Friday, December 6, 2024
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরমাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে ৯ লাখ পরিবারের

মাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে ৯ লাখ পরিবারের

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার। * প্রতিটি বাড়িতে থাকবে দুটি বেড রুম, কিচেন রুম, টয়লেট ও বারান্দা * এসব ঘর হবে টেকসই, থাকবে সৌরবিদ্যুৎ, বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে বসতঘর ও মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে দেশের ৯ লাখ পরিবার। আগামীকাল শনিবার প্রথম ধাপে ৬৯ হাজার ৯০৪ ভূমিহীন পরিবার এসব ঘর পাচ্ছে। এরমধ্যে ৬৬ হাজার ১৮৯ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাসজমির মালিকানা দিয়ে বিনামূল্যে দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২১ জেলার ৩৬ উপজেলার ৪৪ গ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ হচ্ছে। এতে ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব বসতঘর সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। আসছে ফেব্রুয়ারিতেই আরো ১ লাখ পরিবারকে এসব ঘর বরাদ্দ করা হবে। আর চলতি বছরই আরো ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭১৮ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে স্বপ্নের নীড়সহ ২ শতাংশ জমির মালিকানা দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা গড়ে দেওয়া হবে সরকারিভাবে। এ নিয়ে সারা দেশে ভূমি ও গৃহহীন মোট ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২ পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। ‘মুজিববর্ষে’ এটিই হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার। —— ২০২০ সালের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। তার এই ঘোষণা সামনে রেখেই মুজিববর্ষে প্রতিটি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারই পাচ্ছে দুর্যোগ সহনীয় সেমিপাকা ঘর আর ২ শতাংশ জমির মালিকানা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সুদৃশ্য রঙিন টিনশেডের সেমিপাকা বাড়ি পাবেন গৃহহীন ও ভূমিহীনরা। জানা গেছে, ৫০০ বর্গফুটের প্রতিটি বাড়িতে থাকবে দুটি বেড রুম, একটি কিচেন রুম, একটি ইউটিলিটি রুম, একটা টয়লেট ও একটি বারান্দা। দুর্যোগ সহনীয় এসব ঘর হবে টেকসই এবং প্রতিটি ঘরেই থাকবে সোলার সিস্টেম আর বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা। প্রতিটি সেমিপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই নকশায় হচ্ছে। মুজিববর্ষের সময়কাল ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই এসব ঘর নির্মাণকাজ শেষ করতে চায় সরকার। এরই মধ্যে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। ‘আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগান সামনে রেখে মুজিবশতবর্ষে দেশেই নির্মিত হচ্ছে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য এই ‘স্বপ্নের নীড়’। সরকারের হিসাবমতে, সারা দেশে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৯৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ হাজার ৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৯৭, রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৪, রাজশাহী বিভাগে ৯৬ হাজার ৫০৪, খুলনা বিভাগে ১ লাখ ৪২ হাজার ৪১১, বরিশাল বিভাগে ৮০ হাজার ৫৮৪ এবং সিলেট বিভাগে ৫৫ হাজার ৬২২টি গৃহহীন পরিবার রয়েছে। এরমধ্যে জমি ও ঘর নেই এমন পরিবারের পাশাপাশি ১০ শতাংশ জমি আছে, কিন্তু জরাজীর্ণ বাড়ি এমনও পরিবার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মাহবুব হোসেন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মোট ৯ লাখ পরিবারকে ঘর দেওয়া হবে। এর প্রথম ধাপে আগামী ২৩ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ৭৪৩টি ব্যারাকে ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। তিনি বলেন, ‘এক মাসের মধ্যে আরো বরাদ্দ করা হবে ১ লাখ ঘর। এজন্য আমরা দুটি তালিকা তৈরি করেছি। একটি তালিকা করা হয়েছে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের। অর্থাৎ যাদের ঘর ও জমি নেই। এর সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৬১ পরিবার। আর দ্বিতীয় তালিকায় রয়েছে যাদের জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই। এ তালিকা ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১।’ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে আমাদের অঙ্গীকার, দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষে ৯ লাখ ভূমিহীন মানুষকে ঘর করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই সম্ভব হয়েছে। কারণ জাতির পিতা দেশের গরিব, অসহায় ও দুঃখী মানুষের কথা ভাবতেন। তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন।’ এদিকে রংপুর ব্যুরো জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘ক’ শ্রেণির দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে রংপুর জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। রংপুর জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান বলেন, প্রথম পর্যায়ে সারা দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন বিধবা, অসহায়, বয়স্ক, অসুস্থ এবং প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে প্রায় ৬২৬ হাজার পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মুজিবশতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে রংপুরের আট উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ২৮৮ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৯৮৫সহ ১২৭৩টি ঘরের জন্য মোট ২১ কোটি ৭৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শুকরিয়া পারভীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম রব্বানী, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা। খুলনা ব্যুরো জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে খুলনা জেলায় ৯২২ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে নবনির্মিত ঘরসহ জমি প্রদান করা হচ্ছে। গতকাল খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন সভাপতিত্ব করেন। মতবিনিময় ও প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সিলেট প্রতিনিধি জানান, সিলেটে ভূমি ও গৃহহীন ১ হাজার ৪০৬ পরিবার আশ্রয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বাড়ি ‘স্বপ্ন নীড়ে’। মুজিববর্ষের উপহারস্বরূপ গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর প্রদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। এরই মধ্যে উপকারভোগীদের নামে ২ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত, কবুলিয়াত ও নামজারির কাজ শেষ করা হয়েছে। আজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সিলেটের ১৩ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভূমি ও গৃহহীন ৪ হাজার ১৭৮ পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণের বরাদ্দ আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

thirteen + three =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য