Sunday, January 26, 2025
No menu items!

আমাদের মুসলিমউম্মাহ ডট নিউজে পরিবেশিত সংবাদ মূলত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সমাহার। পরিবেশিত সংবাদের সত্যায়ন এই স্বল্প সময়ে পরিসরে সম্ভব নয় বিধায় আমরা সৌজন্যতার সাথে আহরিত সংবাদ সহ পত্রিকার নাম লিপিবদ্ধ করেছি। পরবর্তীতে যদি উক্ত সংবাদ সংশ্লিষ্ট কোন সংশোধন আমরা পাই তবে সত্যতার নিরিখে সংশোধনটা প্রকাশ করবো। সম্পাদক

হোমদৈনন্দিন খবরগায়ের রং কালো, তাই শত মিনতিতেও জোটেনি চিকিৎসা

গায়ের রং কালো, তাই শত মিনতিতেও জোটেনি চিকিৎসা

যুক্তরাষ্ট্রের এক কৃষ্ণাঙ্গ চিকিৎসক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন গত রোববার। তবে মারা যাওয়ার আগে তিনি একটি ভয়ংকর অভিযোগ করে গেছেন। জানিয়ে গেছেন, শুধু গায়ের রঙের কারণেই তিনি যথাযথ চিকিৎসা পাননি। ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ইন্ডিয়ানাপোলিসে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, করোনায় মারা যাওয়া চিকিৎসকের নাম সুসান মুর (৫২)। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল নর্থে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের বিছানা থেকে একটি ভিডিও করেন তিনি। সেখানে মুর বলেন, বাঁচার জন্য তিনি ‘চিকিৎসা ভিক্ষা’ পর্যন্ত করেছিলেন। এরপরও তা পাননি। গত রোববার সেখানকার অন্য একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

চিকিৎসক সুসান মুরের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল নর্থ কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বর্ণবৈষম্যের অভিযোগটি খুব গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। প্রত্যেক রোগীর জন্য সমান চিকিৎসা দিতে তারা বদ্ধপরিকর। তবে ওই মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য করেনি তারা।

তিনি (চিকিৎসক) আমার একটি কথা পর্যন্ত শোনেননি। একবারের জন্যও তিনি আমাকে স্পর্শ করেননি। তাঁর কোনো শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষাও করাতে দেননি ওই শ্বেতাঙ্গ চিকিৎসক।

সুসান মুর, চিকিৎসক

সুসান মুর ৪ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তাঁর চিকিৎসায় এক চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টি তুলে ধরেন। ওই চিকিৎসক শ্বেতাঙ্গ ছিলেন বলে জানান তিনি। সুসানের অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য তিনি কান্নাকাটি করেন। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলেও জানান। কিন্তু এরপরও তিনি চিকিৎসা পাননি। তিনি আরও লেখেন, ‘তিনি (চিকিৎসক) আমার একটি কথা পর্যন্ত শোনেননি। একবারের জন্যও তিনি আমাকে স্পর্শ করেননি। তাঁর কোনো শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষাও করাতে দেননি ওই শ্বেতাঙ্গ চিকিৎসক।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সুসান মুরের ১৯ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। মা–বাবাও জীবিত। তবে তাঁরা ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন। পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন সুসান। গো–ফান্ডমি নামের একটি অনলাইন পেজ খুলে তাঁর পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য অর্থ তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১ লাখ ২ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ হয়েছে।

২৯ নভেম্বর মুরের কোভিড–১৯ পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। উচ্চ জ্বর নিয়ে তিনি ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল নর্থে ভর্তি হন। তখন তাঁর কাশির সঙ্গে রক্তও পড়ছিল। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল।

বিবিসির খবরে আরও বলা হয়েছে, ২৯ নভেম্বর মুরের কোভিড–১৯ পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। উচ্চ জ্বর নিয়ে তিনি ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল নর্থে ভর্তি হন। তখন তাঁর কাশির সঙ্গে রক্তও পড়ছিল। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। তিনি নিজেও একজন চিকিৎসক। তাই তিনি চিকিৎসককে জানিয়েছিলেন, তাঁর কষ্ট হচ্ছে।
ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে চিকিৎসক মুর বলেন, তিনি অ্যান্টিভাইরাল রেমেডিসিভির প্রয়োগের আবেদন জানিয়েছিলেন। বুকের স্ক্যান করারও অনুরোধও করেন। তখন একজন চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, তাঁর অবস্থা ভালো। এই ওষুধ নেওয়ার মতো অবস্থা তাঁর হয়নি। তাঁকে বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত।

চিকিৎসক মুর আরও বলেন, ‘ওই চিকিৎসক আমাকে একজন মাদকাসক্ত হিসেবে মনে করেন। তিনি জানতেন, আমি একজন চিকিৎসক। আমি মাদক গ্রহণ করি না।’ মুর বলেন, চিকিৎসা না পেয়ে তিনি অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেন। পরে তাঁকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কিন্তু অন্য হাসপাতালে গিয়ে জীবন নিয়ে আর ফিরতে পারেননি মুর।

গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গরা বেশি করোনার ঝুঁকিতে। ২০১৫ সালের আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথের এক গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গ রোগীর চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গ রোগীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে দেখা যায় স্বাস্থ্যকর্মীদের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

four × 4 =

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য