল্লাহ ফেরাউনের মৃতদেহ সংরক্ষণ করবেন, কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত ফেরাউনের মৃতদেহ মানব চক্ষুর অন্তরালে লুকায়িত ছিলো।

ইউসুফ আলাইহিসসালাম এর সময় মিশরের শাসন কর্তাকে রাজা বলা হয়েছে, কিন্তু আধুনিক প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষনার আগে পর্যন্ত ইতিহাসবিদ রা মিশরের সকল শাসককে ফেরাউন বলা হতো, বাইবেলও এই ভুলের উর্দ্ধে নয়। কিন্তু কুরান এর সত্যতা আধুনিক গবেষনা দ্বারা স্বীকৃত।

৬। ভবিষ্যদবাণীর অলৌকিকত্বঃ  কুরানে এমন অনেক ভবিষ্যদবানী করা হয়েছে, যা সত্য প্রমাণীত হয়েছে, আর ভবিষ্যিতে আরো সত্য প্রমাণিত হবে বলে বিশ্বাসীরা বিশ্বাস করে। 

কুরানের উপরোক্ত বৈজ্ঞানিক অলৌকিকত্ব জানার পরেও আর কোনো তথাকথিত নাস্তিকের কোনো উপায় নেই যে সত্যকে প্রত্যখ্যান করে। আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করবে, তাদের ব্যাপারে আল-কুরানের বক্তব্য হলোঃ

صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لاَ يَرْجِعُونَ

তারা বধির, মূক ও অন্ধ। সুতরাং তারা ফিরে আসবে না।

(সুরা বাকারাঃ  আয়াত নং-১৪)

৭। হৃদয়ে কুরানের সংরক্ষণঃ  আপনি হয়ত প্রবল প্রতাপান্বিত  ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি, নিজেকে পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের শাসক হিসাবে ঘোষনা দিয়েছেন এবং যথারীতি ইসলামকে আপনার প্রধানতম শত্রু হিসাবে নিয়েছেন। আপনি অন্যান্য অনেকের মত মনে করেন ইসলাম ( তথাকথিত) সন্ত্রাসের ধর্ম আর সকল সন্ত্রাসীই মুসলমান। আপনি মনে করেন, মুসলমান দের ধর্মগ্রন্থ আল- কুরান সন্ত্রাসের উৎস্য, আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন পৃথিবীর বুকে থাকা আল-কুরানের সকল কপি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে দেবেন এবং কুরান ছাপানো নিষিদ্ধ করবেন। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম আপনি কুরানের সকল কপি পোড়াতে হয়ত পারবেন, কিন্তু কুরানকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করতে পারবেননা। কারন এই কুরান মুখস্থ করে রেখেছে কোটি কোটি মুসলমান, না একটি দুইটি পৃষ্ঠা নয়, প্রথম পৃষ্ঠা থকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি অক্ষর। এদের মধ্যে ৫/৭ বছরের শিশুও আছে, আছে অন্ধ ব্যাক্তি যার কখনো কুরান দেখে পড়ার কখনোই সৌভাগ্য হয়নি, শুধু শুনেই হৃদয়ে ধারন করেছে। এদের অধিকাংশই আবার আরবী ভাষা জানেনা, কিন্তু কুরানের ভাষা আরবী। এরাই আবার কুরান লিখবে, লিখিত কুরান আবার ফিরিয়ে আনবে। আছে কি আর এমন কোনো গ্রন্থ যা এভাবে কেউ মুখস্থ করতে পেরেছে?

আপনার আগে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নেও কুরানকে নিষিদ্ধ করে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কুরানের সংস্পর্শে না গিয়েও সেখানকার মুসলমান সন্তানেরা কুরান মুখস্থ করেছে। এটাতো নিকট অতীতের কথা এখনো সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ গুলোতে গেলে, হয়ত তাদের অনেকের দেখা পাবেন। কুরান অবিকৃত রয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এখন শুধুই ইতিহাস।  

কুরানের অলৌকিকত্বের কারনেই এমন সম্ভব হয়েছে। কুরান সংরক্ষনের ব্যাপারে মুসলমানেরা কখনোই চিন্তিত নয়, কারন এর সংরক্ষনের দায়িত্ব আল্লাহ নিজের দায়িত্বে নিয়েছেন। আপনার পক্ষে যদি সম্ভব হয়, আল্লাহকে অপারগ করার করুন। কিন্তু আপনি কখনোই তা পারবেন না। ফেরাউনের মতো আপনিও ইতিহাস হবেন, আর তাই সত্যকে গ্রহণ করুন।  আল্লাহ বলেনঃ

إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ

আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।

(সুরা হিজরঃ  আয়াত নং-৯)

উপসংহারঃ 

যারা আল্লাহর অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস করেনা বলে দাবী করে, তাদের বলব, আপনি আপনার নিজের শরীরের অভ্যন্তরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন। আপনার শরীরের কোষ গুলো এক একটি শক্তি তৈরীর কারখানা, এরা কি আপনার কথায় পরিচালিত হয়? আপনার শরীরে রক্তের শ্বেত কণিকা যেভাবে প্রতিরক্ষা বূহ্য তৈরী করে, তাদের কমান্ডার কি আপনি? আপনার হৃদপিন্ড কি আপনার কথা শুনে? একবার হুকুম করে দেখুন না। আপনার শরীরের অভ্যন্তরে আপনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে বিশাল কর্ম যজ্ঞ চলছে, তার ব্যাপারে আপনি ওয়াকিবহাল নন। আপনি নিজের মগজকে কখনো দেখেননি, তার পরেও আপনি নিজেকে বুদ্ধিমান দাবী করেন। এটা কি অপরের প্রাপ্ত ধনে নিজেকে ধনী দাবী করা নয়?

তারপরেও যদি স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন জাগে, প্রশ্ন করুন আপনি অস্তিত্বশীল তো? নিজের গায়ে চিমটি কাটুন। যদি নিশ্চিত হন আপনার অস্তিত্ব আছে। তাহলে জেনে রাখুন আপনার স্রষ্টারও অস্তিত্ব আছে, যেমন অস্তিত্ব আছে সেই ব্যাক্তিটির যিনি আপনার গায়ে বর্তমানে পরিহিত পোশাকটি তৈরী করেছিলেন। অস্তিত্ব আছে সেই ব্যাক্তির যিনি এই লেখাটি লিখেছেন। 

সত্যকে জানুন, সত্যকে মানুন, অসার মিথ্যাকে বর্জন করুন। 

কুরানের যে আয়াত দিয়ে নিবন্ধটি শুরু হয়েছিলো, সেই আয়াতটিই আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।

كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتاً فَأَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ। অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন, আবার মৃত্যু দান করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন। অতঃপর তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে।

(সুরা বাকারাঃ আয়াত নং ২৮)

================================================================================================

ফ্রীমেসন সম্পর্কে জানতে নীচের লিংকে ক্লিক করুনঃ

তথ্যসুত্রঃ

১। আল কুরানুল কারীম ও বঙ্গানুবাদ।

২। সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

৩। A rational Approach to affirm the existence of God- By Mohammad A. Al-Abdulhay

৪। Oxford Advanced Learners Dictionary

৫। Merrium Webstar Dictionary

৬। উইকিপিডিয়া

৭। UWP English- Bangla Dictionary

৮। English & Bengali online Dictionary & Grammar

৯। Cambridge Dictionary

১০। হোমোসেপিয়েন্স-Reteling our story- লেখকঃ ডাঃ রাফান আহমেদ

১১। জুবাইর আল মাহমুদের ব্লগ

১২। আল্লাহ কি সত্যিই আছেন?- মেরিনার ( Somewhere in Blog)

১৩। Does God exist? – Youtube lecture by Abdur Rahim Green.

১৪। ‘Dawah is Easy’ Youtube Channel

১৫। NDTV অন লাইন ভার্সন ১২ই মে, ২০১১

১৬। Agnosticism — Britannica Online Encyclopedia

১৭। Atheism_ A Step On The Long Journey

১৮। The International Journal for the Psychology of Religion_ Vol 24, No 2

১৯। Experimenting with Spirituality_ Analyzing The God Gene in a Nonmajors Laboratory Course

২০। God gene – Wikipedia

২১। History of atheism – Wikipedia

২২। Ibn Tufayl on Learning and Spirituality without Prophets and Scriptures _ Institute for Advanced Study

২৩। The Age of Enlightenment and Freemasonry

২৪। The six types of nonbelief_ a qualitative and quantitative study of type and narrative_ Mental Health, Religion & Culture_ Vol 17, No 10

২৫। The six types of atheist _ Andrew Brown _ Opinion _ The Guardian

২৬। VMAT2 Gene Molecular study of 2,000 peoples in the Religious Behavior and Belief in God of the citizens of the city of Tabriz in IRAN

২৭। জৈন ধর্ম – উইকিপিডিয়া

২৮। Dawah to Buddhhists- By Dr. Zakir Naik

২৯। Prophet Muhammad  (pbuh) in Buddhist Scriptures

৩০। তাফসীরুল কুরান বিল কুরান – শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩১। Amazing Quran – By Dr. Gary Miller

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

one × one =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য