রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচিত নাম মুহিব উল্লাহ। রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে। রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে যোগাযোগ রক্ষা করছেন আন্তর্জাতিক মহলে। কথা বলেন রোহিঙ্গাদের মুখপাত্র হিসেবে। গত বছর মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে ২৫শে আগস্ট একটি মহাসমাবেশ হয় তার নেতৃত্বে। এর পরই আলোচনায় আসেন তিনি। গত ৩রা ডিসেম্বর উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কুতুপালংয়ের লম্বাসিয়া সাংগঠনিক কার্যালয়ে কথা হয় মুবিবুল্লার সঙ্গে। নিজস্ব ভাষা ও ইংরেজিতে দেয়া ওই সাক্ষাৎকার দৈনিক মানবজমিন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
মানবজমিন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পরও এতো দেরি হচ্ছে কেন?
মুহিব উল্লাহ: ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট মিয়ানমার সরকার, সেনাবাহিনী (মিলিটারি) ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় আমাদের ওপর আক্রমণ করে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করে। বাংলাদেশ সরকার বর্ডার খুলে দিয়ে আমাদের প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়। তখন কোনো এনজিও না এলেও বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন কমিউনিটি তিন মাস পর্যন্ত আমাদের খাওয়া-দাওয়া ও লালন-পালন করেছে। এ জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে শুকরিয়া জানাই। তিন বছরের বেশি বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। মিয়ানমার সরকার শুরু থেকে আমাদের মিয়ানমার নিতে আগ্রহী ছিল না। কারণ আমরা যে জায়গায় ছিলাম সেটা বৌদ্ধদের জায়গা বলে দাবি তাদের। মিয়ানমার সরকার বৌদ্ধদের অগ্রাধিকার দিয়ে মুসলিমদের সেখান থেকে বাদ দিতে চেয়েছে এবং চাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মিয়ানমার আমাদের দাবিগুলো মেনে নিচ্ছে না এবং পরিষ্কার কিছু বলছে না। যার কারণে এমনটা হচ্ছে।
মানবজমিন: অং সান সুচির বাবা আপনাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, কিন্তু অং সাং সুচির সঙ্গে আপনাদের ওইরকম অবস্থান নেই কেন?
মুহিব উল্লাহ: সুচি মিয়ানমারে আমাদের সঙ্গে বেশিদিন থাকেনি। সে পলাতক ছিল ভারতে। সেখান থেকে ইংল্যান্ড এবং পড়াশোনার জন্য বাহিরে ছিল। ফলে আমাদের আরকান মানুষের সঙ্গে তার তেমন সম্পর্ক ছিল না। অং সানের মেয়ে হিসেবে সুচির মন-মানসিকতা ভালো হবে মনে করছিলাম। মিয়ানমারে আসার পর আমরা সবাই মিলে তাকে ভোট দিয়েছি। সে যখন বিভিন্ন জায়গায় বন্দি ছিল। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা নানাভাবে আন্দোলন করেছি। অথচ সে আমাদেরকেই বের করে দিলো। সুচি বর্মালিজম (বর্মাবাদ বা মিয়ানমারের দিকে) তার বেশি মন। বর্মালিজম করতে তার দেশের বাইরের কমিউনিটির সমর্থন দরকার। ফলে মার্শাল্লা পেরিয়ড করে ইসলাম ফোবিয়াধারী যুবকদের তৈরি করে আনে, যাতে তারা ইসলাম ধর্মকে অপছন্দ করে। তাদের মন রক্ষা করতে সুচির তাদের পক্ষে অবলম্বন করতে হয়। না হয় সে তাদের মন রক্ষা ও ভোট পায় না।
মানবজমিন: কিন্তু মিয়ানমার আপনাদের কীভাবে বের করলো?
মুহিব উল্লাহ: আমাদের রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার জন্য বিশেষ আইন করে মিয়ানমার সরকার। এই আইন বাস্তবায়নে সুচি কোনো বাধা দিতে পারেন না। তার একার পক্ষে সম্ভবও না। তিনি আমাদের পক্ষে থাকেননি। যেহেতু মিয়ানমার সরকার আমাদেকে বের করে দিতে পেরেছে তাই তারা আর আমাদের ফিরে নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
মানবজমিন: বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে আপনারা মিয়ানমার ফেরত যেতে পারবেন- মনে হচ্ছে কিনা?
মুহিব উল্লাহ: ২০২১ সালের মধ্যে ফিরে যেতে পারবো মনে হচ্ছে। কেননা অমানবিকতা বেশি দিন স্থায়ী থাকে না। আমরা বিশ্বাস করি আমরা ফেরত যেতে পারবো। মিয়ানমার কিছু পলিটিশিয়ান সরকারকে বোঝাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের না থাকার কারণে অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। রোহিঙ্গাদের কারণে মিয়ানমারের অনেক যুবক বেকার হয়ে যাচ্ছে এবং ব্যাংক ব্যবসার খুব ভালো যাচ্ছে না। ফলে কোম্পানিগুলো সেখানে ব্যবসা করতে চাচ্ছে না। সবদিক থেকে খারাপ প্রভাব পড়েছে। সবাই চাকরিবিহীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ লোকজন বলছে, এরকম থাকলে আমাদের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এজন্য তারা রোহিঙ্গাদের পছন্দ করা শুরু করেছে। এখন সংসদে আলোচনা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের আনলে কি সুফল হবে।
মানবজিমন: সম্প্রতি মিয়ানমারে নির্বাচন হয়েছে। সুচির দল আবার নির্বাচিত হয়েছে। নতুন সরকারের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছে?
মুহিব উল্লাহ: নতুন সরকার আগামী মার্চের দিকে শপথ গ্রহণ করবে। তবে নতুন সরকারে কিছু মুসলমান নিয়েছে। মোটকথা মামলা আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তুলেছি। তাদের ওপর প্রেশার পড়েছে। মামলা একদিন না একদিন সমাধান হবে। আমরা যে ডকুমেন্ট’স দিয়েছি তারা এগুলো অবহেলা করতে পারবে না। বরং কিছু রোহিঙ্গা নিয়ে গিয়েও মিয়ানমার চাপ হালকা করবে।
মানবজমিন: মিয়ানমারে অবস্থা বা সেখানকার ভিতরের খবর কীভাবে জানেন?
মুহিব উল্লাহ: রোহিঙ্গাদের পরিবারের অনেক সদস্য এখনো সেখানে আছে। তাদের মাধ্যমে অনেক তথ্য জানা যায়। কাউকে মেরে ফেললেও, কারও উপকার করলেও তারা আমাদের ঘণ্টায় ঘণ্টায় বলে। এমনকি কোনো সহায়তা দিলেও তারা সেখান থেকে আমাদের বলে।
মানবজমিন: মিয়ানমারের নতুন সরকার আপনাদের নিয়ে যাবে মনে হচ্ছে?
মুহিব উল্লাহ: আমরা শুনেছি ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে নিয়ে যাবে। এটা ২০১৮ সাল থেকে শুনে আসছি। সবাইকে নিয়ে না গেলেও বিশ্বকে দেখার জন্য হলেও কিছু্ রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাবে মিয়ানমার।
মানবজমিন: মিয়ানমার সরকার বিশ্বকে ও বাংলাদেশ সরকারকে বলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফেরত যেতে চায় না- এ কথা সত্য কি?
মুহিব উল্লাহ: আমরা যেতে চাই না একথা মিথ্যা। তবে আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা আর আমাদের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তার বিচার করতে হবে।
মানবজমিন: আপনারা ফেরত যেতে মিয়ানমারকে পাঁচটি শর্ত দিয়েছিলেন এগুলো কি ছিল?
মুহিব উল্লাহ: ১. আমাদের রোহিঙ্গা জাতীয়তা ফেরত দিতে হবে ২. আমাদের আদি আবাস ফেরত দিতে হবে। ৩. আমাদের ন্যায্য অধিকার ফেরত দিতে হবে ৪. আমাদের জমি-ভিটা ফেরত দিতে হবে ৫. আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে।
মানবজমিন: মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আপনাদের আস্থা বিশ্বাস আছে?
মুহিব উল্লাহ: একথা বলতে গেলে দু’টি অংশে বলতে হয়। আমাদের ওপর যে সেনাবাহিনী আক্রমণ করেছে, সেটা মিয়ানমারের সরকারের আইনের মাধ্যমে হয়েছে। সেনাবাহিনী এই পর্যন্ত আমাদের উপর ২৮টি আক্রমণ করেছে। সব আক্রমণই সরকারি আদেশে হয়েছে।
মানবজমিন: মিয়ানমারে ফেরত যেতে রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে বিশ্ব এবং বাংলাদেশকে কি বার্তা দিবেন?
মুহিব উল্লাহ: প্রথমে বাংলাদেশের বিষয়ে বলি। বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের যে সমঝোতা হয় সেখানে আমাদের বাঙালি না বলার কথা। সে সময় অং সান সুচি বাঙালি না ডেকে আমাদেরকে মুসলিম ডাকা হবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু এখনো তাদের ডকুমেন্টসে এরা আমাদের বাঙালি বলে লিখছে। এরকম কেন হবে? এটা বাংলাদেশ থেকে অভিযোগ করা উচিত। এখন মিয়ানমারে আমাদের যে রোহিঙ্গারা আছে তাদের জাতীয়তা, তাদের ঘরবাড়ি, জায়গা-সম্পত্তি ফেরত দিলে আমাদের বিশ্বাস আসবে। আর আমাদের সঙ্গে কোনো চুক্তি করা লাগবে না। আমরা এটাও বলছি না, বাংলাদেশে এসে আমাদের জাতীয়তা ফেরত দিতে। বরং ওখানে যারা আছে তাদের ফেরত দিলে আমাদের বিশ্বাস আসবে। তাহলে আমরা দলে দলে মিয়ানমারে ফেরত যাবো। আইনের বাইরে এমন কিছু আমরা বলছি না। বাংলাদেশ ও বিশ্ব চাপ প্রয়োগ করলে মিয়ানমার আমাদের ফেরত নিবে। এখন পর্যন্ত যে চাপ দেয়া হয়েছে তা সামান্য। এখনো সঠিক জায়গায় চাপ দেয়া হয়নি। জাতিসংঘ অবরোধ দিয়ে চাপ দিলে কাজ হবে। জাতিসংঘের হাতে সুযোগ থাকার পরেও তারা করছে না। তারা মিয়ানমারকে চাপ দিতে পারছে না। সারা বিশ্ব থেকে প্রেশার দিচ্ছে না। আমেরিকাও প্রেশার দিলে নিয়ে যেতো, তারাও সেটা করছে না। নানান সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা কাউকে চাপ দিচ্ছে না।
মানবজমিন: তাহলে এখন আপনারা কি করবেন?
মুহিব উল্লাহ: দেখেন তাদের (মিয়ানমারের) মতো আমাদের তেমন লবি নেই। তাদের যে পরিমাণ লবি আছে, তারা চেষ্টা করছে আমাদেরকে না নেয়ার জন্য। আমাদের তো স্ট্রং লবি নেই। আমরা বিশ্বের দিকে তাকিয়ে আছি।
মানবজমিন: মিয়ানমার আপনাদের উগ্রগোষ্ঠী বলে দোষ দেয়। মিয়ানমারের পত্রিকায় বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও আরসার উগ্রপন্থি গ্রুপ আছে বলে দাবি করে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?
মুহিব উল্লাহ: তারা এ দাবি করতেই থাকবে, কেননা তারা এরকম কিছু মানুষের সঙ্গে মিলে মিয়ানমার থেকে আমাদের বিতাড়িত করেছে। আরসার (লবি) সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ওখানেও তারা এমন মানুষ তৈরি করেছে, যেখানে টাকা দিয়ে এমন আরসার লোক ঢুকিয়ে দিতে পারে। আমরা এবিষয়ে আইসিসিকে বিচার দিয়েছি। সবচেয়ে বড়কথা তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন: ভাসানচরে যাবার বিষয়ে আপনি কি বলতে চান?
মুহিব উল্লাহ: আমরা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করতে চাই না। বাংলাদেশ সরকারসহ আমরা মামলাটা সমাধান করতে চাই। যেহেতু আমরা এখানে অতিথি। ভাসানচরে আমাদের ভালো-খারাপ বাংলাদেশ দেখবে।
মানবজমিন: দেড় লাখের ওপরে যেতে রাজি এ বিষয়ে আপনার মতামত।
মুহিব উল্লাহ: দেড় লাখেরও বেশি যেতে আগ্রহী। সেটা জানি। সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, প্রত্যাবাসন প্রথমে ভাসানচর থেকে শুরু করতে হবে। যারা যাচ্ছে তারা নিজেদের ইচ্ছায় যাচ্ছে। তাদের কেউ জোর করছে না। অনেকে এখন ভাসানচরে পৌঁছেছে।
মানবজমিন: মিয়ানমার বলছে প্রত্যাবাসনে আড়াই হাজার করে নিবে। তা হলেতো ১২ লাখ রোহিঙ্গকে নিতে ১৫ বছরের বেশি সময় লাগবে আর মিয়ানমার বলছে তারা তাদের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিবে কোনো বাঙালি নিবে না- এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন?
মুহিব উল্লাহ: এটা হচ্ছে পুরাতন সমঝোতা। তখন দু’টি ট্রানজেনশন কেন্দ্র ছিল। এখন আরো ১৮টা হয়েছে। একটা থেকে এক হাজার করে নিলে দিনে ২০ হাজার লোক নিতে পারবে। মিয়ানমার আরো ঘোষণা দিয়েছে, আমরা যে মিয়ানমারের লোক এমন কোনো ডকুমেন্টস দেখাতে পারলে আমাদের নিবে। মামলা থাকলে জেল খাটতে হবে।
মানবজমিন: কবে নাগাদ মিয়ানমার নিতে পারে বলে আপনার মনে হয়?
মুহিব উল্লাহ: কবে নিতে পারে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে আগের প্রতিশ্রুতিতে আড়াই হাজার করে নিবে আর এখন সেখান থেকে ২০ হাজারের বেশি নিবে এ ঘোষণা চলে এসেছে। যদিও দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। ঘোষণা দিয়েছে এটা আমাদের জন্য সফলতা।
মানবজমিন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সার্বিক পরিস্থিতি অবনতি বা সংঘর্ষ কেন হচ্ছে বারবার?
মুহিব উল্লাহ: ক্যাম্পে মারামারি ও খুন-খারাবি হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে মাদকাসক্ত হওয়া, জায়গা নিয়ে গ্রুপিং করে অর্থাৎ এ জায়গা বা ক্যাম্প আমার তা নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে যায়, টাকার লেনদেনের, পরিবার-পরিবার ঝগড়া লেগে যায়, মেয়ে আর বিয়ে নিয়ে দ্বন্দ্ব লাগে। এ কারণগুলোর জন্য ক্যাম্পে সংঘর্ষ দেখা দেয়।
মানবজমিন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প আন্তর্জাতিক ইয়াবা-চোরাচালান বা মাদক-চোরাচালান রাস্তা হিসেবে রোহিঙ্গারা ব্যবহার করে এমন অভিযোগের বিষয়ে কি বলবেন?
মুহিব উল্লাহ: এ ব্যবসাটা শুধু রোহিঙ্গারা করে এমন দোষারোপ করলে ঠিক হবে না। বাংলাদেশের কিছু লোক ও রোহিঙ্গাদের কিছু মিলে করে। দোষ দিলে দু’পক্ষকে দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের একমাত্র দোষ দিলে হবে না।
মানবজমিন: মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে কি বার্তা দিতে চান?
মুহিব উল্লাহ: আইনে যে বৈষম্য আছে এগুলো বাদ দিলে আমাদের আর সমস্যা হবে না। মিয়ানমারের লোক আর রোহিঙ্গাদের মধ্যে বৈষম্য করার কারণে আজকের এ অবস্থা। উপরের কিছু লোক আইন করে রেখেছে আমাদের আলাদা করে রাখার জন্য। আইনগুলো পরিবর্তন করে দিলে আমরা আবারও এক হয়ে যেত পারবো। আমাদের যুবকরা বৈষম্য বিষয়টা পছন্দ করে না। ওখানেও যে যুবকরা আছে যারা স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে তারা আমাদেরকে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে। আমরা প্রত্যাশা করছি আবারো আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারবো।
মানবজমিন: যে আইনে আপনাদের বৈষম্য করা হয়েছে সে সম্পর্কে বলেন আর বর্তমানে যে নতুন সরকার বসবে এটা তারা কীভাবে পরিবর্তন করতে পারে?
মুহিব উল্লাহ: মিয়ানমারের আইনে যেমন মন চায়, তেমন করা যায়। তাছাড়া তাদের সরকারপ্রধানের ওপর নির্ভর করে কী করা যাবে। যেহেতু অং সান সুচি সরকার প্রধান। তিনি চাইলে এখন আমাদের ফেরত নিতে পারেন। কারো সমর্থন দরকার হবে না। আমরা তার দিকে তাকিয়ে আছি।
মানবজমিন: অং সান সুচি নির্বাচনের আগে কোনো জায়গায় রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলেননি কেন?
মুহিব উল্লাহ: নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গার কথা না বললেও সব মাইনোরিটি গ্রুপ আছে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া হবে বলে জানান তিনি। রোহিঙ্গারা যেহেতু মাইনোরিটি গ্রুপের মধ্যে রয়েছে সেই সুবিধা আমরাও পাওয়ার কথা।