বান্ধবীর বাসা থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরির অভিযোগে ৩ বছরের সন্তানসহ কারাবাস করছেন মো. শহীন ও মোসা. শারমীন আক্তার দম্পতি। রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মেরাজনগরে চুরির ঘটনাটি ঘটে। এদিন, মামলার নারী আসামি তার বান্ধবীকে শপিংয়ের কথা বলে ব্যস্ত রাখেন। আর তার স্বামী বাদীর বাসায় বোরকা পরে গিয়ে চুরি করেন।
জানা গেছে, কাতারপ্রবাসী মো. আব্দুল হামিদের স্ত্রী আয়েশা আক্তার থাকেন রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মেরাজনগরে। চার সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় থেকেই পড়া লেখা করে। বাকী ৩ সন্তান নিয়ে তিনি ওই বাসায় থাকেন। গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তার বাসায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।
গত ১৭ ডিসেম্বর কদমতলী থানায় দায়ের করা মামলায় বাদি হয়ে আয়েশা আক্তার মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ৮ বছরের ছেলে তাহসিনকে বাসায় রেখে অন্য দুই সন্তান নিয়ে তিনি শনিরআখড়া যান। মার্কেটিংয়ের কথা বলে সীমা তাকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে কাজ শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় ফিরে তিনি দরজা খোলা দেখতে পান। ভেতরে ঢুকে একটি রুমে তাহসিনকে মুখ, হাত-পা বাধা অবস্থায় পান।
তাহসিন জানায়, বোরকা পরিহিত এক নারী তার (আয়েশা আক্তার) ভাগ্নি পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বলেন। সে দরজা খুলে দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে মুখ ও হাত-পা বেঁধে রুমে আটকে রাখেন ওই ব্যক্তি। এরপর আলমারি থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যমানের ১০ হাজার রিয়ালসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান।
কদমতলী থানা পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। চুরি সংগঠিত হওয়া বাসার আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় ঘটনাস্থলের পাশের বাসায় ভাড়া থাকা মো. শহীন তার স্ত্রী মোসা. শারমীন আক্তার সীমাকে সন্তানসহ গত ১৮ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করে। তাদের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার ও সৌদি রিয়ালসহ মালামালগুলো জব্দ করে পুলিশ।
মামলার বাদী আয়েশা জানান, সীমার ছেলের সঙ্গে তার বড় সন্তান যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। এ কারণে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সীমা তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন সীমা তাকে শনিরআখড়ায় মার্কেটিং করার কথা বলে তাকে সেখানে ডাকিয়ে ব্যস্ত রাখেন। তার স্বামী শহীন বোরকা পরে চুরি করতে যান।
গ্রেপ্তারের পর শহীন ও সীমাকে গত ১৯ ডিসেম্বর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২২ ডিসেম্বর আদালত ৩ বছরের শিশু সন্তানসহ তাদের কারাগারে পাঠান।