প্রশাসন ও বিচারকার্য
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ ؓ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُولُ : «مَنْ خَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ وَفَارَقَ الْجَمَاعَةَ فَمَاتَ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً وَمَنْ قَاتَلَ تَحْتَ رَايَةٍ عِمِّيَّةٍ يَغْضَبُ لِعَصَبِيَّةٍ أَوْ يَدْعُوْ لِعَصَبِيَّةٍ أَوْ يَنْصُرُ عَصَبِيَّةً فَقُتِلَ فَقِتْلَةٌ جَاهِلِيَّةٌ وَمَنْ خَرَجَ عَلٰى اُمَّتِىْ بِسَيْفِه يَضْرِبُ بَرَّهَا وَفَاجِرَهَا وَلَا يَتَحَاشٰى مِنْ مُؤْمِنِهَا وَلَا يَفِىْ لِذِىْ عَهْدٍ عَهْدَه فَلَيْسَ مِنِّىْ وَلَسْتُ مِنْهُ». رَوَاهُ مُسْلِمٌ |
৩৬৬৯-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমীরের (শাসকের) আনুগত্যের অবাধ্য হলো এবং মুসলিম জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল, এমতাবস্থায় সে মারা গেলে তার মৃত্যু জাহিলিয়্যাত যুগের উপর হবে। আর যে ব্যক্তি এমন পতাকার নিচে যুদ্ধ করে যার হক বা বাতিল হওয়া সম্পর্কে অজানা; বরং সে যেন দলীয় ক্রোধের বশীভূত হয়ে অথবা দলীয় স্বার্থ রক্ষায় লোকেদেরকে আহবান করে কিংবা দলীয় প্রেরণায় মদদ জোগায়। এমতাবস্থায় সে মারা গেলে জাহিলিয়্যাতের উপরই মৃত্যুবরণ করবে। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মাতের বিরুদ্ধে তরবারি উত্তোলন করল এবং ভালো-মন্দ সকলকে নির্বিচারে আক্রমণ করতে লাগল। এমনকি তাত্থেকে আমার উম্মাতের কোনো মু’মিনেরও পরোয়া করল না এবং আশ্রিত তথা নিরাপত্তায় অধিকারী ব্যক্তির সাথে যে অঙ্গীকার রয়েছে, তার চুক্তিও পূরণ করল না, সে আমার উম্মাতের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং তার সাথে আমার কোনই সম্পর্ক নেই। (মুসলিম)[1] [1] সহীহ : মুসলিম ১৮৪৮, নাসায়ী ৪১১৪, ইবনু মাজাহ ৩৯৪৮, আহমাদ ৮০৬১, সহীহাহ্ ৪৩৩, সহীহ আল জামি‘ ৬২৩৩। ব্যাখ্যাঃ ব্যাখ্যা: যে ব্যক্তির লড়াই করা, যুদ্ধ হওয়া, লোকেদেরকে তার সাহায্যের জন্য আহবান করা অথবা কাউকে সাহায্য করা আল্লাহর বাণীকে বুলন্দ করা ও দীনের ঝান্ডাকে উঁচু করার জন্য ছিল না। বরং সে বংশীয় প্রেরণায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে জুলুমের সহায়তা করেছে ও অন্যায়ের পক্ষাবলম্বন করেছে। এমতাবস্থায় সে নিহত হলে সে জাহিলিয়্যাতের উপরই নিহত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সে আমার উম্মাতের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। অত্র হাদীসের মাধ্যমে যে সমস্ত বিধি-বিধান প্রমাণিত হয় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো: মুযাহির (রহঃ) বলেছেনঃ তারা (শাসকগণ) তোমাদের জন্য দু‘আ করবে যখন তোমরা মৃত্যুবরণ করবে। আর তোমরা (জনগণ) তাদের জন্য দু‘আ করবে যখন তারা মৃত্যুবরণ করবে। যাদের আদেশ পালন এবং পছন্দ করতে। ত্বীবী (রহঃ) বলেছেনঃ এটা দ্বারা সম্ভবত প্রথমটি উদ্দেশ্য, অর্থাৎ তোমরা তাদেরকে ভালোবাসবে এবং তারাও তোমাদেরকে ভালোবাসবে যতদিন পর্যন্ত জীবিত থাকবে। অতঃপর যখন মৃত্যু আসবে কেউ কারো জন্য আল্লাহর রহমাত প্রার্থনা করতে কল্যাণকর। আর শাসক যদি নিকৃষ্ট হয় তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না, তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে না, তাদের সাথে যুদ্ধ করবে না যতদিন পর্যন্ত তারা সালাত প্রতিষ্ঠা করে। যদি কারে মাঝে আল্লাহ তা‘আলার নাফরমানির কোনো কিছু দেখা যায়, তাহলে সেই নাফরমানির কাজটি ঘৃণার সাথে অপছন্দ করা উচিত। এই মর্মে মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, فَإِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ إِنِّي بَرِيءٌ مِمَّا تَعْمَلُون ‘‘যদি তারা আপনার অবাধ্যতা করে তবে বলে দিন তোমরা যা কর তা থেকে আমি মুক্ত।’’ (সূরা আশ্ শু‘আরা ২৬ : ২১৬) অর্থাৎ শাসকের মাঝে অপছন্দনীয় কোনো কিছু দেখা গেলে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করবে যদি হাত দ্বারা বাধা দেয়া সম্ভব না হয়। তার আনুগত্য থেকে বের হওয়া বৈধ না। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৩৬৭০) |