যুক্তরাষ্ট্র চীনের জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের জোরপূর্বক শ্রমের উদ্বেগের কারণে ওই অঞ্চলের তুলা পণ্য ও টমেটো আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। মার্কিন শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা (সিবিপি) বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বন্দিদের মাধ্যমে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে। তাদের ঋণের ফাঁদে আটকে ফেলা হচ্ছে, চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর সম্প্রদায়ের সঙ্গে চীন সরকারের আচরণেরও কড়া সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, অন্তত ১০ লাখ উইঘুর মুসলমানকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সেখানে তুলা ও টমেটো উৎপাদনে উইঘুরদের দিয়ে জোরপূর্বক কাজ করানোর প্রমাণ রয়েছে। বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ তুলা উৎপাদন হয় জিনজিয়াংয়ে। সেগুলো জোরপূর্বক শ্রমে উৎপাদিত হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণে টেক্সটাইল শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যথেষ্ট সচেতন নয় বলেও উদ্বেগ রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। অবশ্য চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এর আগে যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশ উইঘুরদের সঙ্গে চীনের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষায় যথেষ্ট প্রচেষ্টা দেখাতে ব্যর্থ হলে জরিমানার বিধান করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। তবে দ্য সান জানিয়েছে, ডমিনিক রাবের ওই প্রস্তাবে চীনের কথিত উইঘুরদের ‘কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ সংশ্লিষ্ট চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি থাকছে না।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মূল্যবোধ এবং স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে, যেখানে উদ্বেগ রয়েছে, আমরা সেগুলো উত্থাপন করি এবং চীনকে এর জন্য দায়ী করি। চীনের অন্যতম সমালোচক এবং কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক নেতা ডানকান স্মিথ ব্রিটিশ সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তার মতে, চীনের জন্য এই ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, জিনজিয়াংয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামে বন্দিশিবির তৈরি করে অন্তত ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমদের আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে চীন। তবে চীনা সরকারের দাবি, ওই অঞ্চলে দারিদ্র্য নির্মূলের লক্ষ্যেই প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো তৈরি হয়েছে।
সূত্র: সিএনএন।