আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, বর্তমানে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুদ ২,১০৫ কেজিতে (৪,৬৪০ পাউন্ড) পৌঁছেছে।
যদিও ইরান বলছে, তাদের পারমানবিক কার্যক্রম শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উপায়ে ব্যবহারের জন্য।
দেশটির সন্দেহভাজন পুরোনো দুটি পরমাণু কেন্দ্রের একটি পরিদর্শন শেষে আইএইএ’ এর পরিদর্শকরা এই তথ্য জানান। সংস্থাটি বলেছে, দ্বিতীয় পরমাণু কেন্দ্র থেকে চলতি মাসের শেষের দিকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। গত বছর থেকে ইরান ইচ্ছাকৃতভাবেই ও অনেকটা প্রকাশ্যেই এই পরমাণু চুক্তির অঙ্গীকার থেকে সরে আসতে থাকে।
চুক্তি অনুযায়ী পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের চেয়ে অনেক কম মাত্রায় ইউরেনিয়াম উৎপাদনের অনুমোদন পায় ইরান।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে গেলে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ সরূপ ইরানও ব্যবস্থা নিতে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থা জানিয়েছে, পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ইরানকে ৩.৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম প্রায় ১,০৫০ কেজি করে উৎপাদন করতে হবে এবং এ হার ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি বাড়াতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ইরানকে একটি নির্দিষ্ট যৌগ- ইউএফ-৬ আকারে ৩০০ কেজি পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হয়, যা ২০২.৮ কেজি নিখাদ ইউরেনিয়ামের সমতুল্য।
স্বল্প সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যার ঘনত্ব ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ ইউ- ২৩৫ এর মধ্যে রয়েছে, সেগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব ৯০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ করতে হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইরান যদি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় নিতে পারে।
গেলো সপ্তাহে ইরান জানায়, তারা পরমাণু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝুলে থাকা ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে ‘সরল বিশ্বাসেই’ অস্ত্র পরিদর্শকদের পরিদর্শনের সুযোগ দিয়েছিল।
তবে ঘোষণা করা হয়নি এমন পরমাণু যন্ত্রপাতি এবং পরমাণু কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্নের জবাব না দেয়া বা এড়িয়ে যাওয়ায় এবং আরো দুটি ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার না দেয়ায় ইরানের সমালোচনা করেছে আইএইএ।
সর্বশেষ বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ইরানের দুটি কেন্দ্র পরিদর্শন এবং সেগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহে আইএইএকে অনুমতি দিয়েছে তেহরান । সংগ্রহ করা নমুনা সংস্থার গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হবে বলেও জানায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা।