Tuesday, November 28, 2023

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমযুগ জিজ্ঞাসাএটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন...

এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। (সুরা রূম, আয়াত ৩০)

আস্সালামু আলাইকুম——
———
—-ইতিহাস পড়ে দেখুন—–
🔴আরবরা পশ্চিমাদের চাইতে বুদ্ধিমত্তায় জ্ঞানী।
___________________________________________
.
কেনো মসজিদ বন্ধ করলো এই নিয়ে যাদের কষ্ট তাদের জেনে রাখা উচিত  ৮৬৫ সালে ইসমাইল ইবনে ইউসুফ নামের এক উন্মাদ হজ্জ্বে এসে হাজারের উপর মানুষকে হত্যা করেছিল।
সেই সময়ে ক্বাবা টেম্পোরারিলি বন্ধ হয়।
.
ক্বাবায় তাওয়াফ বন্ধ হয় ৯৩০ সালে। কারমাতিয়া নামের এক্সট্রিমিস্ট শিয়া গ্রূপ ছিল, যারা ঘোষণা দিয়েছিল যে ক্বাবার চারদিকে তাওয়াফ করা জাহেলী আরবদের প্রথা, তাই ওরা ক্বাবা ধ্বংস করতে আসে। লড়াই হয়, এবং ওরা ক্বাবার সামনের কালো পাথরটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ২২ বছর সেটা ওদের দখলে ছিল, এবং অদ্ভুত ব্যাপার হলো, ওরা ওটাকে ঘিরেই পূজা শুরু করে দিল। পরে এটিকে উদ্ধার করা হয়, এবং তারপর থেকে আবারও ক্বাবার সামনে প্রতিস্থাপন করা হয়।
.
আবারও ক্বাবায় তাওয়াফ বন্ধ হয়েছিল ১২৫৮ সালে। মঙ্গলরা তখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম। বাগদাদে দুই মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করে ফোরাত নদীর পানির রঙ পাল্টে ফেলেছিল। ইসলামের খলিফাকে হত্যা করে তারা। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কারোর সাহস হয়নি বাড়ির বাইরে এক কদমও ফেলার। তাই ওমরাহ এবং হজ্ব সেই বছরের জন্য বাতিল করা হয়।
.
১৮১৪ সালে প্লেগ ছড়িয়ে পরে এবং আরব অঞ্চলেই আট হাজারের উপর মানুষ মারা যান। সেই সময়ে ক্বাবার তাওয়াফ বন্ধ করা হয়।
.
১৮৩১ ইন্ডিয়া থেকে কিছু হাজি, ওমরাহকারী এক ছোঁয়াচে রোগ নিয়ে আসেন, যার ফলে ক্বাবায় উপস্থিত এক তৃতীয়াংশ মানুষ সেই রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যান। আবারও ক্বাবা বন্ধ করতে হয়।
.
১৮৯২ কলেরা ছড়িয়ে পরে। ১৯৭৯ সালে সন্ত্রাসী হামলা ঘটে। এইভাবে ১৯৮৭ সর্বশেষ ম্যানেনজিসাইটিস আউটব্রেক ঘটে, এবং ক্বাবা বন্ধ করা হয়। এছাড়াও ক্বাবা গৃহে অগ্নিকাণ্ডের ফলেও ক্বাবা তাওয়াফ বন্ধ ছিল।
.
তারমানে দেখা যাচ্ছে, নানান কারণেই ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে ক্বাবা তাওয়াফ বন্ধ করতে হয়েছে। তার মানে, ভবিষ্যতেও বহুবার বন্ধ করতে হতেও পারে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন?
যেই আল্লাহ এত সর্বশক্তিমান, তিনি কেন তাঁর ঘরকে প্রটেক্ট করেন না?
আবাবিল পাখি পাঠাবার ঘটনাতো আমরা কুরআনেই পাই।
.
দেখুন, আপনার যদি এই ধারণা হয়ে থাকে, তাহলে আপনার ঈমানে সমস্যা আছে। মানে, ইসলাম সম্পর্কে আপনার পূর্ণাঙ্গ ধারণা নেই বলেই এমন চিন্তা আপনার মাথায় আসছে। ইসলামের মূল ভিত্তি হচ্ছে আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর শরিক কেউ নেই। এই বাক্য আমরা সবাই জানি, মানি, কিন্তু উপলব্ধি করছি না।
.
এই বাক্যের মানে আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর ও পৃথিবীর বাইরের সবকিছুই নশ্বর। আর কারোরই কোন ক্ষমতা নেই। না নবীর (সাঃ), না কাবা গৃহের, না কোন আসমানী ফেরেশতার, না অন্য কারোর। সব ক্ষমতার মালিক আল্লাহ নিজে। এই ব্যাপারটি আপনাকে বুঝতেই হবে। কারন এটি না বোঝার কারণেই যেদিন আমাদের নবী (সাঃ) ইন্তেকাল হলেন, সেদিন মদিনার মুনাফেকরা বলতে শুরু করেছিল এ কেমন নবী যে মারা যায়? ওদের বিশ্বাস ছিল যেহেতু আল্লাহ একজনকে নবী নির্বাচন করেছেন, তিনি আজীবন বেঁচে থাকবেন, জরামুক্ত থাকবেন, অসুস্থ হবেন না, ক্ষুধা তৃষ্ণা ইত্যাদি কিছুই পাবে না ইত্যাদি।
.
আমাদের ধর্ম এটি শিক্ষা দেয় না। আমাদের নবী একজন মানুষ ছিলেন, যাকে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর বাণী প্রচার(তবলিগ) করতে। আল্লাহর ইচ্ছা  এবং সাহায্য  ছাড়া তাঁর ও কোন ক্ষমতা ছিল না কাউকে মুসলিম বানাবার। যে কারনে পৃথিবীতে তাঁর সবচেয়ে আপন মানুষ, প্রিয় ব্যক্তিত্ব আবু তালিব মুসলিম হননি। রাসূলকেও যুদ্ধের সময়ে লড়তে হয়েছে, খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খনন করতে হয়েছে, ক্ষুধার যন্ত্রণায় পেটে পাথর বাঁধতে হয়েছে। এসবের পেছনে কী কারন ছিল?
.
যাতে লোকে তাঁর পূজা শুরু করে না দেয়। যদি দেখা যেত লোকজন ক্ষুধায় মরছে, এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাওয়া থেকেই পোলাও কোর্মা রোস্ট নামিয়ে দিচ্ছেন, তাহলে লোকে তাঁর পূজা শুরু করে দিত। হ্যা, মোজেজা ঘটেছে, কিন্তু সেগুলোও আল্লাহর নির্দেশেই, আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী। সর্বক্ষেত্রে ঘটেনি।
.
তেমনি ক্বাবার ব্যাপারটিও তাই। আমাদের বুঝতে হবে ক্বাবার কোন নিজস্ব শক্তি নেই, ক্ষমতা নেই। ওটা স্রেফ একটি ঘর। সব ক্ষমতা আল্লাহর, যিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলেই আমরা ওখানে ওকে ঘিরে চক্রাকারে হাঁটি। লোকজন এইটাই মানতে পারেনা। ওরা ক্বাবার গিলাফ ছিঁড়ে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পানিতে ধুয়ে খায়। মানত করে, দোয়া করে, মাটিতে পড়ে গেলে তুলে মাথায় ঠ্যাকায়। এমন অনেক কিছুই ঘটে যা অতি ভক্তির ফলে শির্কের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। কাজেই, আমাদের বুঝতে হবে কাবা গৃহের কোন ক্ষমতা নেই। মূল ক্ষমতা তাঁর মালিকের।
.
আমাদের দেশে প্রায়ই এমন ছবি শেয়ার হতে দেখবেন যে সুনামিতে গোটা দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু মসজিদের কোনই ক্ষতি হয়নি। চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানুষ মরে গেছে, কিন্তু মসজিদের দেয়ালে কলেমা লেখার কিছু হয়নি বলে লোকে সুবহানাল্লাহ বলতে বলতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলছে। এরা যে কাবা ঘরের তাওয়াফ বন্ধ দেখলে হার্ট এটাক করবে, সেটাইতো স্বাভাবিক।
.
জেনে রাখুন, ইসলামের দৃষ্টিতে, একজন মুসলমানের প্রাণের মূল্য, কাবা গৃহের হাজারটা ইটের মূল্যের চেয়ে বহুগুন বেশি।
.
শেষ করি নবীজির (সাঃ) ইন্তেকালের সময়ে আবু বকর রাঃ এর  দুই লাইনের দেয়া ভাষণ দিয়ে, যেখানে তিনি বলেন, “যারা মুহাম্মদের (সাঃ) পূজা করতো, তাঁরা জেনে নিক তিনি মারা গেছেন। এবং যারা আল্লাহর ইবাদত করে, তাঁরা জেনে নিক আল্লাহ অবিনশ্বর, চিরঞ্জীব।”
.
মুসলিম হলে অবশ্যই জেনে রাখবেন, সবই আল্লাহর হুকুমে হচ্ছে, সবকিছুর নিয়ন্ত্রনে তিনি আছেন, এবং সবই আমাদের শিক্ষার জন্যই হচ্ছে। কাজেই নিজের ঈমান তাজা করুন। ভুয়া আজগুবি কথাবার্তা শোনার অভ্যাস ত্যাগ করুন। মুসলিম হলে ইসলামকে সঠিকভাবে অনুধাবন করার চেষ্টা করুন।
.
অন্ধকার যুগ থেকে আমাদের বাহির হতে হবে! জাযাকাল্লাহু খাইরান।
_______________________________________
লেখকঃ ইশতিয়াক আহমেদ।

প্রচারেঃ-সৌদি আরব-The Land Of Tawheed🇸🇦❣

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four × three =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য