মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে যা বললেন আলেমরা

দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা, মাশায়েখ ও মুফতিরা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মানুষ বা অন্য যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীতভাবে নাজায়েজ, স্পষ্ট হারাম এবং কঠোরতম আজাবযোগ্য গুনাহ। আর যদি পূজার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা স্পষ্ট শিরক।

0
196

এ ধরনের শরিয়তবিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। যারা বলছেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয়, তারা ভুল বলছেন। সত্যকে গোপন করছেন। এটি কোরআন ও সুন্নাহকে অমান্য করা। অন্য কোনো মুসলিম দেশে ভাস্কর্য থাকলেও উদাহরণ দিয়ে ভাস্কর্যকে জায়েজ করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে একটি বিবৃতি উপস্থাপন করা হয়। সেখানে সই করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ দেশের ৯৫ জন শীর্ষ মুফতি।

উলামা-মাশায়েখদের পক্ষে এটি প্রকাশ করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরার প্রিন্সিপাল মুফতি আরশাদ ও মাওলানা মাহফুজুল হক। এর আগে বুধবার ঢাকার বসুন্ধরায় ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে দেশের শীর্ষ মুফতিদের উপস্থিতিতে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই বিবৃতি তৈরি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরার মুফতি এনামুল হক কাসেমী। উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জি হুজুর, আল্লামা আব্দুল হামিদ পির সাহেব মধুপুর, হেফাজত ইসলামের নায়েবে আমির আব্দুর রব ইউসুফী, মুফতি আরশাদ রহমানী বসুন্ধরা, মাওলানা আবুল কালাম মোহাম্মদপুর, মুফতি মাহফুজুল হক প্রমুখ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী ও মুফতি এনামুল হক বসুন্ধরা।

বিবৃতিতে সইকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন :

মারকাজুদ দাওয়া আল ইসলামিয়া মাদরাসার আমিনুত তা’লীম মাওলানা মুফতি আব্দুল মালেক, আকবর কমপ্লেক্স ঢাকার প্রধান মুফতি মাওলানা দিলাওয়ার হোসাইন, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুফতি মাওলানা মহিউদ্দীন মাসুম, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুর ঢাকার ইস্ততাজুল হাদিস ওয়াল ফিকাহ মাওলানা মুহা. তাউহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে ভাস্কর্য নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ভাস্কর্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন কথা হচ্ছে। ফলে জাতীয়ভাবে এসংক্রান্ত জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হয়েছে। ভাস্কর্য ও মূর্তির বিধান নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বিভ্রান্তি। সেই তাগিদ থেকে শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও মুফতিদের পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে একটি সম্মিলিত বিবৃতি প্রস্তুত করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ইসলামের সুস্পষ্ট বিধানকে পাশ কাটিয়ে প্রাণীর ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য করে প্রাণীর ভাস্কর্যকে বৈধ বলা সত্য গোপন করা এবং কোরআন ও সুন্নাহর বিধান অমান্য করার নামান্তর। উপরন্তু, কোরআন ও সুন্নাহর সুস্পষ্ট বিধানের সামনে বিভিন্ন দেশের ভাস্কর্য ও মূর্তির উপমা টেনে আনা ইসলামের একটি অকাট্য বিধানের অবজ্ঞা করার শামিল।

কোনো মুসলিম দেশের শাসকদের শরিয়তবিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। তাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় হচ্ছে কোরআন, সুন্নাহ ও ইসলামি শরিয়ত। এ বিষয়ে মুফতিগণ সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।

ইত্তেফাক/জেডএইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

fourteen − eleven =