সংক্রমণ ও ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ঠেকাতে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক
দেশে ভারতীয় নতুন ভেরিয়েন্ট ঠেকাতে সীমান্তবর্তী বিভাগ ও জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জরুরি ভিত্তিতে আরো কঠোর পদক্ষেপ কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সঙ্গে ওই কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নির্দেশনা আসে।
বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব, রংপুর, সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, সীমান্ত এলাকাসংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিব বলেছেন, ওই সব জেলার কোনো পরিবহন অন্য কোনো জেলায় যাতে যাতায়াত করতে না পারে, সে জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষ লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে দলবেঁধে গাদাগাদি করে স্বাস্থ্যবিধির কোনো রকম তোয়াক্কা না করে যেভাবে মার্কেটে ও বাড়ির দিকে ছুটছে তা রীতিমতো আত্মঘাতী হয়ে উঠছে। বিশেষ করে পাশের দেশ ভারতে নতুন ভেরিয়েন্টের কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতীয় নতুন ভেরিয়েন্টটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভেরিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এ রকম ক্রিটিক্যাল সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার-পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে। শহরাঞ্চলেও মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে শপিং মলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ চলাফেরা করছে। এভাবে চলতে দিলে ঈদের পর দেশে ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে প্রতিটি বর্ডার এলাকার দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। বর্ডার এলাকার ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারসহ সব মানুষকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক কভিড পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। বর্ডার এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে মুভমেন্ট যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ দিন বর্ডার এলাকায় কতজন মানুষ ভারতে যাতায়াত করেছে, তার তালিকা জানতে চান।
বৈঠকে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জানান, খুলনা বিভাগীয় এলাকায় বর্তমানে দুই হাজার ৭০০ জন ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টিনে আছে। তাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ভারত থেকে বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা ট্রাক ড্রাইভার, হেল্পারদের কোনোভাবেই মুভমেন্ট করতে দেওয়া হচ্ছে না। কঠোরভাবে তাঁদের আইসোলেশন ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছে।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশ থেকে ভারত যাতায়াতকারী ড্রাইভার-হেল্পারদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।